১১ই সেপ্টেম্বরের ঘটনাবলীর পর নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিশ্ববাসীর চিন্তা ও কল্পনার জগতে স্থান করে নিয়েছে।ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং ঘোষণা করে দিয়েছেন সন্দেহাতীত ভাবে নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনের হামলাগুলো ছিল “ইনসাইড জব”। অর্থাৎআমেরিকার সরকারই এই হামলা গুলোর পেছনে ছিল।যেহেতু এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব গুলোতে কিছু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ব্যবহার করা হয়েছিল, তাই সাধারন মানুষের কাছে এই তত্ত্বগুলো গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।
ধীরে ধীরে আমরা দেখলাম যেসমস্ত ব্যক্তিরা, অ্যালেক্স জোন্স এর মতো তাদের প্রিয় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের আঁকড়ে আছেন তারা একটি নির্দিষ্ট উৎস থেকে উৎসারিত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত, যা এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর সাথে সাংঘর্ষি্*ক সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করছেন অথবা ব্যর্থ হচ্ছেন। এই তথ্য-উপাত্তগুলো এই ষড়যন্ত্রগুলোর ভিত কাঁপিয়ে দেয় এবং এগুলোর প্রেক্ষিতে তাত্ত্বিক এবং তাদের উৎসাহী অনুসারীদের একমাত্র জবাব হয়ে দাঁড়ায় যে এগুলো আসলে “সিআইএ-র প্ল্যান” অথবা “জনগণকে বোকা বানানোর জন্য সরকারের চাল”। বিভিন্ন দুর্বল যুক্তির মাধ্যমে এভাবে তারা নিজেদের ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে চেস্টা করেন। এই উৎসটি, যার ছুড়ে দেয়া চ্যালেঞ্জ এবং যার পরিবেশিত তথ্য-উপাত্ত এইসব তাত্ত্বিকদের গলায় কাঁটার মতো বিঁধে আছে তার নাম হল আস-সাহাব মিডিয়া।
যায়নবাদী অথবা নির্বোধরা কোন ভিত্তিহীন উপসংহার টানার আগেই যেসব কুফফার ও মুনাফিকরা এ লেখা পড়বে তাদের জন্য আমি পরিষ্কার ভাবে বলতে চাইঃ
১) আমি আস-সাহাব মিডিয়ার সাথে কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নই
২) আমি আস-সাহাব মিডিয়ার কোন সদস্যকে চিনি না। আমি এমন কাউকেও চিনি না যারা আস-সাহাব মিডিয়ার কোন সদস্য্যকে চেনেন।
৩)আস-সাহাব মিডিয়ার ব্যাপারে আমি তাই জানি, যা আমি জেনেছি, ক) তাঁদের নিজেদের প্রকাশিত ভিডিও ও বক্তব্য থেকে, খ)অন্যান্য দলের মুজাহেদীন তাঁদের নিজেদের অফিশিয়াল রিলিযের মাধ্যমে আস-সাহাবের ব্যাপারে যা যা বলেছেন তা থেকে, এবং গ) কাফিররা তাদের নিজদের ইন্টারভিউ ও ডকুমেন্টারিগুলোতে আস-সাহাবের ব্যপারে যা বলে থাকে, সেগুলো থেকে।
৪)আমি কোন জিহাদী দল, আন্দোলন বা প্রতিষ্ঠানের সদস্যা না। আমি একজন স্বাধীন লেখক যিনি বিশ্বাস করেন ৯/১১ এর ব্যাপারে কিছু বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
আমি এ-ও পরিষ্কার করে বলতে চাই যে আমি কোন ভাবেই আমেরিকা সরকারের সাথে যুক্ত নই এবং আমি তাদের সাহায্য করার জন্য এই লেখা লিখছি না। বরং আমি আল্লাহ-র জন্য আমেরিকা ও আমেরিকার সরকারকে ঘৃণা করি এবং তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করি এবং যতোদিন তারা তাগুতের ইবাদাত করবে এবং মুসলিমদের নিজস্ব বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে থাকবে ততোদিন এই ঘৃণা ও শত্রুতা বলবৎ থাকবে।
এই ব্যাপারগুলো পরিষ্কার করে নেয়ার পর আমি এখন নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাই।
১) আস-সাহাব মিডিয়া যে সিআইএর কোন চাল না এ ব্যাপারে আমরা কিভাবে নিশ্চিত হব?
২) আমরা কিভাবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হব যে শাইখ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ ৯/১১ এর ঘটনা ঘটিয়েছিলেন? অ্যালেক্স জোন্স এবং তার মতো অন্যান্য যারা দাবি করে ৯/১১ একটি “ইনসাইড জব” ছিল, অথবা ইস্রাইলী মোসাদ ৯/১১ ঘটিয়েছে – তাদের প্রতি আমাদের জবাব কি হবে?
আমি আল্লাহ-র কাছে সাহায্য চাই এই কাজে আমাকে সহায়তা করার জন্য এবং আমার সত্যকে মানবজাতির কাছে পরিস্কার করে তোলার জন্য আমার লেখনীকে উপযুক্ততা দানের জন্য।
কিভাবে আমরা নিশ্চিত হবো আস-সাহাব মিডিয়া সিআইএর কোন চাল না এবং তথ্যসূত্র হিসেবে নির্ভরযোগ্য?
আমরা জানি আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ
মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।
[আল হুজুরাত, আয়াত ৬]
এই আয়াতটির দ্বারা আমাদের আলোচনা শুরু করার কারণ হল, আমি মনে করি এই আয়াতের আলোকেই আমাদের এই বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত। একদল মুসলিমের প্রতি সন্দেহের বশবর্তী হয়ে খারাপধারণা করার পরিবর্তে আমাদের দায়িত্ব হলউপরোক্ত আয়াতে উল্লেখিত মূলনীতির উপর ভিত্তি করে আমাদের বিভিন্ন প্রমাণগুলো পরখ করা। কারণ আমরা যদি এই মূলনীতি না অনুসরণ করি তবে আমরা হয়তো তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো যাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, “যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও” – এবং হয়তো আমরা তাওবাহ করার সু্যোগ পাবো না।
তাই আসুন আমরা আমাদের আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে এই মূলনীতি অবলম্বন করেই অগ্রসর হই।
সাধারণত মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল যে বিষয়গুলোর ব্যাপারে আমাদের সরাসরি জানার সুযোগ নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্বাসযোগ্য ও মুত্তাকী মুসলিম ভাইদের কথা সত্য বলে গ্রহন করা। যদি একই বিষয়ে কোন কাফির বিপরীত কোন দাবি করে তবে সুপস্ট প্রমান না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কাফিরের দাবিকে আমলে নেব না। এটা এমন একটি মূলনীতি যা মুসলিম হিসেবে অনুসরন করা বাঞ্ছনীয়। যদি কাফির তার দাবির সপক্ষে কিছু প্রমান উপস্থাপন করে , যেমন ৯/১১ নিয়ে কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ক্ষেত্রে ঘটেছে, সেক্ষেত্রে মুসলিম হিসেবে আমাদের করণীয় হল এই দাবির প্রেক্ষিতে মুসলিমরা কি জবাব দিয়েছে, সেটা জানার চেস্টা করা। আর যদি কাফিরদের দাবির বিপরীতে মুসলিমরা কোন জবাব না দিয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের উচিত আমাদের মুসলিম ভাইদের বক্তব্য বিশ্বাস করা। অবশ্যই আমরা আমাদের নিজেদের মনে প্রমাণের ভিত্তিতে জন্ম নেয়া এসব প্রশ্নকে স্থান দিতে পারি। কিন্তু মুসলিম ভাইদের কাছ থেকে জবাব পাওয়া ও যাচাই করে নেয়ার আগে তাদের বক্তব্যকে প্রত্যাখান করা বা সন্দেহ সৃষ্টি করা একেবারেই অনুচিত। এরকম করার কারন হল অনেক ক্ষেত্রেই কৌশলগত কারণে আমাদের মুসলিম ভাইরা কিছু তথ্য পাবলিকলি প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকেন পারেন।এ অবস্থানের ব্যাপারে আমাদের সবার স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার।
এবার তাহলে আস-সাহাব মিডিয়ার দিকে দৃষ্টি ফেরানো যাক। প্রথমে আস-সাহাব মিডিয়া কি, এতা পরিষ্কার করে নেয়া দরকার।
১) আস-সাহাব মিডিয়া হল আল-কা’য়িদার অফিশিয়াল মিডিয়া উইং। প্রথম দিকে তাদের রিলিযগুলোর মান অতোটা ভালো না হলেও পরবর্তীতে তাঁরা জিহাদী মিডিয়ার ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হন।
২) তাঁদের মিডিয়া রিলিযগুলো মূলত ভিডিও, লিখিত ও অডিও বক্তব্য এবং সংক্ষিপ্ত বিজ্ঞপ্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ।
৩)আস-সাহাব মিডিয়ার মূল উদ্দেশ্য উম্মাহ-র মধ্যে জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র ফারযিয়্যাত পালনের আকাঙ্ক্ষা ও স্পৃহাকে পুনরুজ্জীবিত করা।আস-সাহাব মিডিয়া জিহাদের মহান ফরয দায়িত্ব পালনের সুন্নাহ অনুযায়ী যে বিশুদ্ধ পদ্ধতি উপস্থাপন করার লক্ষ্যে কাজ করে। অহংকার, জাতীয়তাবাদ, শিরক, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, রিদ্দা, জাহিলিয়্যাত, এবং কাপুরুষতার বেড়াজাল ছিন্ন করে এই মহান ইবাদাত ও দায়িত্ব পালনের ডাক উম্মাহ-র কাছে পৌঁছে দেয়া আস-সাহাবের লক্ষ্য। তাঁরা বুদ্ধিবৃত্তিক ও শার’ঈ উভয় দিক থেকেই জিহাদ পালনের এই ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান।
৪) তাঁদের অধিকাংশ ভিডিওর বিষয়বস্তু হল আফগানিস্তানে ন্যাটো-আমেরিকার দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এবং যেসব মুরতাদ কাফিরদের এই কাজে সাহায্য করে, তাঁদের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন সামরিক অভিযান।
৫) শাইখ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ, শাইখ আইমান আল যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ কিম্বা অন্যান্য মুজাহিদীন নেতারা যখন কোন বক্তব্য দিতে চান তখন আস-সাহাব মিডিয়া তাঁদের জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে থাকে।
৬) তাঁরা শতাধিক ভিডিও প্রকাশ করেছে। শুধুমাত্র ২০০৭ এই তাঁরা নব্বইটির বেশী ভিডীও প্রকাশ করেছে। এগুলোর অধিকাংশের বিষয়বস্তু আল-কা’য়িদা ও তালিবানের বিভিন্ন সামরিক অপারেশান।
এবার দেখা যাক আস-সাহাব মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে আমরা কি কি জানি। ইতিমধ্যে আমরা বলেছি যে সব বিষয়ে সরাসরি জানা বা অনুসন্ধান করা আমাদের আয়ত্তের বাইরে, সেইসব ক্ষেত্রে আমাদের নীতি হবে আমাদের দৃশ্যত বিশ্বাসযোগ্য ও মুত্তাকী ভাইদের বক্তব্যকে গ্রহণ করে নেয়া।
আস-সাহাব মিডিয়ার দৃশ্যত মুত্তাকী* হবার প্রমাণ কি?
