ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে রাজধানী দিল্লির শাহিনবাগে চলমান বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে এক বন্দুকধারী। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই চলা বিক্ষোভে ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকালে এ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের দেশে কেবল হিন্দুরাই থাকবে।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভেও পুলিশের উপস্থিতিতে গুলিবর্ষণ করে এক উগ্র সন্ত্রাসী হিন্দুত্ববাদী কিশোর।
ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শাহিনবাগের বিহার সাইড ব্যারিকেড থেকে বিক্ষোভকারীদেরকে উদ্দেশ্য করে দুই দফায় কপিল গুজ্জা নামের এক হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী গুলি ছোড়ে।
ভারতে সিএএ পাস হওয়ার পর থেকে দিল্লির শাহিনবাগে টানা দেড় মাসজুড়ে চলা বিক্ষোভের কারণে কার্যত এক পাশের রাস্তা বন্ধ রয়েছে। নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে সেখানে বিপুল সংখ্যক নারীরা টানা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার শাহিনবাগের ঘটনার আগে গত বৃহস্পতিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে ১৯ বছরের এক সন্ত্রাসী যুবক। ‘আজাদি চাই; এই নে আজাদি’ বলেই সেখানকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আটকের সময় ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল ওই বন্দুকধারী। তার দাবি, ভারতে শুধু হিন্দুরাই থাকবে।
উল্লেখ্য, শাহিনবাগের অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই কড়া ভাষায় কথা বলেছেন বিজেপি নেতারা। কেন সেখানে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে বিক্ষোভ চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। তাদের কেউ কেউ দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতলেই আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে হটিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দিল্লির আসন্ন নির্বাচনেও ইস্যু হয়েছে শাহিনবাগের সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ। কেউ কেউ তাদের কুকুরের মত গুলি মারা উচিত বলে জঘন্য মন্তব্য করেছে।
দিল্লিতে নির্বাচনী প্রচারে এসে বিতর্কিত ভাষণ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ভাষণে তাঁর সরাসরি নিশানা ছিল শাহিনবাগ। সেই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিল, ‘দেশকে গদ্দারো কো...’ সভায় উপস্থিত হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা চেঁচিয়ে বলতে থাকে, ‘গোলি মারো সালো কো’।