আইপিএল নিয়ে চলছে হরেক রকম বাজি। নির্দিষ্ট কোন বলে উইকেট পড়বে, সিঙ্গেল না ডাবল রান হবে, নাকি বাউন্ডারি হবে? কোনো ওভারে ১০ রানের কম বা বেশি হবে কি না, কিংবা কোন বলে উইকেট পড়বে। ইনিংসে রানের পরিমাণ কিংবা খেলার ফলের ওপর বাজি হচ্ছে। ম্যাচে ভালো দলের পক্ষে বাজির হারও বেশি হয়। দরও বেশি ওঠে। ভালো দল হারলে টাকা যেমন বেশি যায়, তেমনি খারাপ দল জিতলে বেশি টাকা আসে।
চলতি আইপিএল নিয়ে বাজির বিষয়ে বলছিলেন আনছার আলী নামের এক আইপিএল জুয়াড়ি। ফ্রেঞ্জাইজি ভিত্তিক জনপ্রিয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিয়ে রংপুরের পীরগাছায় প্রায় অর্ধশত স্পটে এভাবেই চলছে জমজমাট জুয়া বাণিজ্য। আইপিএলের মতো বিপিএলের বিগত আসরগুলোতে ক্রিকেট জুয়া খেলে অনেকে পথে বসেছেন। আবার অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর, চৌধুরাণী, কান্দি, তাম্বুলপুর, সৈয়দপুর, দেউতি, ইটাকুমারী, পাওটানা ও নেকমামুদসহ প্রায় ৫০টি স্পটে আইপিএল জুয়া চলছে। ফলে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ যুবসমাজ।
হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান, বাসা-বাড়ি এমন কি যেখানেই টিভি সেখানেই চলছে বাজি ধরা। খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১০০ থেকে শুরু হয়ে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ম্যাচে জয়-পরাজয়, এক ওভারে কত রান, এক বলে কী হবে, কোন খেলোয়াড় কেমন খেলবে এমন সব কিছুর ওপরই হচ্ছে জুয়া। প্রতিদিন সন্ধ্যায় টিভির পর্দার সামনে খেলার দর্শকের মধ্যে যে ভিড় দেখা যায়, এর প্রায় প্রতিটিই ছোটখাটো জুয়ার আসর। চায়ের দোকানের এসব ছোটখাটো আসরে পুরো ম্যাচের জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে একেক ধরনের রেট রয়েছে। তবে সাধারণত ফেবারিট দলের পক্ষে দেড় হাজার ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের পক্ষে এক হাজার টাকা ধরে খেলার প্রচলনই বেশি। মাঝারি মাপের জুয়ায় ১০ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা রেট দেওয়া হচ্ছে। কেবল ম্যাচে হারজিত নিয়েই বাজি নয়, প্রতি ওভারে ওভারে- এমনকি বলে বলে বাজি ধরছেন ছোট-বড় বাজিকররা। রাস্তার মোড়ের দোকানগুলোতেই বেশি হচ্ছে এ খেলা।
জুয়ার টাকা যোগান দিতে কেউ কেউ দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল ও সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধক রাখছে। আর সুদের ব্যবসায়ীরাও থাকছেন জুয়ার আসরের পাশেই। শুধু তাই নয়, এখন অনলাইন বেটিং সাইটগুলোতেও দিব্যি চলছে এমন জুয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জুয়াড়ি বলেন, চলতি আইপিএলে জুয়া খেলে অনেকে পথে বসেছে। ঘরে বসেইে এখন মোবাইলে এ জুয়ায় অংশ নেওয়া যায়। ফলে এ জুয়া বন্ধ হচ্ছে না। এতে এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। কালের কণ্ঠ