[*আমরা এখানে মুত্তাকী হবার ব্যাপারে দৃশ্যত বলছি কারণ কোন ব্যক্তির তাকওয়ার অবস্থা সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ রাখেন। আমাদের পক্ষে সম্ভব না একজন ব্যক্তির বুক চিরে তাঁর তাকওয়ার প্রকৃত পরিমাণ পরিমাপ করা। তাই এ ব্যাপারে শারীয়াহ-র নীতি হল বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করা। এজন্য আমরা “মুত্তাকী”-র পরিবর্তে “দৃশ্যত মুত্তাকী” শব্দযুগল ব্যবহার করছি।*]
আস-সাহাব মিডিয়াকে দৃশ্যত মুত্তাকী করার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে।
১) আস-সাহাব মিডিয়ার ভিডিও গুলোতে আমরা সেসব ইসলামী বিষয়ে আলোচনা দেখি যা উম্মাহ-র জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আস-সাহাব মিডিয়া কঠোরভাবে ইস্লামী বিধিনিষেধ মেনে চলে। তাঁরা যেকোন ধরনের হারাম সঙ্গীত-বাজনা এবং দৃশ্য দেখানো থেকে বিরত থাকেন। এমনকি তাঁরা নারীদের অবয়ব ঝাপসা করে দেন। এছাড়া তাঁদের বক্তব্য ও বিবৃতিতে তাঁরা কুফর, শিরক ও বিদ’আ মুক্ত সঠিক আকী’দা কথা বলে থাকেন। অবশ্যই কিছু বিষয়ে তাঁদের অবস্থানের সাথে কোন কোন মুসলিমের দ্বিমত থাকতে পারে। যেমন আমালী ইশ্তিশাদী বা ফিদায়ী হামলা এবং আমেরিকাকে আক্রমন করার ব্যাপারে তাঁরা কুর’আন ও সুন্নাহ থেকে যেসব দালীল উপস্থাপন করে থাকেন সেগুলোর ব্যাপারে। এই বিষয়গুলো গুলো নিয়ে মতপার্থক্য থাকা জায়েজ। তাই আমরা অন্যত্র আলোচনা বা বিতর্ক করতেই পারি। কিন্তু সব মিলিয়ে আমরা তাঁদের বক্তব্যের মধ্যে উম্মাহ-র জন্য ক্ষতিকর এবং শারীয়াহ-র দৃষ্টিতে বাতিল কিছু দেখি না। বরং তাঁদের ভিডিওগুলোতে জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র প্রতি ভালোবাসা ও জিহাদ করার ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে পুনরায় মর্যাদা ও ক্ষমতার আসনে আসীন করার একান্ত প্রচেষ্টাই আমরা দেখতে পাই।
২) আমরা জানি আস-সাহাব হল আল কা’য়িদা। কারণ আস-সাহাব হল আল-কা’য়িদার মিডিয়া শাখা। এটা কোন আলাদা স্বাধীন সংগঠন না। তাই আস-সাহাব যখন যুদ্ধরত যোদ্ধাদের ফুটেজ দেখিয়ে থাকে – যেমন শায়খ আবু ইয়াহিয়া আল লিবী রাহিমাহুল্লাহ, নাসির আল কাহতানী প্রমুখ ব্যক্তির – তখন প্রকৃত পক্ষে তাঁরা জিহাদরত আল-কা’য়িদার মুজাহেদীনদের ফুটেজ দেখাচ্ছেন। এখন আসুন দেখা যাক এসব ভিডিও থেকে এসব মুজাহেদীনের তাকওয়ার বাহ্যিক প্রকাশ সম্পর্কে আমরা কি দেখতে পাইঃ
ক) তাঁরা সালাত আদায়কারী। আমরা তাঁদের যোদ্ধাদের পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পাশাপাশি তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেও দেখি।
খ) তাঁরা কুর’আন তিলাওয়াতকারী। আমরা তাঁদের যোদ্ধাদের কুর’আন তিলাওয়াত সহ অন্যান্য দ্বীনি কিতাব অধ্যায়নরত অবস্থায় দেখি।
গ) তাঁরা ‘ইলম অন্বেষণকারী। আমরা তাঁদের যোদ্ধাদের তাজউয়ীদ, ফিকহ সহ দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে ‘ইলম অন্বেষণ ও চর্চারত অবস্থায় দেখি।
ঘ) আমরা তাঁদের যোদ্ধাদের ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ মেনে চলতে দেখি। তাঁদের যিকর, তিলাওয়াত, নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা ও খেলাধুলার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি আল্লাহ-র ওয়াস্তে ভালোবাসা দৃশ্যমান হয়।
ঙ) আমরা তাঁদের মধ্যে দেখি দ্বীনের জন্য গীরাহ, জযবা এবং তীব্র ভালোবাসা। তাঁদের কেউই নিজেদের জীবন সম্পর্কে হতাশ হয়ে, আত্মহত্যার জন্য এই পথে আসেন নি। বরং তাঁরা এসেছেন কারণ তাঁরা বিশ্বাস রাখেন তাঁদের রাব্ব-এর উপর এবং বিচার দিবসের উপর। তাঁরা এসেছেন ইজ্জাহ ও কু’আহ এর একটি সম্মানিত জীবন ও শহীদ হিসেবে সর্বোত্তম মৃত্যু লাভের আশায়।
চ) তাঁরা উম্মাহকে গভীরভাবে ভালোবাসে। তাঁরা চান এই উম্মাহ যেন আবার মানবজাতির নেতৃত্বের পদে অধিস্টিত হতে পারে। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, তাঁরা উম্মাহকে ভালোবাসে না কারণ তাঁরা স্বেচ্ছায় মুসলিমদের হত্যা করেন। এই অভিযোগের ব্যাপারে আমাদের উত্তর হল, প্রথমত, মুসলিম বলতে আপনি কি বোঝান সেটা পরিষ্কার করুন।কারণ মুসলিম বলে আপনি গুপ্তচর বা আফগান আর্মির মত, ঐসব লোকদেরকে বুঝিয়ে থাকেন যারা মুজাহেদীনের বিরুদ্ধে কুফফারকে সহায়তা করে, তাহলে না, আল্লাহ-র কসম ! এই লোকেরা মুসলিম না। আপনি যদি বেসামরিক জনগণকে বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে জেনে নিন যে তাঁরা স্বেচ্ছায় তাঁদের হত্যা করেন না। হয়তো এমন হতে পারে কোন একটি অপারেশান চলাকালীন সময়ে কোন একজন মুসলিম সেই জায়গা অতিক্রম করছিলেন এবং দুর্ঘটনাবশত মারা গেছেন। কিন্তু এটাকে কোনভাবেই স্বেচ্ছায় মুসলিমদের হত্যা করা বলা যায় না। এর প্রমাণ হল তাঁরা যদি আসলেই মুসলিমদের স্বেচ্ছায় হত্যা করতো তবে তাঁদের বক্তব্যে তাঁরা কুর’আন, সুন্নাহ ও সামরিক কৌশলের আলোকে খালেস ভাবে তাঁদের কার্যাবলী ব্যাখ্যা করার মতো কস্ট করতেন না। এবং এরকম অনেক ভিডিও আছে যেখানে আমরা দেখেছি তাঁরা একটি বম্ব বিস্ফোরণ ঘটাতে যাচ্ছিলেন কিন্তু কাছাকাছি একজন মুসলিম চলে আসায়, শেষ মুহূর্তে তাঁরা তা থেকে বিরত হয়েছেন।
বাকি থাকে ৯/১১ এর কথা। এ বিষয়টি অপেক্ষাকৃতভাবে কিছুটা জটিল এবং আমরা পরবর্তীতে এই আলোচনা করবো। আমেরিকায় আল-কা’য়িদার হামলা, বিশেষ করে টুইন টাওয়ারের হামলা গুলোর পেছনে বিস্তৃত ফিকহী ইতিহাস আছে। শায়খ উসামা রাহিমাহুল্লাহ বেশ কিছু শুয়ুখের সাথে এই হামলার পূর্বে আলোচনা করেছিলেন। এবং আপনি উনার সাথে একমত হোন বা না হোন এক্তহা অনস্বীকার্য যে এই হামলার বৈধতা সম্পর্কে আল-কা’য়িদার শার’ঈ দালীল ছিল। আমরা এখানে শার’ঈ হুকুম ও দালায়ীল নিয়ে আলোচনা করছি না কারণ আমাদের এই লেখার উদ্দেশ্য হল আস-সাহাব মিডিয়া এবং ৯/১১ এর আক্রমন কারা পরিচালনা করেছিলেন তা নিয়ে আলোচনা করা। তবে কাফিরদের কোন সামরিক বা অর্থনৈতিক ঘাঁটিতে তাদের সাথে কিছু মুসলিমও বিদ্যামান থাকলে বাস্তব প্রেক্ষাপট অনুযায়ী হুকুম নির্ধারিত হবে। যদি বাস্তবতা এমন হয় যে মুসলিমদের ক্ষতি না করে আক্রমন কয়রা সম্ভব, তাহলে একরকম হুকুম। আর যদি বাস্তবতা এমন হয় যে কোন ভাবেই মুসলিমদের ক্ষতি না করে আক্রমন করা সম্ভব না, তখন হুকুম অন্যরকম। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আমাদের এই লেখার বিষয়বস্তু না।
ছ) তাঁদের শহীদদের দেহ থেকে মেশক আম্বারের সুঘ্রাণ নিঃসৃত হয়। ভিডিও দেখে প্রতীয়মান হয় মৃতদেহের পাশে দাঁড়ানো সহযোদ্ধাদের মেশকের সুঘ্রাণ পান এবং আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
জ)তাঁরা যথাসম্ভব সুন্নাহ-র অনুসরণ করেন।
ঝ)তাঁরা সর্বদা আল্লাহ-র নিকটবর্তী হবার চেসটা জারি রাখেন। তাঁদের সামরিক অভিযানের ভিডিও আপনি দেখতে পাবেন অপারেশান শুরু আগে, চলাকালীন সময়ে এবং শেষে; সব অবস্থাতেই তাঁরা দু’আ ও যিকর করছেন।
ঞ) সঠিক ভাবে আল্লাহ-র ইবাদাতের উদ্দেশ্যে তাঁরা ক্রমাগত একে অপরকে এবং উম্মাহকে কুর’আনের বিভিন্ন আয়াত স্মরন করিয়ে দিতে থাকেন।
ট) তাঁরা আল ওয়ালা ওয়াল বা’রা (আল্লাহ-র জন্য ভালোবাসা এবং আলাহ-র ওয়াস্তে ঘৃণা করা) কায়েম করেন।
ঠ)তাঁরা কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেন। আল্লাহ সূড়া নিসার ৯৫ ও ৯৬ নাম্বার আয়াতে বলেছেন, তিনি মুজাহেদীনকে কাইদিনের (যারা জিহাদ ছেড়ে পেছনে বসে থাকে)উপরে পছন্দ করেন।তাই আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন, আমাদেরও তাঁদের ভালবাসতে হবে।
এগুলো হল আস-সাহাব তথা আল-কা’য়িদার মুজাহেদীনের বাহ্যিক তাকওয়ার উদাহরন।
এবার আসুন আস-সাহাব মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা/ অথেনটিসিটি নিয়ে আরেকটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা যাক।
এটা পরিষ্কার যে এই মুজাহেদীনরা দ্বীনদার মুসলিম। এবং তাঁরা জিহাদ করছেন আল্লাহ-র শত্রুদের বিরুদ্ধে, আল্লাহ-র আউলিয়াদের বিরুদ্ধে না। এটা হল মনে রাখার মতো আরেকটি বিষয়।
এখানে আল-কা’য়িদা এবং তালিবানের সম্পর্ক নিয়ে একটু আলোকপাত করা প্রয়োজন। এই দুটো দল সমঝোতার ও পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে পাশাপাশি কাজ করছেন। তালিবান কখনৈ আল-কা’য়িদার ব্যাপারে অথবা আল-কা’য়িদার কোন মিডিয়া রিলিযের ব্যাপারে অভিযোগ করে নি। বাস্তবতা হল এই দুতো দল, আমীরুল মু’মিনীন মুল্লাহ মুহাম্মাদ উমার রাহিমাহুল্লাহ-এর নেতৃত্বে “ইমারাতে ইসলামিয়্যা আফগানিস্তানের” ব্যানারে একটি সম্মিলিত আন্দোলন হিসেবে কাজ করছে।* [*বর্তমানে আমিরূল মু’মীনীন মুল্লাহ মুহাম্মাদ আখতার মানসুর হাফিযাহুল্লাহ –এর নেতৃত্বে]
এবং তালিবান অসংখ্য বার আল-কা’য়িদা ও শায়খ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ-র প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, তালিবানের কথা কি বিশ্বাসযোগ্য?
