গণপিটুনিতে নয়, টাকা দাবি করে না পেয়ে পুলিশই পিটিয়ে হত্যা করেছে সিলেটের আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান উদ্দিনকে। একের পর এক উঠে আসা তথ্য থেকে এ বিষয়টি এখন পরিষ্কার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা নিহতের স্ত্রীর করা মামলাটি গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ঘটনার দিন পুলিশ ফাঁড়িতে রাত সাড়ে ৩টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় রায়হানের ওপর নির্যাতন চালানো হয়; টেনে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয় হাতের আঙুলের নখ; লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলা হয় হাত-পা। একবার নির্যাতন চালানোর পর এক পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া হয় রায়হানের হাতে। সেই ফোনে তিনি কথা বলেন পরিবারের সঙ্গে। জানান ১০ হাজার টাকা নিয়ে এসে তাকে যেন ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। এর পর ফের শুরু হয় তার ওপর পুলিশি নির্যাতন। অন্যদিকে রায়হানদের পরিবারের সদস্যরা দাবিকৃত টাকা নিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে উপস্থিত হলেও তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। নির্যাতনে তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ভোর ৬টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান রায়হান মারা গেছে।
পুরো ঘটনায় নেতৃত্ব দেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। তার সঙ্গে ছিলেন এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী, কনস্টেবল সজিব হোসেন, হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস।
শনিবার রাতের এ ঘটনায় তোলপাড় চলে সিলেটজুড়ে। নিহতের স্ত্রী পুলিশি নির্যাতনে স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা করেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আর স্থানীয়দের বক্তব্যে পুলিশের মিথ্যাচার ধরা পড়ে।
একাধিক সূত্রের খবর, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ সময়ক্ষেপণ করায় সুযোগ পেয়ে পালিয়ে গেছেন মূল অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া।
কালের কন্ঠ