ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের জানবায তালিবান মুজাহিদিন গত ৬ জুন মুরতাদ কাবুল বাহিনীর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন। যার কয়েকটিতেই ১৮৩ এরও বেশি মুরতাদ সৈন্য নিহত ও আহত হয়েছে। এসময় মুজাহিদগণ অনেক সৈন্যকে জীবিত বন্দী এবং অনেক ঘাঁটি ও চেকপোস্ট বিজয় করে নিয়েছেন।
এসব অভিযানের মধ্যে রয়েছে, পাকতিয়া প্রদেশের মির্জাকা জেলার কারকিন খোলা এলাকায় মুজাহিদদের বীরত্বপূর্ণ হামলা। গতরাতে জেলাটিতে মুরতাদ কাবুল সরকারের ভাড়াটে সৈন্যদের একটি বিশাল ঘাঁটি ও একটি প্রতিরক্ষামূলক পোস্টে তীব্র অভিযান চালিয়ে তা বিজয় করে নিয়েছেন তালিবান মুজাহিদগণ। এই অভিযানে মুজাহিদদের হাতে ৩৫ কাবুল সৈন্য ও পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিল এবং আহত অবস্থায় ময়দানে পড়ে থাকা সৈন্যদের বন্দী করেছেন মুজাহিদগণ।
অভিযান শেষে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুজাহিদিন গনিমত লাভ করেন। তবে যুদ্ধের সময় ৩ জন মুজাহিদও শহীদ হন।
গতরাতে তাখার প্রদেশের চাহ-ইয়াব জেলার নিরাপত্তা পোস্টগুলিতে হামলা তীব্র হামলা চালিয়েছেন তালিবান মুজাহিদিন। আক্রমণের ফলে ১১ পুলিশ নিহত এবং আরো ১৭ পুলিশ সদস আহত হয়েছে। মুজাহিদগণ উদ্ধার করেছেন বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
একই রাতে নানগারহার প্রদেশের হাসারাক জেলার জোকন এলাকায় একটি শত্রু চেকপোস্টে হামলা চালিয়ে তা দখলে নেন মুজাহিদগণ। এসময় মুজাহিদদের হামলায় নিহত হয় ১০ পুলিশ ও ১ সেনা সদস্য। মুজাহিদগণ জীবিত বন্দী করেন আরো ৭ পুলিশ সদস্যকে। এছাড়াও ৩ টি মোটরসাইকেল, ১৮ টি হালকা ও ভারী অস্ত্র এবং আরও অনেক গোলাবারুদ মুজাহিদিনরা গনিমত লাভ করেছেন। এই যুদ্ধে একজন মুজাহিদ শহীদ এবং অপর একজন আহত হন।
এদিকে জাউজানের তথাকথিত গভর্নর এবং জেনারেল দোস্তুম তার মিলিশিয়া নিয়ে আজ সকাল ৯ টায় প্রদেশের আচ্চা জেলার সারকা এবং পোল-ই-নওয়া এলাকায় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে এসেছিল। এসময় মুজাহিদিনরা মুরতাদ বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র সশস্ত্র প্রতিরোধ প্রদর্শন করেন এবং বিকেল ৫ টায় মুরতাদ বাহিনী তার সমস্ত অহংকার নিয়ে অসহায় ও ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকা থেকে লেজগুটিয়ে পালিয়ে যায়।
এই অভিযানে মুজাহিদদের হামলায় একটি শত্রু ট্যাঙ্ক, ৪ হেলিক্স গাড়ি ধ্বংস হয়েছিল। এছাড়াও ২১ মুরতাদ সৈন্য নিহত এবং আরও অনেক সৈন্য আহত হয়েছিল।
এমনিভাবে গতকাল বিকেলে, লাগমান প্রদেশের রাজধানী মেহতারামের আলিশাং এলাকায় কাবুল বাহিনীর অপারেশন ফোর্স মুজাহিদিনের তীব্র হামলার মুখোমুখি হয় এবং মুরতাদ বাহিনী ময়দানে টিকতে না পেরে পিছনে সরে পড়ে। এই সংঘর্ষে কমান্ডো সহ ১০ সেনা নিহত এবং আরও অনেক সৈন্য আহত হয়।
কেন্দ্রীয় ঘৌর প্রদেশে গতাকাল মুরতাদ পুলিশ সদস্যদের সাথে তীব্র সংঘর্ষ হয় মুজাহিদদের। অভিযান চলাকালে তালিবান মুজাহিদদের হাতে ৮ পুলিশ নিহত ও আরো ৭ সেনা ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। অভিযান শেষে প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ মুজাহিদগণ গনিমত লাভ করেছেন।
এদিকে গতকাল রাত ৯ টায় কাবুল বাহিনী তাখার প্রদেশে তালিবান নিয়ন্ত্রিত বাঙ্গি জেলার ডাহনা এলাকায় বিভিন্ন দিক থেকে মুজাহিদিনদের আক্রমণ করার চেষ্টা করে, যা মুজাহিদগন তীব্র আক্রমণ চালিয়ে পতিহত করেন। এই হামলায় তালিবানদের হাতে কাবুল সরকারের ২ সিনিয়র কমান্ডারসহ ২৫ মুরতাদ সৈন্য নিহত ও আহত হয়। অভিযান শেষে মুজাহিদগণ ২ টি হালকা ও ভারী অস্ত্র গনিমত লাভ করেন।
এদিন সকাল নয়টার দিকে ফরিয়াব প্রদেশের দওলতাবাদ জেলার কেন্দ্রস্থলে কাবুল সরকারের প্রতিরক্ষামূলক পোস্টগুলিতে হামলা চালান তালিবান মুজাহিদগণ। যা ঐদিন সকাল ১০ টা অবধি চলে।
হামলার ফলস্বরূপ মুজাহিদগণ মুরতাদ বাহিনী থেকে একটি চেকপোস্ট এবং একটি ঘাঁটি বিজয় করেন। এসময় কমান্ডার হাবিবসহ ৭ মুরতাদ সৈন্য ঘটনাস্থলেই নিহত হয়, আহত হয় আরো ৪ সৈন্য। এছাড়াও এক সৈন্যকে মুজাহিদগণ জীবিত বন্দী করেন। তবে এই অভিযানে ৩ জন মুজাহিদ আহত এবং অপর একজন মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেছেন।
এমনিভাবে গজনীর প্রাদেশিক কেন্দ্রে এবং খাজা ওমরি জেলাতে এদিন আরো ২টি পৃথক হামলা চালান তালিবান মুজাহিদিন। যার ফলে ২টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস এবং ১৯ মুরতাদ সৈন্য নিহত হয়েছে।
অপরদিকে লাঘমান প্রদেশের কারঘা জেলাতেও এদিন পৃথক ২টি অভিযান চালান মুজাহিদগণ। এসময় শত্রু ঘাঁটিতে মিসাইল হামলাও চালান মুজাহিদগণ। যার ফলে কাবুল বাহিনীর ২টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস এবং ১৭ মুরতাদ সৈন্য হতাহত হয়েছে।