তাহলে কে মিথ্যে বলছে? দেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? কারণ নির্বাচনী ইস্তেহার থেকে গরমাগরম টুইট বা ইন্টারভিউ, অমিত শাহ থেকে রাজ্য নেতা দিলীপ ঘোষ, সংগঠিত সন্ত্রাসী দল বিজেপির সর্বস্তরের নেতারাই বারবার বলেছে গোটা ভারতেই এনআরসি হবেই। অথচ গতকাল সন্ত্রাসী মোদি বলেছে, এনআরসি নিয়ে নাকি কোনও আলোচনাই হয়নি। তাহলে ধোকা দিচ্ছে কে?
এনআরসি, ডিটেনশন ক্যাম্প নিয়ে নাকি গুজব রটানো হচ্ছে। গতকাল রবিবার রামলীলা ময়দানে দাঁড়িয়ে ঠিক একথাই বলেছে সন্ত্রাসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বক্তব্য, মিথ্যে কথা বলছেন বিরোধীরা। গোটা দেশে এনআরসি চালু হওয়ার কথা নাকি বিরোধীরাই ছড়াচ্ছে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য। রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছে, ‘আমি দেশের ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে জানাতে চাই, ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর এখনও পর্যন্ত কোথাও কখনও এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি।
অথচ, সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অমিত শাহ বলেছে, ‘২০২৪ সালের মধ্যে গোটা ভারতে এনআরসি নিয়ে আসা হবে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে তাড়ানো হবে।’
তাহলে মোদিকে এতসব অস্বীকার করতে হল কেন? সে এমন ভাব করল যেন এনআরসি বিষয়টাই প্রথম বারের জন্য শুনল। তাহলে এতদিন ধরে কী করছিল তাঁর দল? এত কথা কেন বলছিল?
আর সন্ত্রাসী মোদির মিথ্যে কথা যাচাই করতে ভারতীয়রা একটু গুগুল সার্চ করলেও পেয়ে যাবে। বেশিকিছু নয়, শুধুমাত্র ইন্টারনেট সার্চ করেই ধোকাবাজ প্রধানমন্ত্রীর দাবির সত্যতার প্রমাণ মিলবে। মোদি অস্বীকার করলেও ডিটেনশন ক্যাম্পের বিষয়টি প্রচণ্ডভাবে সত্য। সরকারের ক্ষমতা যত বাড়বে, ততই একের পর এক ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হবে দেশে।’
আনন্দ বাজার পত্রিকার সূত্রে জানা যায়, অসম ছাড়া, রাজধানী দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যে অন্তত ১০টি সচল ডিটেনশন ক্যাম্প আছে। সম্ভবত ২০০৫ সাল থেকে দিল্লিতে অবৈধ অভিবাসী বা অনুপ্রবেশকারীদের আটকে রাখতে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি শুরু হয়— যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ওল্ড দিল্লি সেবা কুটির, আলিপুর রোড ডিটেনশন হাউস, লামপুর ও দরিয়াগঞ্জের ডিটেনশন সেন্টার। ২০০৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে ‘আনডকুমেন্টেড মাইগ্রেন্টস’ বা নথিবিহীন অনুপ্রবেশকারীদের জন্য তৈরি হয় ডিটেনশন সেন্টার বর্ডার সিকিয়োরিটি ফোর্স ক্যাম্প। বিহার ও গুজরাতেও ডিটেনশন সেন্টার আছে। নতুন করেও করা হচ্ছে অগণিত ক্যাম্প। এ সমস্ত ক্যাম্পগুলোর মালাউনদের অত্যাচারে অনেক বন্দির মৃত্যুর সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
আর এনআরসি ইস্যু নিয়ে রামলীলা ময়দানের সভা থেকে, প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছে, ‘গুজব’ ছড়াচ্ছে। সে আরও বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে এনআরসি কার্যকর করা হয়েছে এবং ২০১৪ সালে সে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী মোদি। অথচ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের উভয়কক্ষে বলেছে, এটা সরকারের আওতায়। একটা ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, এবং অনিশ্চয়তার আবহ রয়েছে দেশজুড়ে এবং তার জন্য মূলত দায়ী সরকার’।
এই ক্ষেত্রে, আনন্দ শর্মা কয়েকমাস আগে বনগাঁয় অমিত শাহের একটি বক্তব্যের ভিডিও তুলে ধরেছে, যেখানে তাঁকে বলতে দেখা গিয়েছে, ‘কেন্দ্রের প্রথম পদক্ষেপ হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তারপর ভারত থেকে সমস্ত অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতে ২০২৪ সালের মধ্যেই দেশজুড়ে এনআরসি করা হবে।’