শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে কারিগরি শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে গত বছর ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে ‘স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট’ (স্টেপ)। তবে এ প্রকল্পের কাজ যেভাবে সম্পন্ন হয়েছে, তাতে কারিগরি শিক্ষার কতটা উন্নয়ন হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কারণ প্রায় ১৮শ’ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজে ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তার একটি চক্র নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনাকাটার নামে অর্থ লোপাট করেছে। এ লক্ষ্যে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় নামসর্বস্ব কোম্পানি।
সেই সঙ্গে প্রকল্পভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে কারিগরি শিক্ষা খাতের প্রভাবশালী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে ওই কোম্পানির পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের চক্রভুক্ত কর্মকর্তারা অনুদানপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট সরবরাহকারীর কাছ থেকে ল্যাবরেটরির মালামাল কিনতে বলে দিতেন। রিপোর্টঃ যুগান্তরের
কথামতো কাজ না করলে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সব নিয়মকানুন মেনে মালামাল কিনলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিল আটকে দেয়া হতো। কোনো প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেটভুক্ত সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য নিতে রাজি হলে সেই প্রতিষ্ঠানের দরপত্রের ডকুমেন্টস তৈরি করে দিত সম্ভাব্য দরদাতা প্রতিষ্ঠান। ফলে এ ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্রেও কাজ পেত না সাধারণ দরদাতা। অভিযোগটি গুরুতর।
বস্তুত প্রকল্পের ক্রয়ে দুর্নীতি ও অপচয় একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে তা শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের কয়েকটি ক্রয়ের ঘটনা দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আমরা মনে করি, যে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের কেনাকাটায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পগুলোয় দুর্নীতি কমেনি। দুর্নীতি ঘটে চলেছে নানাভাবে। কেনাকাটায় দুর্নীতি এর একটি দিক মাত্র।