এই প্রশ্নের উত্ত হল, অবশ্যই তাঁরা বিশ্বাসযোগ্য। এবং তাঁদের বিশ্বাসযোগ্য মুসলিম হবার বিভিন্ন প্রমাণ আমদের কাছে আছে। যেমনঃ
১) শারীয়াহ প্রতিষ্ঠা এবং শিরক উপড়ে ফেলার ব্যাপারে তালিবানের আন্তরিকতা
২)তালিবান আন্দোলনের সূচনার ইতিহাস তাঁদের সপক্ষে আরেকটি বড় প্রমাণ।এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল কিছু দস্যু-লুটেরাদের দমন করার জন্য মাদ্রাসা ছাত্রদের এক্ট আন্দোলনের মাধ্যমে। আল্লাহ-র ইচ্ছায় এক সময় তাঁরা আফগানিস্তানের ৯০% এর বেশী অঞ্চলের উপর কতৃত্ব অর্জন করেন। এবং তাঁদের শাসন আমলে অপরাধের হারের ব্যাপক ভাবে হ্রাস পায়।*
[কুফফার তালিবানের বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক আকারের প্রপাগ্যান্ডা মেশিন চালিয়ে আসছে। এই প্রপাগ্যান্ডা মেশিনের কাজ হল মিথ্যাচারে পূর্ণ বই, ভিডিও আর প্রবন্ধের মাধ্যমে তালিবানকে একটি পৈশাচিক অশুভ শক্তি হিসেবে তুলে ধরার চেস্টা করা। তাই আমরা বিনয়ের সাথে আমাদের পাঠকদের অনুরোধ করবো তালিবানের ব্যাপারে বিভিন্ন ভুল ধারণা নিরসনের জন্য মুজাহেদীন এবং তাঁদের সমর্থকদের বক্তব্য পড়ার জন্য। যেমন এ ব্যাপারে আত-তিবিইয়ান পাবলিকেশানস এবং ‘আযযাম পাবলিকেশানস এর বইগুলোতে তালিবানের ব্যাপারে উলেমা ও চাক্ষুস সাক্ষীদের বক্তবয আছে।]
৩) তাঁদের তাকওয়া, তাউয়াক্কুল এবং দ্বীন পালন
তো এইলেখায় এখন পর্যন্ত উল্লেখিত সবগুলো পয়েন্টের আলোকে আসুন কিছু প্রশ্ন করা যাকঃ
১) কিভাবে কোন মুসলিমের পক্ষে আস-সাহাবের কোন রিলিযকে মিথ্যা বা বানোয়াট বলে অস্বীকার করা সম্ভব যখন এই ভিডিওগুলো হল খাটি জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র ফুটেজ?
২) কিভাবে কোন মুসলিম আস-সাহাবের রিলিযকে অস্বীকার করতে পারে যখন তাঁরা কোন শিরক, কুফর বা বিদ’আ প্রদর্শন করে না। অধিকন্ত তাঁরা দ্বীনের উপর থাকা এবং উত্তম আমল করা প্রদর্শন করেন?
৩) কিভাবে কোন মুসলিমের পক্ষে আস সাহাবে কোন রিলিযকে বানোয়াট বলে অস্বীকার করা সম্ভব যখন তাঁরা তালিবানের সাথে মিলে কাজ করেন এবং তালিবান তাঁদের ভালোবাসে এবং নিজেদের অংশ হিসেবে গ্রহণ করে?
৪) কিভাবে কোন মুসলিম আস সাহাবের কোন রিলিয অস্বীকার করে, যখন সিআইএ তথা কুফফার আল কা’য়িদাকে নিয়ন্ত্রন করে এরকম কথার সপক্ষে এক ধূলিকণা সমপরিমাণ প্রমাণ নেই?
৫) কিভাবে কোন মুসলিমের পক্ষে আস-সাহাবের একটি রিলিযও উপেক্ষা কিম্বা অস্বীকার করা অসম্ভবভ যখন এসব ভিডিও তে আমেরিকা এবং ন্যাটোর বিরুদ্ধে সামরিক অপারেশানের ফুটেজ দেখানো হয়। এই ভিডিও গুলোতে দেখানো হয় মুজাহেদীন আমেরিকান সেনাদের হত্যা করছেন। এসব মৃত সেনাদের রক্তাক্ত লাশ দেখানো হয় এবং আইইডি, আরপিজি পিকে এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে আমেরিকানদের উপর অতর্কিতে হামলা করতে এবং অ্যান্টি এয়ার-ক্র্যাফট উইপেন দিয়ে আমেরিকানদের হেলিকপ্টারগুলোকে আক্রমণ করার ফুটেজ দেখানো হয়। এ কথাগুলো বলার মাধ্যমে আমি যাবুঝাতে চাচ্ছি তাহল – যে কিভাবে কোণ মুসলিম এটা মনে করতে পারে যে আস-সাহাবকে একটি সিআইএ এর চাল বা প্লট, যখন তাঁরা ক্রমাগত আমেরিকানদের উপর হামলা করেই যাচ্ছেন?
কেউ হয়তো বলবেন, “আমি আস সাহাব মিডিয়াকে অস্বীকার করছি না, তবে “বিন লাদেন টেইপস” নামের রিলিযগুলোকে আমি বিশ্বাস করি না…এগুলোর ব্যাপারটা কেমন যেন ঘোলাটে। আর কয়েকটা তো শুধু অডিও।
এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য হলঃ আপনার এই কথার কোণ অর্থ হয় না। কারণ আস-সাহাবের একটা রিলিয নিয়ে প্রশ্ন তোলা আর সব রিলিয নিয়ে প্রশ্ন তোলা একই কথা। আর এটা করার অর্থ আল-কা’য়িদা যে আফগানিস্তানে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা। আর আস-সাহাবের নামে কোন বানোয়াট ভিডিও প্রকাশ করা হলে আস-সাহাব, তথা আল কা’য়িদা কি এই ব্যাপারে কোণ বক্তব্য না দিয়ে চুপ করে থাকতো? যারা জানেন না তাঁদের জ্ঞাতার্থে বলছি ইখলাস এবং হিসবাহ-র মতো ফোরামগুলো মুজাহেদীনের ফোরাম এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান থেকে মুজাহেদীন এই সব ফোরামে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন অপারেশানের খবর পোস্ট করেন। সুতরাং আস –শাব তো এসব ফোরাম ব্যবহার করেও কিছু বলতে পারতো যদি এই ভিডিওগুলো বানোয়াট হতো। অথচ তাঁরা এরকম কিছু করে নি।
এই ফোরামগুলোত মুজাহেদীন কিভাবে যোগযোগের জন্য ব্যবহার করেন তার একটা উদাহরণ আপনাদের সামনে তুলে ধরছিঃ আস সাহাবের একটি রিলিয নিয়মের ব্যতিক্রম করে প্রথমে ফরামের মাধ্যমে প্রকাশ না করে সরাসরি আল জাযিরাতে চ্যানেলে পাঠানো হয়েছিল। তখন ফোরামের কয়েকজন সদস্য প্রশ্ন তোলেন – কেন আমরা না পেয়ে আল-জাযিরা প্রথমে এই টেপ পেল?
আস-সাহাব এর জবাবঃ
“কৌশলগত কারণে এই ভিডিওটি অনলাইনে প্রকাশ করার আগে টিভি চ্যানেলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। কিছু কিছু ওয়েবসাইট ভিন্ন কোন পন্থায় এই ভিডিওটি পাবার ব্যাপারে যা বলছে তা সত্য না।“
যদি এই ভিডিওটি তাঁদের না-ই হতো, তবে তাঁরা কিন্তু সেটা বলে দিলেই পারতেন। যা তাঁরা করেন নি। আর আপনি যদি দাবি করেন যে এই ভিডিও গুলো সিআইএর বানানো বা তাদের চাল তাহলে আমরা আপনাকে বলবো আপনার এই দাবির সপক্ষে প্রমান আনতে। আপনার কাছে কি কোন প্রমান আছে যে আস সাহাব সিআইএ এজেন্টদের সাথে গোপনে কোন মিটিং করেছে? আপনা কাছে কি কোন প্রমান আছে যে আল কা’য়িদা মুসলিমদের মতো দেখতে হলেও আসলে তাঁরা হল কিছু যায়নবাদী ইহুদি (যদিও তাঁরা মুরতাদ এবং আমেরিকানদের হত্যা করছে)?
