ফরিদপুরে খালের পাড় ও সরকারি হালটের জমির মাটি কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের নেতা। এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর পৌরসভার সম্প্রসারিত এলাকা সাদীপুর সেতু সংলগ্ন মান্দারতলা খালের পশ্চিম পাশে ভাজনডাঙ্গা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম জিল্লুর রহমান ওরফে টুটুল। তিনি সাদীপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এ ছাড়া তিনি আলীয়াবাদ ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।
তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে হালটটি ছিল তার দুই পাশেই আমার জমি আছে।’ এটি একটি অব্যবহৃত হালট দাবি করে তিনি বলেন, তবে হালটের যে জায়গা কেটে ফেলা হয়েছে তা ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে হালট ভরাটের এ কাজ।
এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সাদীপুর এলাকায় সাদীপুর সেতুর নিচ দিয়ে মান্দারতলা খাল প্রবাহিত হচ্ছে। সাদীপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে ৯ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে খালটি সদরের বাখুন্ডা এলাকায় কুমার নদে মিলিত হয়েছে। সম্প্রতি পাউবোর উদ্যোগে কুমার নদের পাশাপাশি এ খালটিও খননের আওতায় আনা হয়। খালটির খনন কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সাদীপুর সেতুর পশ্চিমে ভাজনডাঙ্গা এলাকায় খালের পাড়সংলগ্ন অন্তত ২৮/৩০ ফুট জমির মাটি কাটা হয়েছে। মাটি কাটার ফলে খালের পাড় ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া ওই জায়গা দিয়ে যে সরকারি হালটি রয়েছে সে হালটের অন্তত ১৫০ ফুট জায়গা কেটে গর্ত করে মাটি নেওয়া হয়েছে। গতকাল একটি এক্সকাভেটর দিয়ে কেটে ফেলা হালটের জায়গা ভরাট করতে দেখা যায়। তবে খালের পাড় থেকে মাটি কেটে হালটের জমি ভরাট করায় খালের পাড় ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান খালের পাড়ে তাঁর নিজের জায়গার মাটি কেটে বিক্রি করা শুরু করেন। মাটি কাটতে কাটতে জিল্লুরের নিজের জায়গার সঙ্গে সরকারি হালট ও খালপাড়ের জমির মাটিও কেটে বিক্রি করে দেন তিনি। এক ট্রাক মাটি তিনি ৬০০ টাকা করে বিক্রি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার দুই বাসিন্দা বলেন, এক সপ্তাহ আগে এ ব্যাপারে এলাকাবাসী প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক নির্বাহী হাকিম ও পৌরসভার সার্ভেয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পাউবোর ফরিদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, মদনতলী খালের পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়ার খবর তাঁর জানা নেই। তিনি অবিলম্বে কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।