বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে নতুন মুসলিম হওয়া মো. ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে নৃশংসভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। চার দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাস্থল রোয়াংছড়ি থানা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ও পাহাড়ের দুর্গম এলাকার তুলাঝিরি পাড়ায় অবস্থিত। গত ১৮ জুন (শুক্রবার) রাতে ওমর ফারুক মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়িতে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় ৪/৫ জন অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাকে বাড়ি থেকে বের হতে বলে। তাদের ডাকে বের না হলে তারা ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক টেনে বের করে। পরে ঘরের পাশেই গুলি করে হত্যা করে।
স্থানীয়রা জানান, নিহত ওমর ফারুক সহজ-সরল ও সৎ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। আগে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করতেন। পরে তিনি পরিবারসহ ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। মুসলিম হওয়ার পর থেকে তিনি মসজিদে ইমামতি করতেন। তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দিলেও বাকিরা লেখাপড়া করে।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বাঙালি ও উপজাতীয় মুসলিম সংগঠনগুলো।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙালি নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মুজিবর রহমান অভিযোগ করে বলেন বলেন, ওমর ফারুককে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। মুসলিম হওয়াটাই ছিলো তার (ফারুক) মূল অপরাধ। আর প্রশাসন এখনও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, বান্দরবানের বোয়াংছড়ি মসজিদের ইমাম নওমুসলিম ওমর ফারুককে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলে নওমুসলিমদের ভীতসন্ত্রস্ত করে রাখার চক্রান্ত চলছে।
নতুন করে কোন উপজাতি যাতে ইসলাম গ্রহণ করতে ভয় পায় এ জন্যই নওমসুলিম ওমর ফারুককে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এর মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের দালাল, খ্রিস্টান মিশনারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করার ষড়যন্ত্র করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাই অবশ্যই পাহাড়ের দিকে নজর বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দোসরদের কর্মকাণ্ড যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে এসব মিশনারীদের নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে। আমাদের দেশে কিছু সংগঠন রয়েছে যারা অমুসলিম পাহাড়ীদের অধিকার নিয়ে সবসময়ই কথা বলে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সেই সংগঠনগুলো ওমর ফারুক ত্রিপুরার বিষয় নিশ্চুপ রয়েছে। এই সংগঠনগুলো কাদের স্বার্থে কথা বলে, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখতে হবে। ওমর ফারুক ত্রিপুরার হত্যাকাণ্ডের সাথে কারা জড়িত এবং কাদের ষড়যন্ত্রে এই হত্যা হয়েছে তা এখনই খুজে বের করতে না পারলে পাহাড়ী মুসলিমদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।