আসলে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে পুরো ব্যাপারটাই অনেক সহজ হয়ে যায়। তবে কাফিরের কাছে পুরো ব্যাপারটা খুব দুর্বোধ্য মনে হবে কারণ সে বাহ্যিক আমল ও মুখলেস হবার গুরুত্ব বোঝে না। একারণে কাফিরদের প্রতি আমাদের বক্তব্য হলঃ
আস সাহাব মিডিয়া (তথা আল কা’য়িদা)সিআইএর কোন চাল হবার ব্যাপারে যদি তোমাদের কাছে কোন সুস্পস্ট এবং অকাট্য প্রমান না থাকে তাহলে নিজেদের হাসির খোরাক বানানোর চাইতে মুখ বন্ধ রাখাই তোমাদের জন্য উত্তম।অ্যালেক্স জোনস এবং তার মতো কাফিরদের প্রতি এটাই আমাদের জবাব। শায়খ উসামা রাহিমাহুল্লাহ-র বিরুদ্ধে এদের “প্রমান” হল আল কা’য়িদার ব্যাপারে কোন এক অজানা কাফির ওয়েবসাইটের “রিপোর্ট” ! অথচ অনেক মুসলিম অ্যালেক্স জোনসকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ।
সুতরাং আওচনার প্রথম অংশের শেষে উপসংহার হিসেবে আমরা বলতে চাইঃ
তাঁদের আমল, আখলাক এবং জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র মাধ্যমে সুস্পস্টভাবে প্রমানিত হয় যে আস সাহাব একটি বিশ্বস্ত জিহাদী মিডিয়া প্রতিষ্ঠান। কিছু মুসলিম তাঁদের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে কারণ মুসলিমদের ভেতর কেউ এতোটা ভাল হতে পারে এটা তাঁরা নিজদের বিশ্বাস করাতে পারেন না। একারনে তাঁরা বলে বেড়ান “ আল কা’য়িদা হল আমেরিকার তৈরি, সিআইএর তৈরি। সিআইএ এ মুসলিমদের জিহাদের জন্য রিক্রুট করতে চায় যাতে করে তারা এসব মুসলিমদের জেলে ভরে নির্যাতন করতে পারে। একারণে সিআইএ-র এজেন্টরা বসে ইসলামি ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা এবং গবেষণা করে আল-কা’য়িদা-কে তৈরি করেছে। এবং সব দিক দিয়ে আল কা’য়িদাকে এতো অসাধারন, অসামান্য রকমের ভাল মনে হবার পেছনে কারণ এটাই। এটা হল মুসলিমদের বোকা বানানোর চাল। কেউ কি এতো ভাল হতে পারে নাকি?! মানে আল কা’য়িদার এই মুসলিমরা পাহাড়ের প্রচন্ড শীতের মধ্যেও তাহাজ্জুদ পড়া ছাড়ছে না, তাঁরা শারীয়াহ কায়েম করছে, তাঁরা গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করছে, তাঁরা আল্লাহ-র জন্য জীবনের আরাম আয়েশ ত্যাগ করেছে, তাঁরা দ্বীন শিক্ষা করে, তাঁরা ইসলামী ইস্যু নিয়ে কথা বলে, উম্মাহকে এবং মুসলিমদের বিভিন্ন দলকে নাসীহাহ করে, তাঁরা কাফিরদের হত্যা করেন এবং মুরতাদ ও কাফিরদের কাছ থেকে গানীমাহ ছিনিয়ে নেন, তাঁরা খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার কথা বলেন, মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্ব জুড়ে তাঁদের প্রভাব ও জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে, প্রকাশ্যে ও গোপনে অনেক মুসলিমই তাঁদের সমর্থন করেন এবং তাঁদের আমীর হলেন এমন এক ব্যক্তি যার মতো মুত্তাকী ব্যক্তি আমরা আমাদের বর্তমান সময়ে খুব কমই দেখেছি – একটা দল কিভাবে এতোটা ভালো হতে পারে? নিশ্চয় এটা মুসলিমদের বোকা বানানো আর জেলে ভরার জন্য সিআইএর একটা চাল।“
আমি জানি এই কথাগুলো কথাটা হাস্যকর শোনায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের কিছু মুসলিম ভাইরা এরকমই চিন্তাভাবনা পোষণ করেন। এরকম মুসলিমদের আমরা পুনরায় অনুরোধ করবো সূরা হুজুরাত যে আয়াতটি আমরা উদ্ধৃত করেছি তার আলোকে নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে গড়ে তোলার। আমাদের এই দ্বীনের নিয়ম হল আমরা সন্দেহ, অনুমান এগুলোর উপর বাহ্যিক এবং সুস্পষ্ট প্রমাণকে প্রাধান্য দেই। এরকম সন্দেহপোষণকারী মুসলিমরা আরেকটি কথা বলে থাকেন। তাঁরা বলেন – “এমন একটি মেশিন বা সফটওয়্যার আছে, আপনার কাছে যদি কোন একজন মানুষের ৩০ মিনিটের মতো কথার রেকর্ডিং থাকে তাহলে ঐ মেশিন/সফটওয়্যার এর সাহায্যে আপনি ঐ ব্যক্তির কণ্ঠের যেকোন রেকর্ডিং নিজে থেকে তৈরি করতে পারবেন…সুতরাং ৯/১১ সম্পর্কিত উসামা বিন লাদিনের সব অডিও টেপ ভুয়া…“
যদিও আসলেই এরকম প্রযুক্তি আছে, কিন্তু এরকম বলা আসলে আস-সাহাব মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কিত মূল বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার একটি অজুহাত। যারা এই বক্তব্যগুলো কোন উৎস থেকে আসছে এটা গভীরভাবে চিন্তা করে না, তারাই এধরণের কথা বলতে পারে। এরকম একটা কথা বলার অর্থ হল আস সাহাবের ভিডিও গুলোতে আমরা জিহাদের যেসব ফুটেজ দেখছি সেগুলো সব ভুয়া। আর অজ্ঞ এবং মূর্খ ছাড়া আর কেউ এটা অস্বীকার করবে না যে এই ভিডিওগুলোতে জিহাদের ফুটেজ আছে। এই কথা ঐসব লোকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যারা বলেন – “আরে এসব ভিডিওতে যা দেখছো এগুলোতে আসল জিহাদ না। এগুলোতে বানোয়াট ভিডিও…এগুলো হল অভিনয়, হলিউডের মতো।“ এটা পরিষ্কার যে এরকম বলা ব্যক্তিরা আস-সাহাবের ভিডিও তেমন একটা দেখেননি। এই যুক্তি অনুযায়ী আমাদের আসলে তালিবানদের অস্তিত্বও অস্বীকার করা উচিত। কারণ আস সাহাবের ভিডিওতে আমরা তালিবানদের অপারেশানও দেখতে পাই।
যাই হোক, আসুন এখন আমরা পরবর্তী প্রশ্নের দিকে আগাই।
২। শায়খ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ-ই যে ৯/১১ এর অভিযানের পেছনে ছিলেন আমরা কিভাবে এই ব্যাপারে সুনিশ্চিত হবো? অ্যালেক্স জোনস এবং তার মতো অন্যরা যে বলে ৯/১১ আসলে ইস্রাইলী মোসাদ করেছে বা অ্যামেরিকা নিজেই করেছে, এটার জবাব কি?
আমরা এই প্রশ্নটিকে প্রথমে কয়েকটি পয়েন্টে বিভক্ত করবো এবং তারপর সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। পয়েন্টগুলো হলঃ
ক)আস সাহাব মিডিয়া এবং ৯/১১ নিয়ে তাদের প্রকাশিত ভিডিও গুলোর সত্যতা, নির্ভেজাল হওয়া এবং বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে এবং ভিডিওগুলো প্রকাশের ব্যাপারে তাঁদের কৌশল সম্পর্কে আমরা যা জানতে পেরেছি সেগুলো পুনরায় মনে করিয়ে দেয়া।
খ) ৯/১১ এর হামলার ব্যাপারে শায়খ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ-র অফিশিয়াল বক্তব্য।
গ) টুইন টাওয়ারে বোমা বিস্ফোরণ এবং পেন্টাগনে কোন প্লেন আঘাত না হানা সম্পর্কিত ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর জবাব
ঘ) পেন্টাগনে হামলার পর এফবিআই কতৃক ঐ এলাকার হোটেল-গ্যাস স্টেশান থেকে ভিডিও ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে আলোচনা
ঙ) টুইন টাওয়ারে হামলা হয়েছে দেখার পর কিছু ইহুদির উল্লাস করা নিয়ে আলোচনা
চ) ৯/১১ এর আক্রমনের আগে অ্যামেরিকা যে ওয়ার্নিং পেয়েছিল সেই সম্পর্কে আলোচনা।
ছ) ৯/১১ এর আগে অ্যামেরিকা মুল্লাহ উমার রাহিমাহুল্লাহ-কে যে চিঠি পাঠিয়েছিল, সেটা নিয়ে আলোচনা।
আমি আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই আমি আস সাহাব মিডিয়ার পক্ষ থেকে বা তাঁদের মুখপাত্র হয়ে এখানে কিছু বলছি না। আমি এই কথাগুলো বলছি আমার নিজের বিবেক-বুদ্ধি এবং মুসলিমদের ব্যাপারে অকারণে সন্দেহ উত্থাপন না করা এবং তাঁদের ব্যাপারে অজুহাত তৈরি করার নীতির আলোকে।
আসুন শুরু করা যাক।
ক) আস সাহাব মিডিয়া এবং ৯/১১ নিয়ে তাদের প্রকাশিত ভিডিও গুলোর সত্যতা, নির্ভেজাল হওয়া এবং বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে এবং ভিডিওগুলো প্রকাশের ব্যাপারে তাঁদের কৌশল সম্পর্কে আমরা যা জানতে পেরেছি সেগুলো পুনরায় মনে করিয়ে দেয়াঃ
৯/১১ কে করেছে। এটা নিয়ে আলোচনা করার আগে আস-সাহাব মিডিয়ার (তথা আল-কা’য়িদা)সম্পর্কে আমাদের আলোচনা আবার একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আমরা ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছি আল কা’য়িদা অ্যামেরিকা বা সিআইএ-র সৃষ্টি না। এমনকি আস সাহাব মিডিয়া ৯/১১ এর ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছে এবং এটাও বলেছে যে, তাঁরাই, অর্থাৎ আল কা’য়িদাই ৯/১১ এর আক্রমণ করেছে (ইনশা আল্লাহ এই ব্যাপারে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করবো)। সুতরাং তাঁদের বক্তব্য যদি কেউ অস্বীকার করে তাহলে আমাদের আস সাহাব মিডিয়ার সত্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও নির্ভেজাল হওয়া নিয়ে আলোচনায় ফেরত যেতে হবে। আর গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়া যদি কেউ আস সাহাবের বক্তব্য এবং সত্যতা অস্বীকার করতে চান তবে তার এই ব্যাপারে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল কে ভয় করা উচিত। কোন মুসলিমকে সিআইএ এজেন্ট বা এধরণের কিছু বলা তাকফির* করার সমতুল্য। এবং তাঁদের সিআইএ এজেন্ট হবার ব্যাপারে যদি আপনার কাছে কোন প্রমাণ না থাকে তাহলে তো আপনি বিনা প্রমানে আপনার মুসলিম ভাইকে তাকফির করছেন। সুতরাং যারা এরকম বলেন তাদের উচিত আল্লাহ-কে ভয় করা এবং তারা যা বলছেন তা কতোটা গুরুতর এটা অনুধাবন করার চেস্টা করা।
