অপরাধপ্রবণতা কোন পর্যায়ে গেছে, তা গত কয়েক দিনের বিশ্লেষণেই বোঝা যাচ্ছে। সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অপরাধ যারা করেছে, তারা ছাত্রলীগের কর্মী। ঘটনাটি ঘটে সিলেটে। এমসি কলেজের ফটকটি সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশেই। অনেকেই সেখানে ঘুরতে যান। স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তাদের দুজনকে গাড়িসহ তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেওয়ার পর ছাত্রাবাসের একদম পেছনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়।
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিস্তর অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকটি নিষ্ঠুর ও নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ছাত্রলীগের নাম। প্রায় ১২ বছর ধরে ছাত্রলীগ মূলত আলোচনায় এসেছে হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ধর্ষণ কিংবা টেন্ডারবাজির কারণে। এর আগে বগুড়ায় ধর্ষণ এবং পরে ধর্ষণের শিকার মেয়ে ও মাকে সালিশের নামে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খাদিজা আক্তার নারগিসকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নারগিসকে সে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল।
ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের খবর যত বেশি পাওয়া যায়, এসব অপরাধের দায়ে অপরাধীদের শাস্তির দৃষ্টান্ত এর চেয়ে অনেক কম। অপরাধ করে পার পাওয়া যায়- এ ধরনের বিশ্বাস থেকে অপরাধীরা অপরাধকর্মে লিপ্ত হয়। এটি শুধু পেশাদার অপরাধীদের ক্ষেত্রে নয়, যে কোনো সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। তাই ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংস অপরাধের রাস টেনে ধরার জন্য প্রথম কর্তব্য এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে গতি সঞ্চার করা। অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। একটির পর একটি ধর্ষণ খবরের সমান্তরালে যদি একটির পর একটি শাস্তির খবরও নিশ্চিত করা যায়, তা হলে ধর্ষণপ্রবণতা হ্রাস পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। যখন যা খুশি মনে হচ্ছে, তখন সেটিই তারা করছে। ছাত্রলীগ বা যুবলীগ পরিচয়ের দৌরাত্ম্য এভাবে তো চলতে পারে না। ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরার জন্য কঠোর শাস্তির বিকল্প নেই। কিন্তু কে করবে এ কাজ? যখন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর মুখেও শোনা যায় এই সন্ত্রাসীদের স্তুতি, তখন সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে?
আমাদের সময়