ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা। অপরদিকে আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে কখন ফিরবে তার নিশ্চয়তা নেই। দিন-রাত ইচ্ছে মতো সময়ে অসময়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া এখন বিদ্যুৎ অফিসের নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বর্তমান সময়ে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহক। এরপর আবার লোডশেডিং যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুতের এমন আচরণে রাতের বেলা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না গ্রাহকরা। শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, ব্যাংকিং সেবা, শিক্ষা ও গৃহস্থালির কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। সন্ধ্যার পর পরই উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রাম ও হাটবাজারে বিদ্যুৎ না থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ফ্রিজ, মোটর, কম্পিউটার, বাল্বসহ যান্ত্রিক ও ইলেকট্রিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে রাতে চার্জ দিতে না পারায় উপজেলার অসংখ্য ইজিবাইক চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
দিন-রাত যে কতবার বিদ্যুৎ আসে যায় তা হিসেব পাওয়া যায় না। এই আছে তো এই নেই। বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলাকে স্থানীয়রা মিসকল নাম দিয়েছেন। এক দিনের নয়, নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ভোগান্তি। বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা গ্রাহকরা।
উপজেলার স্বদেশী ইউনিয়নের বিদ্যুৎ গ্রাহক জনাব আলী বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ৬ মাস ধরে বিদ্যুতের এমন সমস্যা। বিশেষ করে সন্ধ্যায় যায় আসে রাত ১০টায় কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে যায়। রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারি না।
স্বদেশী ইউনিয়নে নাশুল্লা গ্রামের গ্রাহক মজনু মিয়া বলেন, বিদ্যুৎ ছিল না ভালো ছিলাম। এখন রাইস কুকার নিয়ে এসেছি। অনেক সময় ভাত রান্নায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। আর ফ্রিজে তো পানি ঝরছে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের আর গতি নেই।
বিলডোরা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মানিক মিয়া বলেন, সারা দিনে বিদ্যুৎ কতবার আসে আর যায় তার হিসেব নেই। সন্ধ্যায় তো বিদ্যুৎ না থাকাতে বাজারে মানুষই থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় একই রকম অবস্থার কথা শোনা গেছে। আধুনিক যুগে এসেও এমন বিভ্রাট জনগনের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালের কন্ঠ