[*এটা তাকফির বলে গন্য হবে কারণ, সিআইএ অথবা এফবিআই এর হয়ে কাজ করা সুস্পষ্ট রিদ্দা। আত তিবইয়্যান কতৃক প্রকাশিত দেখুন শায়খ নাসির বিন হামাদ আল ফাহদ-এর লেখা “The Exposition Regarding the Disbelief of the one that assist the Americans,” ]
৯/১১ এর ব্যাপারে আস সাহাবের প্রকাশিত ভিডিওগুলো হলঃ
১। আবু আল-আব্বাস আল জানুবীর শেষ ওয়াসিয়্যাতঃ
http://www.archive.org/details/hijackers1
২। আল ‘উমারীর শেষ ওয়াসিয়্যাতঃ
http://www.archive.org/details/wasiyat-shaheed-alumari
৩। সাইদ আল ঘামদীর শেষ ওয়াসিয়্যাতঃ
http://www.archive.org/details/motaz
৪। ‘ইলম হল আমল করার জন্য -১
http://www.archive.org/details/high-hopes1
৫। ‘ইলম হল আমল করার জন্য -২
http://www.archive.org/details/high-hopes
৬। সত্যের শক্তি
http://www.archive.org/details/Power-Truth
৭। শায়খ উসামার পক্ষ থেকে বার্তা এবং আবু মুস’আব ওয়ালীদ আল শিহরীর শেষ ওয়াসিয়্যাত
http://al-boraq.info/showthread.php?t=53835
৮। ২০ জন হাইজ্যাকার ছিল – এই মিথ্যা খন্ডন করে শায়খ উসামার বক্তব্য http://www.youtube.com/watch?v=rGTKBDqnpIM
৯। ইউরোপের প্রতি শায়খ উসামার বার্তা, তিনিই ৯/১১ এর পেছনে ছিলেন এই ঘোষণা http://www.youtube.com/watch?v=zM0VdyhtQKo
১০। ৯/১১ এর অভিযানের পরে জিহাদের ইমামগণের বার্তাঃ শায়খ উসামা বিন লাদিন, ডঃ আইমান আল যাওয়াহিরী, শায়খ আবু হাফস আল মিসরি এবং শায়খ সুলাইমান আল ঘাইত
http://www.archive.org/details/LaDeN7
১১। শায়খ উসামা বিন লাদিনের তোরাবোরা থেকে বক্তব্য [এখানে মূল বক্তব্যের শুধু ঐ অন্সঘ আছে যা আমাদের আলোচনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, এটা দেখা অবশ্য প্রয়োজনীয় ]
http://youtube.com/watch?v=dls5JTD-uG0&fmt=18
১২। ঊম্মাহ-র বর্তমান অবস্থা ১
http://www.archive.org/details/stateoftheummah1
১৩। উম্মাহ-র বর্তমান অবস্থা ২
http://www.archive.org/details/stateoftheummah2
১৪। অ্যামেরিকার নাগরিকদের প্রতি শায়খ উসামা বিন লাদিনের বার্তা [এই শিরোনামের বেশ কিছু ভিডিও আছে, তবে একটি দেখাই আপাতত যথেস্ট হবে]
http://www.archive.org/details/laden_new_29_10_2004
সেপ্টেম্বর ১১ এর ব্যাপারে আস সাহাবের আরো কিছু ভিডিও আছে। কিন্তু আমাদের আলোচনার জন্য একয়টিই যথেস্ট। অধিকাংশ ভিডিওতেই ইংরেজী সাবটাইটেল দেয়া আছে। যদি আপনি এগুলো না দেখে থাকেন তাহলে আস সাহাবের ব্যাপারে জানার জন্য অবশ্যই এগুলো দেখুন।
৯/১১ এর ঘটনার পরপরই কিন্তু আস সাহাব হাইজ্যাকারদের ওয়াসিয়্যাত প্রকাশ করে নি। তাঁরা কৌশলগত কারণে পর্যায়ক্রমে এগুলো প্রকাশ করেছে। ভিডিও গুলো প্রকাশের তারিখের ব্যাপারে আমার ধারণা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ৯/১১ এর আক্রমনের পর প্রতি বছরে একবার বা দু বার করে আস সাহাব হাইজ্যাকারদের ওয়াসিয়্যাত প্রকাশ করছে। যদি আমরা ধরে নেই যে ১৯ জন হাইজ্যাকারের সবারই এরকম একটি করে ওয়াসিয়্যাতের ভিডিও আছে, তাহলে এর অর্থ হল আস সাহাব ইচ্ছাকৃত ভাবে একটি একটি করে ভিডিও প্রকাশ করছে অ্যামেরিকানদের কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেয়ার জন্য। হয়তো কুফফার যেন কোনভাবেই ৯/১১ এর দিনটি ভুলতে না পারে এবং ইসলামের প্রতি তাঁদের ঘৃণা লুকোতে না পারে এজন্য তাঁরা এভাবে একটি একটি করে ভিডিও প্রকাশ করছেন। অথবা তাঁরা এরকম করছেন যাতে রাগের বশবর্তী হয়ে কুফফার ইরাক আক্রমণের মতো কোন ভুল সিন্ধান্ত নিয়ে বসে যা তাদের ক্ষতির কারণ হবে। অথবা তাঁরা হয়তো এজন্য এভাবে প্রকাশ করছেন যাতে তাঁরা মুসলিমীনকে এর মাধ্যমে শহীদদের দৃষ্টান্ত অনুসরণে উদ্ভুদ্ধ করতে পারেন। অথবা হয়তো তাঁরা উম্মাহ যেন ৯/১১ এর শহীদদের মনে রাখে এজন্য দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমান্বয়ে ভিডিও গুলো প্রকাশ করছে। হয়তো উপরের কোনটিই সঠিক না। তবে তাঁরা কোন একটি কৌশলের অংশ হিসেবেই এভাবে ভিডিওগুলো প্রকাশ করছেন। এবং আল্লাহ-র সবচেয়ে ভালো জানেন।
আসুন এখন পরবর্তী পয়েন্টে যাওয়া যাক।
খ) ৯/১১ এর হামলার ব্যাপারে শায়খ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ-র অফিশিয়াল বক্তব্য।
৯/১১ এর পেছনে শায়খ উসামার ভূমিকার ব্যাপারে আস সাহাবের মাধ্যমে বেশ অনেকগুলো প্রমাণই আছে। এরকম একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ হল “ ইউরোপের জনগণের প্রতি বার্তা” শীর্ষক বক্তব্যটিঃ
“…এবং তাঁদের ঘা গুলো শুকানো এবং দুঃখ শেষ হবার আগেই তাঁরা অন্যায়ভাবে তোমাদের সরকারগুলোর আক্রমণের শিকার হল। “এই আক্রমণ হল সেপ্টেম্বর ১১ এর ঘটনার প্রতিউত্তর” – বুশের এই দাবির ব্যাপারে কোন বিশ্লেষণ এবং পর্যালোচনা ছাড়াই তোমাদের সরকারগুলো আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তোমাদের সরকারগুলো আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। ৯/১১ এর ঘটনাগুলো ছিল ফিলিস্তিন ও লেবাননে মুসলিমদেরউপর চালানো ইস্রাইলী-অ্যামেরিকান জোটের হত্যাযজ্ঞের প্রতিশোধ।
৯/১১ এর ঘটনাসমূহ আমার নির্দেশে সংঘটিত হয়েছিল। এবং আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, সরকার বা নাগরিক, কোন আফগানের এই ঘটনার ব্যাপারে কোন পূর্বধারণা ছিল না। এবং অ্যামেরিকা এই কথার সত্যতা সম্পর্কে অবগত আছে। তালিবানদের কিছু মন্ত্রী তাদের কাছে বন্দী হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় অ্যামেরিকানদের কাছে পরিষ্কার হয় যে তালিবান এবং আফগানরা ৯/১১ এর পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত ছিল না। এজন্যই তালিবান সরকার অ্যামেরিকার আফগানিস্তান আক্রমণ করার আগে তাদের কাছে ৯/১১ এর ব্যাপারে প্রমাণ চেয়েছিল। কিন্তু অ্যামেরিকা কোন প্রমান উপস্থাপন করে নি এবং তারা আক্রমণ করতে অধিকতর আগ্রহী ছিল। আর ইউরোপ অ্যামেরিকার পদচিহ্ন অনুসরণ করলো এবং অ্যামেরিকার অনুচর হওয়া ছাড়া ইউরোপের আর কোন উপায় ছিল না।“
৯/১১ এর ব্যাপারে অন্যান্য যেসব ভিডিও-র লিঙ্ক আমি ইতিমধ্যে দিয়েছি সেগুলোতেও বারবার এই একই দাবি করা হয়েছে।
যেহেতু আস-সাহাব মিডিইয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমানিত হয়েছে সুতরাং এটাও প্রমানিত হয় যে আস সাহাব মিডিয়ার বক্তব্য নিয়েই সন্দিহান হবার অবকাশ নেই। সুতরাং এর মাধ্যমে প্রনাইত হয় ৯/১১ এর আক্রমণের জন্য আল কা’য়িদাই দায়ী ছিল। শুধু মাত্র আমার বিশ্বাস করতে কস্ট হচ্ছে এই কারণে আমি আস সাহাবের এই বক্তব্য অস্বীকার করতে পারি না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি এই বক্তব্য মিথ্যা হবার ব্যাপারে নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট প্রমাণ পাচ্ছি। যদি আমার কোণ বিষয় নিয়ে খটকা লাগে, সন্দেহ জাগে (যেমন টুইন টাওয়ারে বোমা বিস্ফোরণ, পেন্টাগনে কোন প্লেন হামলা না হওয়া; যেগুলো নিয়ে আমি ইনশা আল্লাহ পরবর্তীতে আলোচনা করবো) তবে আমি সাবরের সাথে এই ব্যাপারগুলো আমার কাছে স্পস্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এবং আমি আমার মুসলিম ভাইদের জন্য অজুহাত তৈরি করবো এবং সব সম্ভাব্য ব্যাখ্যার ব্যাপারে গভীর ভাবে চিন্তা করবো। আমি আশা করি আমার অন্যান্য মুসলিম ভাইরাও এই ভাবেই চিন্তা করবেন।
অনেকে বলেন, শায়খ উসামা রাহিমাহুল্লাহ তো প্রথমে ৯/১১ এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন। যারা এরকম বলেন আমি তাদের আহবান করবো প্রমাণ উপস্থাপন করার জন্য। এই বিষয়টি নানা লোকে নানা কথা বলেছে তাই সন্দেহ নিরসনের সবচেয়ে ভালো উপায় হল, প্রমাণ উপস্থাপন করা। যার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারবো শায়খ উসামা আসলে কি বলেছিলেন আর কি বলেননি। তখন উত্তর আসেঃ “ শায়খ উসামা তোরাবোরার বক্তব্যে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন।“ কিন্তু কেউ যদি তোরাবোরার বক্তব্যটি দেখেন তাহলে এমন কিছু পাবেন না যেখানে শায়খ উসামা ৯/১১ এর হামলার সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এমনকি তিনি ৯/১১ হামলার হাইজ্যাকারদের গভিরভাবে প্রশংসা করেছেন। যদি তিনি এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত না- ই হন তাহলে প্রশংসা করলেন কেন?
