কাজ শেষ না করেই ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১৫৭ উন্নয়ন প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। আশ্চর্যজনক হল, এসব প্রকল্পের কোনোটিরই শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি; এমনকি এর মধ্যে শূন্য থেকে দুই শতাংশ অগ্রগতির প্রকল্পও রয়েছে।
বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এডিপি অগ্রগতি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, অসম্পন্ন কোনো প্রকল্প, বিশেষ করে ভৌত অবকাঠামো সংক্রান্ত কোনো প্রকল্প যদি ৮০ ভাগ সম্পন্নের পর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয় তাহলে সেটি পুরোপুরি কাজে লাগে না।
ফলে অর্থের অপচয় হয়। অন্যদিকে বাকি ২০ ভাগ কাজ শেষ করতে পুনরায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হয়। নতুন প্রকল্পের কাজ শেষ হতে-না-হতেই দেখা যায়- আগে যেসব কাজ করা হয়েছিল, তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয়বার অপচয়ের ঘটনা ঘটে। বস্তুত অপচয়ের দুষ্টচক্রে পড়ে যায় এসব প্রকল্প। রিপোর্টঃ যুগান্তর
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাহিদা এবং সরকারের সক্ষমতার মধ্যে সমন্বয় করে প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার কথা বলা হলেও প্রতিবছরই মাত্রাতিরিক্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি খারাপ প্রবণতা। জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় কোনো প্রকল্প অনুমোদনের পর তা নির্দিষ্ট মেয়াদকালে শেষ করা না গেলে কিংবা অসম্পূর্ণ অবস্থায় থেকে গেলে রাষ্ট্র আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; পাশাপাশি জনদুর্ভোগ ও হয়রানির মাত্রাও বাড়ে।
১৫৭ উন্নয়ন প্রকল্প শতভাগ বাস্তবায়িত না হওয়ায় নির্দিষ্ট অর্থবছরে গৃহীত উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে আমাদের। উদ্বেগের বিষয় হল, প্রতিবছর প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে এবং এর ফলে এডিপির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে। কাজেই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা এমনভাবে নির্ধারণ করা উচিত, যাতে সেগুলো পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
সাধারণত কর্মপরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা, জমি অধিগ্রহণের জটিলতা, অর্থ ছাড়ে বিলম্ব, দরপত্র মূল্যায়নে দীর্ঘসূত্রতা, সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ, দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের অভাব, ঠিকাদারদের পেশাদারিত্বের অভাব ইত্যাদি সমস্যার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটে কিংবা অসমাপ্ত অবস্থায় রয়ে যায়।