কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার উত্তর পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্য কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশ দিয়ে সদরে যাওয়ার রাস্তা। এটি উত্তর পানান ও দক্ষিণ পানান গ্রামের সংযোগ সড়ক। গত কয়েক বছর আগে গ্রামের এই প্রধান সড়কটি হেরিং বোন সলিং করে পাকা করা হয়।
সম্প্রতি নিজের জায়গা দিয়ে রাস্তা নেয়া হয়েছে এমন দাবি করে সরকারি রাস্তার কয়েক হাজার ইট তুলে নিয়ে বসতঘর তৈরি করেছে আশরাফ আলী নামে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। তিনি উত্তর পানান গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
সরকারি রাস্তার ইট সরিয়ে বসতঘর তৈরি করায় এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলেও বাধা দেয়ার সাহস পায়নি। অবশেষে এ বিষয়ে এলাকাবাসী হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, গ্রামীণ রাস্তা মজবুত করার লক্ষে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্প ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্যাকেজ-২ এর আওতায় দক্ষিণ পানান গ্রামের রমজান আলীর বাড়ি সংলগ্ন পাকা রাস্তা হতে উত্তর পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় কিলোমিটার রাস্তার হেরিং বোন বন্ডের কাজ সম্পন্ন হয়।
স্থানীয়রা জানায়, আশরাফ আলী, লিয়াকত আলী, শওকত আলী ও মোহাম্মদ আলীসহ তাদের লোকজন নিয়ে দিবালোকে রাস্তার বেশিরভাগ জায়গা থেকে হাজারো ইট তুলে নিয়ে নিজ বসত ঘর তৈরির কাজে লাগায়।
তারা বলেন, আশরাফ আলী ও তার লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।
ওই এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ইট তুলে নেয়ায় রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। ফলে যানবাহন চলাচলসহ এলাকার ছাত্রছাত্রী স্কুলে যাওয়া ও জরুরি রোগী নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী কয়েকবার কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলেই ইট চুরির মতো অসুস্থ উপায়ে ধন সঞ্চয়ের নৈতিক অনুমোদন সমাজে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে।
এ বিষয়ে আশরাফ আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি ইট তুলে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত জায়গা দিয়ে রাস্তাটি নেয়া হয়েছে। তাই আমাদের অংশের রাস্তার ইট তোলা হয়েছে। তবে রাস্তার ইট দিয়ে বসতঘর তৈরির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।