কিন্তু যদি তর্কের খাতিরে আমরা ধরেও নেই যে তিনি প্রথমে ৯/১১ এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন, তবে এরকম করার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।
১। সামরিক কৌশলঃ হতে পারে আক্রমণ করার আগে আমেরিকা যেন তাদের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করে এজন্য তাঁর গৃহীত সামরিক কৌশলের অংশ হিসেবে তিনি অস্বীকার করেছিলেন। অবশ্য আমেরিকা কোন বিবেচনার ও প্রমানের ধার ধারে নি এবং আক্রমণ করেছে। যা তাদের ইসলামের প্রতি অন্তর্নিহিত ঘৃণারই বহিঃপ্রকাশ। এবং এই সুযোগ গ্রহন করে শায়খ উসামা সঠিক ভাবেই দাবি করেছিলেন যিনি ৯/১১ এর ঘটনা কোণ কাফির রাষ্ট্রের অধিবাসী কোন কাফির ব্যক্তি ঘটাতো, তবে সেই দেশের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আগে যথোপযুক্ত সতরকতা গ্রহণ করতো এবং সাক্ষ্য প্রমানের অপেক্ষা করতো। তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে সেই কাফির দেশের সাথে মিলেমিশে এই সমস্যার সমাধান করার সর্বোচ্চ চেস্টা চালাতো। এবং যদি সেই কাফির রাস্ট্রের কাছে কাফির ব্যক্তির অপরাধী হবার পক্ষে সাক্ষী-প্রমান পেশ করে, সেই লোকের অপরাধ প্রমাণ করে তাকে বিচারের জন্য অ্যামেরিকা নিয়ে যেতো।
কিন্তু যেহেতু অ্যামেরিকার নেতারা ইসলাম ও মুসলিমদের ঘৃণা করে তি তারা নিজেদের এই নিয়মগুলো নিজেরাই মানা প্রয়োজন মনে করে নি। তালিবান অ্যামেরিকানদের অ্যামেরিকাকে বলেছিল শায়খ উসামা-র বিরুদ্ধে প্রমাণ উপস্থাপন করতে। কিন্তু অ্যামেরিকা কোন কিছুতে কান না দিয়ে ঔদ্ধত্যের সাথে তাদের আক্রমণের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রাখে। এই সিদ্ধান্তের মূল্য আজকে অ্যামেরিকাকে দিতে হচ্ছে। তারা এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আক্রমণের সামনে নিজেদের উন্মুক্ত করে ফেলেছে।
এটা ছাড়াও অন্য কোন সামরিক কৌশলের অংশ হিসেবে শায়খ উসামা ৯/১১ এর সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে থাকতে পারেন।
২। হয়তোবা শায়খ উসামা বোঝাতে চাচ্ছিলেন তিনি নিজে শারীরিক ভাবে এই হামলা সাথে জড়িত ছিলেন না। যদি তিনি ৯/১১ এ জড়িত থাকার কথা থাকা অস্বীকার করে আদৌ কোণ বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাহলে হয়তো তিনি সেই বক্তব্যে এটাই বোঝাতে চাচ্ছিলেন। কুফফার নিজেরাও দাবি করে ৯/১১ এর হামলার আমীর ছিলেন শায়খ খালিদ শেইখ মুহাম্মাদ ফাকাল্লাহু আসরাহ। এবং এই দাবির পেছনে সম্ভবত কিছু সত্যতা আছে, কারণ আস সাহাব এই ব্যাপারে নিরবতা অবলম্বন করছে। আমি কিন্তু বলছি না ৯/১১ এর পেছনে শায়খ উসামার হাত ছিল না, বরং বযাপারটা এরকম যে শায়খ উসামা ছিলেন মূল আমীর যার নির্দেশনায় অন্যান্য মুজাহেদীন স্বশরীরে এই হামলার পরিকল্পনা করেছে এবং অংশ নিয়েছে।
তবে আমি এই ব্যাপারে নিশ্চিত যে শায়খ উসামা ৯/১১ এর হামলার পেছনে ছিলেন। তিনি সুপস্টভাবে বেশ কয়েক জায়গায় এই দাবি করেছেন। এবং কয়েকটি বক্তব্য তিনি ৯/১১ হামলাকারীদের তাকওয়া, এবং গুণ নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন। আর যদি আসলেই এমন কোণ বক্তব্য থেকে থাকে যেখানে শায়খ উসামা ৯/১১ এর সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে থাকেন, তাহলে এই হাদিসটির কথা স্মরণ করুনঃ
“যুদ্ধ হল ধোঁকা।“ আমরা জানি যে আস সাহাব বিশ্বাসযোগ্য, আমরা তাদের রিলিযগুলোকে নির্ভরযোগ্য মনে করি এবং আমরা এটাও জানি তারা একটা সামরিক দল যাদের মিডিয়া রিলিযগুলোর সাথে সামরিক কৌশল জড়িত থাকে।
পরবর্তী পয়েন্টে যাওয়া যাক।
গ)টুইন টাওয়ারে বোমা বিস্ফোরণ এবং পেন্টাগনে কোন প্লেন আঘাত না হানা সম্পর্কিত ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর জবাব
এই তত্ত্বের ব্যাপারে লোকেদের বক্তব্য হলঃ
“ শায়খ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুলাহ না বরং অ্যামেরিকা ৯/১১ এর হামলার জন্য দায়ী এই তত্ত্বের প্রমাণ হল, টূইন টাওয়ারে বোমা রাখা ছিল। সেগুলো বিস্ফোরিত হয়েছিল এবং টাওয়ারগুলো ধ্বসে পড়ার পেছনে এই বোমাগুলোর ভূমিকা ছিল। এছাড়া টাওয়ার গুলো এমনভাবে ধ্বসে পরে ছিল যা থেকে মনে হয় এগুলোকে নিয়ন্ত্রিতভাবে নিচ থেকে ধসিয়ে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া কেউ যদি ৯/১১ এর হামলার পর পেন্টাগনের কোন ছবি দেখে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় কোন প্লেন সেইদিন পেন্টাগনে আঘাত হানে নি, কারণ ছবিতে কোন প্লেনের ধ্বংসাবশেষ দেখা যাচ্ছে না। এবং পেন্টাগন বিল্ডিং এর দেয়াল দেখে কোণ ভাবেই মনে হয় না দুটো পাখা সেখানে আঘাত হেনেছে। বরং শুধু মাঝ বরাবর একটা বড় গর্ত ছবিতে দেখতে পাওয়া যায়।“
এক্ষেত্রে আমাদের উত্তর আমাদের আগের উত্তরের মতোই হবে। এটা সামরিক কৌশলের সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়। এটা ছিল অন্যান্য এবং অভূতপূর্ব এক হামলা যার পেছনে ছিল ইউনিক একটি সামরিক পরিকল্পনা। বিভিন্ন সামরিক কৌশল ৯/১১ এর হামলাগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। তবে এই আলোচনায় যাবার আগে আল কা’য়িদার সামরিক সক্ষমতা নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার।
অনেকেই আল কা’য়িদা সম্পর্কে বলেছেন যে এটা হল একটা সামরিক প্রতিষ্ঠান যা অনেকটা হার্ভার্ডের মতো। সবাই এটাতে ঢুকতে চায় কিন্তু হাতেগোণা কয়েকজনই সফল হয়। আমি বলছি না যে উম্মাতের সব লোক আল কা’য়িদায় যোগ দিতে চায়। বরং আমি বলছি তাদের প্রতিষ্ঠান এবং কার্যক্রম অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং সুক্ষ ধাঁচের। আল কায়িদা নিছক চপ্পল-পাগড়ী পড়া, কালাশনিকভ ধারী একদল মুসলিম না যারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ করে বেড়ায়। বরং তাদের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন অভিজ্ঞ সামরিক জেনারেল, যোদ্ধা, অস্ত্র তৈরিকারক এবং বিক্রেতা, আইটি স্পেশালিস্ট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী এবং আরো অনেকে। এবং এই ব্যক্তিরা তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রথম সারির বিশেষজ্ঞ।এই সব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা আল কায়িদার সাথে জড়িত। ঠিক যেমন হার্ভার্ডের সাথে জড়িত বিভিন্ন শিক্ষাগত বিষয়ের প্রথম সারির বিশেষজ্ঞরা।অবশ্য তাঁদের সাথে এরকম অনেকেই যোগ দেন যারা সামরিক দিক দিয়ে অনভিজ্ঞ, কিন্তু সাধারণ মুসলিমরা যেরকম ধারনা করেন সংগঠন হিসেবে আল কায়িদা এবং তাঁদের কার্যক্রম তার চাইতে অনেক বেশী সুক্ষ এবং জটিল। এই ধারণার পেছনে ভিত্তি হিসেবে প্রমানগুলো হলঃ
১। শায়খ উসামার চরঃ শায়খ উসামার একজন গুপ্তচর সিআইএর ভেতর অনুপ্রবেশ করতে এবং বিশ বছর সেখানে কাঁটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই চরের নাম আলি মুহাম্মাদ। উনি কোন পর্যায়ের সামরিক প্রতিভা ছিলেন এটা উনাকে নিয়ে একটু অনালাইনে খোঁজাখুঁজি করলেই বুঝতে পারবেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে শায়খ উসামার হয়ে সিআইএ-র উপর গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন। সুতরাং কি পরিমাণ গোপনীয় তথ্য তার মাধ্যমে আল কা’য়িদা পেরছে সেটা বোধগম্য। আলি মুহাম্মাদ সম্ভবত ৯/১১ এর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন না, কিন্তু তাঁর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯/১১ এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল, বা পরিকল্পনায় তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহৃত হয়েছিল, এরকম সম্ভাবনা আছে। কারণ ৯/১১ এর মতো এতো বিশাল, জটিল এবং পরিকল্পিত হামলার জন্য কিছু গোপন বিষয় জানা দরকার ছিল,বিশেষ করে পেন্টাগনে হামলার ব্যাপারে।
একবার চিন্তা করুন, খোদ সিআইএর ভেতর থেকে যদি শায়খ উসামার গুপ্তচর এতোদিন ধরে আল কা’য়িদার কাছে তথ্য পাচার করে থাকে তাহলে কে জানে তাঁর এরকম আর কতো চর, কোন কোন জায়গায় বসে আছে। আলি মুহাম্মাদ এর ঘটনা থেকে এটা বোঝা যায় যে আল কা’য়িদা কোন জায়গায় এমনভাবে উপস্থিত থেকে কাজ চালাইয়ে যেতে পারে যাতে মনে হয়ে তারা অদৃশ্য। এবং যেহেতু তাঁদের কাজের ধরণ অত্যন্ত সুক্ষ সুতরাং কিভাবে তারা তথ্য যোগাড় করলেন এবং আক্রমণ চালালেন এটার হাজারো সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে। যেমন ৯/১১ এর আগে পেন্টাগন নিশ্চিত ছিল যে চীন কম্পিউটার ডাটাবেস হ্যাক করার চেস্টা করেছিল। কিন্তু এমনো তো হতে পারে এরা ছিলেন চীন সরকারের হয়ে কাজ করা “অদৃশ্য মুজাহেদীন” যারা প্রকৃত পক্ষে শায়খ উসামার চর এবং তাঁরাই এই হামলা চালিয়েছিলেন। হয়তো বা আসলে তা না। আসলে হয়তো চীন-ই হামলা চালিয়েছিল, কিন্তু এখানে বিবেচ্য বিষয় এরকম হবার সম্ভাবনা থেকে যায়, যেহেতু আল কা’য়িদা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে তাঁরা তাঁদের উপস্থিতি গোপন করে বিভিন্ন দেশের সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভেতরেও অনুপ্রবেশ করতে পারে।
২। ৯/১১ ছাড়াও আল কায়িদা বেশ কিছু বোর মাপের বোমা হামলার সাথে যুক্ত ছিল। যেমন, রিয়াদ হামলা, আফ্রিকাতে অ্যামেরিকান এম্বেসিতে হামলা, ইরাকে জাতিসংঘের গোপন মিটিংএ হামলা, জর্ডানে ইস্রাইলী যায়নবাদীদের গোপন মিটিংয়ে হামলা (শেষ দুটি আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আবু মুস’আব এক যারকাওয়ী)। এরকম আরও অনেক হামলার নজীর আছে যা প্রমাণ করে আল কা’য়িদা কোন সাধারণ সামরিক সংগঠন না। তাঁরা প্রশিক্ষিত,সংঘবদ্ধ এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের শত্রুদের চাইতে দুই কদম এগিয়ে থাকেন (যেটা অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক ও সাংবাদিক বলেছেন)।
