ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে টানা আশি দিন ধরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানরত একদল গার্মেন্টস শ্রমিককে পুলিশ পিটিয়ে তুলে দিয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত তাজরিন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা বলছে, সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে পুলিশ এসে তাদের বেদম পিটিয়ে এবং জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে উঠিয়ে দিয়েছে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একজন আলেয়া বেগম বলছেন, ভোর ৪টার দিকে হাইকোর্টের দিকের বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়। আমরা সবাই ঘুমাচ্ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগে ঘুমের মধ্যে আমাদের পেটানো শুরু করে। অনেক পুলিশ ছিলো।
‘মহিলা পুলিশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিলো। পেটানোর পরে গ্যাস মারা হইছে, গরম পানি মারছে। আমরা যে যেইদিকে পারি পালিয়ে গেছি’।
আলেয়া বেগম পুলিশেপ অগ্রসর হওয়ার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, একদম মৌমাছির ঝাঁকের মতো আসছে।
জরিনা বেগম নামে আরো এক শ্রমিক বলছেন, কুড়ি জনের বেশি শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
তিনি বলেছেন, তাদের সাথে দশ বছরের কম বয়সী দু’টি শিশুও অবস্থান করছিলো।
গত ৮০ দিন যাবৎ তাজরিন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০ জনের মত শ্রমিক ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে ঢাকায় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।
যাদের বেশিরভাগই নারী। সেখানে রাতে ফুটপাতেই প্লাস্টিক পেতে ঘুমানো ও খাওয়া দাওয়াও করছিলেন।
কয়েকদিন আগে এ-ওয়ান নামে সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া আর একটি কারখানার কয়েকশ শ্রমিক বকেয়া বেতনদের দাবিতে সেখানে অবস্থান শুরু করেন। সেখানে শ্রমিক সংগঠনের অ্যাক্টিভিস্টদের কয়েকজনও ছিলেন। মাদ্রাসা শিক্ষকদের একটি সংগঠনের কিছু সদস্যও সেখানে আন্দোলন করছিলেন ।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরিন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০০ জনের বেশি শ্রমিক দগ্ধ হয়ে এবং ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন। বহু শ্রমিক শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে গেছেন। সূত্র- বিবিসি বাংলা।