করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মানুষ যখন দিশেহারা তখনও বাঙালিদের হয়রানি করার জন্য নিশানা করতে ছাড়ছে না আসামের বিজেপি সরকার। মহামারির সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যেও সর্বানন্দ সনোয়াল সরকার বাঙালিদের ডি আতঙ্কে তাড়া করে চলেছে। একের পর এক মানুষকে সন্দেহভাজন বিদেশি নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাঁদের তাঁরা প্রত্যেকেই বংশ পরম্পরায় আসামের বাসিন্দা। সারা বাঙালি ঐক্য মঞ্চের কার্যনির্বাহী সভাপতি শান্তনু মুখার্জি অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি সরকার বাঙালিদের বেছে বেছে নিশানা করছে। তারা মুখে বাঙালিদের সুরক্ষার কথা বললেও বাস্তবে করছে ঠিক বিপরীতটা। ভোটের নামে বাঙালিদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। অথচ তাদের সরকার চলছে ঠিক তার বিপরীত পথে।
আসামের বাকসা জেলার পাকড়িগুড়ি গ্রামের বাসিন্দা দুর্গা আর্য। তাঁর বাপ-ঠাকুরদাও ওই অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁকে দু’দিন আগে ‘সন্দেহভাজন বিদেশি’ বলে ‘ডি’ নোটিশ পাঠিয়েছে বরপেটার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। বলা হয়েছে– আগামী ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে দুর্গদেবীকে আদালতে হাজির হতে হবে। ফলে আনতে হবে নিজের নাগরিকত্বের সমস্ত নথিপত্র। অবশ্য আইনজীবীকেও সঙ্গে আনতে পারেন।
হঠাৎ করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের এমন নোটিশে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকেই। করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই হাতে অর্থকড়ি বলতে তেমন কিছু নেই। তার উপর যানবাহনও ঠিকমতো চলছে না। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে আইনজীবীরাও বাইরে যেতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে, কী হবে, তা ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না।
অসমের বিভিন্ন সংগঠন, বিশেষ করে ভাষা গত সংখ্যালঘু বাঙালিদের তরফ থেকে ইতিপূর্বে একাধিকবার ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে যে, এক জেলার বাসিন্দাদের কোন যুক্তিতে সন্দেহভাজন নোটিশ পাঠাচ্ছে অন্য জেলার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। নিজের জেলার ট্রাইব্যুনালের কাছে তিনি সন্দেহভাজন না হলেও অন্য জেলার ট্রাইব্যুনাল এবং সীমান্ত পুলিশের কাছে কী করে সন্দেহভাজন হয়ে যেতে পারেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও এমনই ঘটল। বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতিতে কী করে তারা নির্ধারিত দিনে অসময়ে দূরের জেলার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছাবেন? ভেবে কুল পাচ্ছেন না।