তাঁদের এরকম বড় মাপের আক্রমণ সফল ভাবে চালানোর সক্ষমতা থেকে বোঝা যায়, আমরা এমন একটি বাহিনীর কথা বলছি যেটার মধ্যে আছে বিজ্ঞানী, সামরিক কৌশলবিদ ও জেনারেল, বোমা বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি স্পেশালিস্ট, অস্ত্র প্রশিক্ষক, মিডিয়া স্পেশালিস্ট সহ আরো অনেকে। এছাড়াও তাঁদের এমন অনেক সেনা রয়েছে যারা “অদৃশ্য”, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ পায় না কিন্তু কাজ চলতে থাকে। আল কা’য়িদা নিজেকে গোপন করে রাখে এবং শুধু তখনই আপনি তাঁদের দেখতে পাবেন যখন তাঁরা চায় আপনি তাঁদের দেখুন, যেমন আফগানিস্তানে কাফিরদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধের সময়। সুতরাং আমরা এমন একটা সংগঠনের কথা বলছি যাদের রয়েছে এমন সব সদস্য যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, এবং এই সংগঠন এমন ভাবে কাজ করে যাত মনে হয়ে তাঁরা পালকের চেয়েও হালকা, মাছির চাইতেও দ্রুতগামী, দমকা বাতাসের মতো শক্তিশালী এবং এবং বাজপাখির মতো সতর্ক এবং সুযোগসন্ধানী।তাঁদের কোণ নির্দিষ্ট জাতীয়তা, বরং কিম্বা পোশাক নেই, বরং তাঁরা পৃথিবীর সকল কোণা থেকে একই আদর্শে ঐক্যবদ্ধ।এবং বাহ্যত তাঁদের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে আফগানিস্তান থেকে ইরাক, বসনিয়া, চেচনিয়া, ফিলিস্তীন, সাউদী আরব, আলজেরিয়া, সোমালিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিস্ন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, উযবেকিস্তান, তাযিকস্তান, তুরস্ক, মালদ্বীপ, ইরিত্রিয়া, চীন, মিশর, ওমান, সুদান, নাইজেরিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, মরক্কো, ইরান, চাদ, অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা, অ্যামেরিকা, জার্মানি এবং ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে*।
[*এই দেশগুলোর নাম উল্লেখ করা হল কারণ এসব জায়গায় আল কা’য়িদার উপস্থিতির শক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে তাঁদের নিজস্ব মিডিয়া থেকে, তাঁদের সমর্থক মিডিয়া থেকে, অন্যান্য মুজাহেদীনের মিডিয়ার মাধ্যমে এবং কাফিরদের মিডিয়ার মাধ্যমেও]
আপনি যদি “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে”-এ অংশগ্রহণকারী একজন কাফির সেনা হন, তাহলে একবার চিন্তা করুন আপনি কি রকম একটি দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। এটা হল এমন একটি দল যেটা এতোটা বিস্তৃত এবং প্রশিক্ষিত কিন্তু একই সাথে অদৃশ্য, এটা প্রচন্ড আঘাত হানতে পারে এবং কারো কাছে সশরীরে না গিয়েই নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে পারে।তাহলে চিন্তা করুন আপনার “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে” যুদ্ধ কতোটা অর্থহীন। কিভাবে এরকম একটি দলকে আপনি হারাবেন?যদি একইসাথে সবগুলো দেশের আকাশে স্পাই স্যাটেলাইট মোতায়েন করা হয় তাও এই আর্মিকে আপনি পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবেন না।
আল কা’য়িদার দৃশ্যের আড়ালে, দৃষ্টির অগোচরে থাকার এই নীতির একমাত্র কুফল হল, যারা খুব সহজে পশ্চিমা প্রপাগ্যান্ডা বা ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কারণে বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন, তাঁদের জন্য এই নীতি একটা সমস্যা সৃষ্টি করে। তাঁরা ভাবেন আল কা’য়িদা হল একদল অপরাধী যারা অ্যামেরিকাকে ঘৃণা করে অ্যামেরিকার ব্যক্তি স্বাধীনতার আদর্শের জন্য। অথবা তারা মনে করেন আল কা’য়িদা সিআইএ-র সৃষ্টি। কিন্তু যারা বেসিক যুদ্ধ কৌশল নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন তাঁদের জন্য এটা কোন সমস্যা না।
এখানে উল্লেখ্য, ৯/১১ এর হামলা কিভাবে সংঘটিত হয়েছিল এ ব্যাপারে কোন ডিটেল আস সাহাব কখনোই প্রকাশ করে নি। তাঁরা কিছু সফল যুদ্ধ কৌশল সম্পর্কে সাধারনভাবে কিছু মন্তব্য করেছেন*। এবং এর মধ্যে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁরা যদি খুঁটিনাটি সব তথ্য প্রকাশ করে দিতেন তবে পরবর্তীতে এই কৌশলগুলোর কোনটি তাঁরা আর ব্যবহার করতে পারতেন না। এবং আল কা’য়িদার ব্যাপারে সবচেয়ে ভীতিকর বিষয় হল তাঁরা বারবার বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে তাঁরা বড় মাপের সফল হামলা চালাতে সক্ষম। সবাই জানে আল কায়িদা আফ্রিকাতে অ্যামেরিকান এম্বেসিতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছিল, কিন্তু আস সাহাব কখনোই এগুলো নিয়ে কোন ডিটেলস প্রকাশ করে নি।
[* “ইলম হল আমলের জন্য”/Knowledge is for acting upon নামক ভিডিওতে কিছু সাধারণ কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে]
যেহেতু আমরা সংগঠন হিসেবে আল কা’য়িদার বিশ্বব্যপী প্রভাব ও সক্ষমতা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছি তাই এখন চলুন দেখা যাক, ৯/১১ এর হামলা সফলভাবে সংঘটিত করার জন্য তাঁরা কি কি সামরিক কৌশল ব্যবহার করে থাকতে পারে। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বেরও জবাবও দেব।
টুইন টাওয়ারের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে সেটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে, এই প্রশ্নের অসংখ্য উত্তর হতে পারে। একটি সুসংঘটিত, প্রশিক্ষিত এবং যোগ্যতা সম্পন্ন বাহিনী যা গোপনীয়তার সাথে অপারেশান চালাতে পারদর্শী, এরকম একটি ক্ষেত্রে কি করে থাকতে পারে আমরা শুধু সেইরকম কিছু সম্ভাবনা এখানে আলোচনা করছি। সুতরাং যদি টুইন টাওয়ারে বম্ব থাকার কথা বলেন, তাহলে এমন হতে পারে যে এই আন্দোলনের সাথে জড়িত ইঞ্জিনিয়াররা, যারা অনেক বার এই কম্পাউন্ড দুটি পরিদর্শন করেছিলেন তাঁরা টাওয়ার দুটি ধ্বসে পরার ব্যাপারে পরিকল্পনা করেছিলেন। এমনো হতে পারে যে তাঁরা হয়তো এই টাওয়ার গুলোতেই চাকরি করতেন। ধরা যাক, আল কা’য়িদার এক বা একাধিক গোপন সদস্য ৫-১০ বছর ধরে টুইন টাওয়ারের কোন একটিতে চাকরি করছিলো। এসময়ে নিশ্চয় তাঁরা এই টাওয়ার দুটির শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো বের করেছিলেন। এবং কোথায় কোথায় বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখলে টাওয়ারে কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মী, কর্মচারী, পরিদর্শকদের কাছ সেগুলো খুঁজে পাবে না। হয়তো বা এভাবে গোপনীয়তার সাথে স্ট্র্যাটেজিক অবস্থানে বিস্ফোরক বসাতে তাঁদের কয়েক বছর সময় লেগেছিল। কিন্তু যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু টাওয়ারগুলোর ধ্বসে পড়া সহজেই ব্যাখ্যা করা সম্ভব। একটি কৌতূহলউদ্দীপক ব্যাপার হল অ্যামেরিকান সরকার টাওয়ারগুলো ধ্বসে পড়া নিয়ে নীরবতা অবলম্বন করেছে। এরকম করার বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ আছেঃ –
ক) এরকম বিশাল নিরাপত্তা বিচ্যুতি হয়েছে , তারা এটা স্বীকার করতে চায় না। যদি অ্যামেরিকা স্বীকার করে তাঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এতো বড় ফুটো আছে তাহলে অ্যামেরিকার একজন নাগরিকও তাঁদের অফিসে কিম্বা ঘরে নিরাপদ বোধ করবে না, যতোই হাইটেক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসানো হোক না কেন। কারণ টুইন টাওয়ারে হাইটেক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না এটা মনে করা পাগলামি। টুইন টাওয়ারে সম্ভবত সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। মাত্র কয়েক জন লোক মিলে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে ফেলা অ্যামেরিকার সরকারর জন্য অনেক বড় লজ্জার কারণ, এবং এটা স্বীকার করা তাদের জন্য কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিতে দেয়ার মতো। তাই অ্যামেরিকার সরকার হয়তো নৈরাজ্য, আতঙ্ক ও অশান্তি এড়ানোর জন্য এই ব্যপারে নীরবতা অবলম্বন করছে।
খ) হয়তোবা টুইন টাওয়ার গুলো বানানোর সময়ই কোন ইমারজেন্সীর কথা চিন্তা করে কিছু বিস্ফোরক টাওয়ারদ্বয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার অবস্থা দেখে আর এটা প্রকাশ করে নি।
এগুলো হল অ্যামেরিকান সরকার কেন এ বিষয়ে চুপ ছিল, তাঁর কিছু ব্যাখ্যা। আল্লাহ-ই ভালো জানেন। কিন্তু অ্যামেরিকান সরকারের নীরবতা কোন ভাবেই আল কা’য়িদার ৯/১১ এর সাথে জড়িত না থাকার প্রমাণ না। কিম্বা অ্যামেরিকার নীরবতা এটাও প্রমাণ কজকরে না যে তারা নিজেরাই এই হামলা জন্য দায়ী। আস সাহাব মিডিয়ার নির্ভেজাল হওয়া এবং বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করার পরও এরকম কোন কিছু উত্থাপন করা পাগলামির নামান্তর।
পেন্টাগনে প্লেন আঘাত হানার ব্যাপারে কেউ কেউ বলেনঃ যেহেতু এটা পরিষ্কার কোন প্লেন পেন্টাগন ভবনে আঘাত হানে নি, তাই এটাই প্রমাণ করে যে ৯/১১ ছিল একটি ইনসাইড জব।*“
[*অর্থাৎ অ্যামেরিকাই ৯/১১ এর জন্য দায়ী]
এই ব্যাপারে কিছু সম্ভাবনা আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরছিঃ
ক) আস-সাহাব দাবি করেছে পেন্টাগনে আল কা’য়িদা হামলা করেছে। কিন্তু তারা কখনোই দাবি করে নি পেন্টাগনের হামলা প্লেনের মাধ্যমে করা হয়েছে।
খ) হয়তো বা কোন প্লেন আঘাত হেনেছিল কিন্তু প্লেনের ধ্বংসাবশেষগুলো সম্পূর্ণ ভাবে পুড়ে গলে গিয়েছিল (disintegration) যেকারনে কোন ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় নি। অথবা হয়তো প্লেনটা ছিল ছোট আকারের কোন এয়ার লাইনার বা জেট – যেমনটা কিছু কিছু প্রত্যক্ষ বলেছেন। [হাইপারলিঙ্ক]
গ) হয়তো বা আল কা’য়িদা সেখানে কোন বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল অথবা কোন ইশ্তিশাদী হামলা চালানো হয়েছিল। কিম্বা হয়তো তাঁদের কোন সদস্য পেন্টাগনে কয়েক বছর পরিচ্ছন্নতা কর্মী বা এরকম পদে চাকরি করেছিল, যার সুবাদে তাঁরা এরকম একটি হামলা চালানোর জন্য কি কি সরঞ্জাম এবং কি রকম সময় লাগতে পারে তা জানতে পেরেছিল।
কিন্তু আমার মতে এই সম্ভাবনাগুলো নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করা কঠিন, কারণ অ্যামেরিকান সরকারের এ বিষয়ে অফিশিয়াল বক্তব্য হল, একটি প্লেন পেন্টাগনে আঘাত হেনেছিল। এ বিষয়টা নিয়ে কেন তারা মিথ্যাচার করবে তা বোধগম্য না। যদি না পেন্টাগনের ক্ষেত্রেও তাঁদের আল কা’য়িদা কোন ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে অনুপ্রবেশে সক্ষম হয়। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে তা অ্যামেরিকার জন্য মারাত্মক লজ্জার বিষয় এবং তাদের চুপই থাকার কথা। একবার ভাবুন যদি তারা তাদের জনগণকে বলে – “কিছু মুসলিম কয়েক বছর পেন্টাগনে চাকরি করেছিল, তাঁরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে অনুপ্রবেশ করে, পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল।“ অ্যামেরিকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাহলে হাসির খোরাকে পরিণত হবে। আর অ্যামেরিকানরা প্রতিবার তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আর অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করেই কুঁকড়ে যাবে, কিভাবে কিছু “ছন্নছাড়া”, “উটের চালক” তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে ফেললো! চিন্তা করুন শুধু নিদের জনগণের সামনেই না, পুরো বিশ্বের সামনে তারা কি রকম অপমানিত হবে। কিছু মুসলিম পৃথিবীর সবচাইতে শক্তিশালী সামরিক শক্তিকে শুইয়ে ফেলেছে!
