বিভিন্ন সময়ে খুন, গুম, অপহরণের পর এবার সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) বিরুদ্ধে বিহার পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক বৌদ্ধ ভিক্ষু। সোমবার সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপশীলে অবস্থিত ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’ এর প্রতিষ্ঠাতা ড. এফ দীপংকর মহাথের (ধুতাঙ্গ ভান্তে)।
তিনি এ ঘটনার জন্য সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করে পূর্ববর্তী সময়ে বিহারের সেবক ও বিহারে জনসংহতি সমিতির ভয়ভীতি প্রদর্শন, অপহরণ, হামলা-তাণ্ডবের ১৮টি ঘটনা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. এফ দীপংকর মহাথের বলেন, আমরা বৌদ্ধধর্মের অহিংস আদর্শ প্রচারে ব্রতী হলেও স্থানীয় আঞ্চলিক দল জেএসএস বরাবরই আমার সেবকদের হামলা, অপহরণসহ সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার (১৫ মে) রাতে বিহারে আগুন দিয়ে ত্রিপিটক, প্রচুর বুদ্ধমূর্তিসহ বিহারে রক্ষিত সবকিছুর ক্ষতিসাধন করে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এই বৌদ্ধভিক্ষু বলেন, সাধারণত অন্য ধর্মাবলম্বী লোক দ্বারা উপাসনালয়ে হামলা হলেও ৯৯ শতাংশ বৌদ্ধধর্মের অনুসারী বসবাসকারী বিলাইছড়ির ধুপশীলে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) এই কার্যকলাপ বৌদ্ধধর্মের শান্তিপূর্ণ প্রচারে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি এ সময় স্থানীয়দের নিরাপত্তাসহ সকল ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে স্ব-স্ব ধর্ম পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। কালের কন্ঠ
লিখিত বক্তব্যে এই ধর্মগুরু আরো বলেন, সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রেও যোদ্ধাগণ কিছু নিয়মনীতি মনে চলে। যেমন শস্যক্ষেতে আগুন লাগানো, শিশুদের ওপর অত্যাচার, মাতৃজাতির ওপর অত্যাচার, ধর্মীয় উপসনালয় ও ধর্মীয় গুরুদের ওপর আঘাত করা নিষিদ্ধ মানা হয় এবং জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। সে ক্ষেত্রে বিনাযুদ্ধে এই ভাবনা কেন্দ্র, বৌদ্ধবিহার, বুদ্ধমূর্তি, ত্রিপিটকে এই অগ্নিসংযোগ কেন?
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, শ্রীমৎ মহান্মম ভিক্ষু, শ্রীমৎ মোদিয় ভিক্ষু, শ্রীমৎ জ্ঞাতিমিত্র ভিক্ষু, শ্রীমৎ প্রজ্ঞামিত্র ভিক্ষু।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলোৎপল খীসার মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে রবিবার জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে দাবি করা হয়, জনসংহতি সমিতির ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করা এবং সমিতির নেতাকর্মীসহ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্বার্থবাদী মহল এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনসংহতি সমিতিকে দায়ি করছে। বিবৃতিতে জনসংহতি সমিতির এই ধরনের কোনো ঘটনার সাথেও জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়েছিলো।