সম্ভবত এজন্যি শায়খ উসামা বাবার বলেছেন শুধুমাত্র “১৯ জন যুবক মিলে অ্যামেরিকাকে – পৃথিবীর সবচাইতে ভীতিপ্রদ সামরিক শক্তি – অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে মাটিতে হাঁটু গাড়তে বাধ্য করছে। “ চিন্তা করুন আমাদের এই অ্যানালাইসিস যদি ঠিক হয়ে থাকে তাহলে চিন্তা করুন ব্যাপারটা অ্যামেরিকার জন্য কিরকম লজ্জার?
আল কা’য়িদার সক্ষমতা এবং ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে আমরা এই সম্ভাবনা গুলোর কথা বলছি।
পরবর্তী পয়েন্টঃ
ঘ) পেন্টাগনে হামলার পর এফবিআই কতৃক ঐ এলাকার হোটেল-গ্যাস স্টেশান থেকে ভিডিও ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে আলোচনা
আমরা পূর্ববর্তী পয়েন্টের আলোচনায় পেন্টাগনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে অনুপ্রবেশের যে সম্ভাবনা আলোচনা করেছি হয়তো সেটার কারণে ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। যদি এই টেপগুলো বাজেয়াপ্ত করা না হতো তাহলে পুরো পৃথিবী এই ব্যাপারে জেনে যেতো।
পরবর্তী পয়েন্টঃ
ঙ)টুইন টাওয়ারে হামলা হয়েছে দেখার পর কিছু ইহুদির উল্লাস করা নিয়ে আলোচনা
কয়েক বছর আগে ইন্টারনেটে টুইন টাওয়ারে হামলা চলাকালীন সময়ে ভ্যানের উপর ডারিয়ে কিছু ইস্রাইলীর উল্লাস করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমত আমাদের মনে রাখা উচিত এই ভিডিও এটা প্রমাণ করার জন্য যথেস্ট না, যে ইস্রাইল ৯/১১ এর জন্য দায়ী ছিল। এমন হতে পারে যে আল কা’য়িদার ইস্রাইল কে হুমকি দিয়েছিল* যদি তাঁরা ফিলিস্তীনে তাদের অত্যাচার বন্ধ না করে তাহলে নিউইয়র্কে তাদের প্রভুদের আক্রমণ করা হবে। আবারো এমনো হতে পারে ইস্রাইল চাচ্ছিলো এরকম কিছু ঘটুক এবং এর জন্য অপেক্ষা করছিল, কারণ তাঁরা ভেবেছিল এই ঘটনার পর তাদের পরতি বিশ্বের জনগণের এবং বিশেষ করে অ্যামেরিকান জনগণের সহানুভূতি বৃদ্ধি পাবে। টুইন টাওয়ারে বেশ ইস্রাইলী কোম্পানী থাকা সত্ত্বেও হামলার দিন কোন ইহুদী কেন কাজে আসে নি তার ব্যাখ্যা এটা হতে পারে। আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভালো জানেন।
[* ইস্রাইলের ৯ম প্রেসিডেন্ট বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু একবার এটা দাবিও করেছিল ৯/১১ হামলার আগে তাঁকে এই ব্যাপারে জানানো হয়েছিল]
আমরা অনেকেই এটা বিশ্বাস করতে চাই যে ইস্রাইল ৯/১১ এর পেছনে ছিল। কিন্তু ইস্রাইলের প্রতি আমাদের ঘৃণা প্রমাণ হিসেবে যথেস্ট না।
চ)৯/১১ এর আক্রমনের আগে অ্যামেরিকা যে ওয়ার্নিং পেয়েছিল সেই সম্পর্কে আলোচনা।
পূর্ববর্তী পয়েন্টে হামলা আগে ইস্রাইলকে হুমকি দেয়া সম্পর্কে আমরা যা আলোচনা করেছি তা এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ছ)৯/১১ এর আগে অ্যামেরিকা মুল্লাহ উমার রাহিমাহুল্লাহ-কে যে চিঠি পাঠিয়েছিল, সেটা নিয়ে আলোচনা।
অ্যাডাম ইয়াহিয়া গাদান (আযযাম আল আম্রিকি) রাহিমাহুল্লাহ আস সাহাবের একটি রিলিযে, মুল্লাহ উমার রাহিমাহুল্লাহ কে অ্যামেরিকা বিভিন্ন সময়ে যেসব হুমকি পাঠিয়েছিল সেগুলোর ব্যপারে আলোকপাত করেছেন। । অ্যাডাম বলেছিলেন এসব চিঠির জবাব ছিল ৯/১১। অবশ্য ৯/১১ এর হামলা চালানোর পেছনে মূল কারণ ছিল উম্মাহ-র উপর চালানো আম্রিকা ও ইস্রাইলের অত্যাচার এর প্রতিশোধ নেয়া- যা শায়খ উসামা বিভিন্ন বক্তব্যে বলেছেন।
৯/১১ নিয়ে আরও কিছু ছোট ছোট ইস্যু আছে যেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় নি। কিন্তু আমরা আশা রাখি এই লেখার মাধ্যমে আমরা অন্তত এইটুক সাব্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছি যে কোন সক্ষম ও চৌকস মুসলিম বাহিনীর সমর্থনে যদি আমরা চাই তাহলে চিন্তাশীলতার মাধ্যমে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা খুঁজে বের করা সম্ভব। এই কথার অর্থ হচ্ছে আমরা যদি চাই তাহলে মুসলিমদের উপর সন্দেহের বা অপবাদের বোঝা না চাপিয়ে আমরা ঘটনার বিভিন্ন সম্ভাব্য ব্যাখ্যার কথা বিবেচনা করতে পারি। প্রমাণ ছাড়া অপবাদ দেয়ার চাইতে এটা উত্তম।
আমরা প্রমাণ করেছি আস সাহাব একটি নির্ভেজাল, বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য জিহাদী মিডিয়া। আমি আমার সাধ্যমত চেস্টা করেছি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও যুক্তির জবাব দিতে। আমি আমার সাধ্যমত চেস্টা করেছি ৯/১১ যে একটি ইনসাইড জব এই গল্পের অসাড়তা প্রমাণ করতে। আমি আশা করি কেউ এই লেখা পড়ে মনে করবেন না আমি কাফির তাওয়াগিতের সমর্থনে এই লেখা লিখেছি। এরকম ঘৃণ্য কাজ আমি কখনোই করবো না। কেউ হয়তো ভাবতে পারেন যেহেতু আমি অ্যামেরিকান সরকারের বক্তব্যই পুনঃব্যক্ত করছি যে আল কা’য়িদা এবং শায়খ উসামা ৯/১১ এর হামলা করেছিলেন এর অর্থ হয়তো এই যে আমি তাগুত অ্যামেরিকাকে রক্ষা করছি।কিন্তু কোনক্রমেই আমি তাগুতকে সমর্থন কিম্বা সাহায্য করছি না। আমি একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে এই লেখা লিখেছি, যে কিনা দীর্ঘদিন ধরে কাফির ও মুসলিমদের কাছ থেকে আস সাহাব মিডিয়াকে নিয়ে ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শুনে আসছে।যদি কেউ আস সাহাব মিডিয়ার সব ভিডিও দেখেন – এবং তাঁদের শত শত ভিডিও আছে – তবে তাঁর কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে আস সাহাব মিডিয়া সাধ্যমত এই চেস্টাই করছে যেন মুসলিমদের চিন্তা ও চেতনায় জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র প্রতি ভালবাসার সৃষ্টি হয়। এবং এই কাজ একটি সুন্নাহ যার মাধ্যমে কুফফার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মুসলিমরা লাভবান হন। এবং আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
ওয়া আখিরু দা’ওয়ানা আনিল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
—
‘৯/১১ কি সাজানো নাটক? -শহিদ শায়খ সামির খান রাহিমাহুল্লাহ’নামক রিসালা থেকে সংগৃহীত।
একটা প্রশ্ন ঃ
৯/১১ বলা হয় কেন ২০০১/১১ না হয়ে??
উত্তরটা দিয়ে উপকৃত করবেন
৯/১১ সংখ্যাটি মাস ও তারিখের সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ, (ইংরেজি) নবম মাসের এগারো তারিখের ঐতিহাসিক ঘটনা। বিশেষ কোন ঘটনার দিন-তারিখ সহজে মনে রাখার জন্যই এটা করা হয়। যেমন ফখরুদ্দীন সরকারের সূচনা জানুয়ারির এগারো তারিখে হওয়ায় দিনটিকে ১/১১ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কারন সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখে হয়ছিল। এইজন্য তারিখ হয় ৯/১১ এবং এটা বেশী শ্রুতিমধুর শোনায়
ঠিক
লিংকগুলোর অধিকাংশই তো কাজ করছে না।
যেমন:
১। আবু আল-আব্বাস আল জানুবীর শেষ ওয়াসিয়্যাতঃ
৪। ‘ইলম হল আমল করার জন্য -১
৫। ‘ইলম হল আমল করার জন্য -২
৬। সত্যের শক্তি
৭। শায়খ উসামার পক্ষ থেকে বার্তা এবং আবু মুস’আব ওয়ালীদ আল শিহরীর শেষ ওয়াসিয়্যাত
৮। ২০ জন হাইজ্যাকার ছিল – এই মিথ্যা খন্ডন করে শায়খ উসামার বক্তব্য
৯। ইউরোপের প্রতি শায়খ উসামার বার্তা, তিনিই ৯/১১ এর পেছনে ছিলেন এই ঘোষণা
১১। শায়খ উসামা বিন লাদিনের তোরাবোরা থেকে বক্তব্য [এখানে মূল বক্তব্যের শুধু ঐ অন্সঘ আছে যা আমাদের আলোচনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, এটা দেখা অবশ্য প্রয়োজনীয় ]
১৪। অ্যামেরিকার নাগরিকদের প্রতি শায়খ উসামা বিন লাদিনের বার্তা
এই শিরোনামের লিংকগুলো কাজ করছে না।
জি ভাই, এই লেখাটি অনেক আগের তো এজন্য হয়তো। আপনি archive.org তে সার্চ দিয়ে এই প্রকাশনাগুলো পেতে পারেন ইনশাআল্লাহ।