সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, কাবুল সরকারের অধীনে চাকুরিরত বিভিন্ন স্তরের সরকারী কর্মকর্তা বিশেষ করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিশাল অংশ সরকারের তাবেদারি ছেড়ে ইমারতে ইসলামিয়ার সাথে যোগ দিচ্ছে।
নিজেদের অফিস, ক্যাম্প, সাথে থাকা সমস্ত যুদ্ধসামগ্রী ও যুদ্ধাস্ত্রসহ যাবতীয় আসবাবপত্র স্বহস্তে তুলে দিচ্ছে মুজাহিদদের হাতে। কাবুল প্রশাসনের মাঝে সামগ্রিক এই পরিবর্তন সাধারণ কোনো বিষয় নয়। বরং তা এই মহাসত্যের প্রমাণ বহন করে যে, পতনোন্মুখ এই গণতান্ত্রিক সিস্টেমকে রক্ষা করার মত শক্তি আশরাফ গনীর নেই। আর এই সত্য তার অধীনস্থ সেনারা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছে বলেই তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ইমারাতে ইসলামিয়ার সাথে মিলিত হওয়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বস্তুত কোনো সাধারণ সেনা চায় না অনর্থক নিজের জীবন নষ্ট করতে। বরং তারা নিজেদের জীবন কুরবান করে থাকে মহান কোনো আদর্শ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে। অথচ কাবুল সরকারের না সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য আছে, আর না আছে কোনো মহান আদর্শ; যার জন্য আত্মোৎসর্গ করা যায়। তাহলে তার হুকুমের গোলামী করে একজন মানুষ কেন নিজের জীবন নষ্ট করবে??
বাস্তবতা হলো, কাবুল প্রশাসনের জন্মই তো হয়েছে দখলদার শত্রুর আগমনের ওসিলায়। যার একমাত্র লক্ষ্যই হলো আফগানের ভূমিতে দখলদার শত্রুর উপনিবেশ স্থাপনে শক্তি জোগানো। আর এ কারণেই খোদ কাবুল প্রশাসনের বেতনভুক্ত কর্মকর্তাসহ আপামর জনগণ কাবুল প্রশাসনের সাহায্য ছেড়ে দলে দলে যোগ দিচ্ছে ইমারাতে ইসলামিয়ার পতাকা তলে।
আফগান জনগণকে জাতিগত স্বার্থের আড়ালে নিজেদের অবৈধ স্বার্থসিদ্ধির জন্য যুদ্ধ করানোর লক্ষ্যে মিথ্যা স্লোগান ও ভুয়া প্রতিশ্রুতির বুলি আওড়িয়ে ধোঁকা দেওয়ার সময় এখন আর নেই। কাবুল সরকারের মন্ত্রীপরিষদ ও আর্গ প্যালেসের [১] অবৈধ দখলদারদের এটা ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত।
সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ এটাই প্রমাণ করে যে, বর্তমানে কাবুল সরকারের উপর না কারো আস্থা আছে আর না এর সুরক্ষার জন্য কেউ যুদ্ধ করতে প্রস্তুত!
কাবুল বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও ইমারাতে ইসলামিয়াতে যোগদান করার বিষয়টি প্রশংসিত হবার সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এর মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে শান্তি ও নিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি হতে চলেছে এবং আফগান জাতি যে স্বপ্ন বুকে লালন করে দীর্ঘ ২০ বছর জিহাদ করেছে সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ।
সেই সাথে যারা এখনো নিজেদের বসানো পুতুল সরকারের মাধ্যমে আফগান যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করার দিবাস্বপ্নে বিভোর, সেই সব ভিনদেশী শত্রুদের জন্যও আফগানিস্তানের আভ্যন্তরীণ অবস্থাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিন্ধান্ত গ্রহণ করা আবশ্যক। তাদের জানা থাকা উচিত, আফগান জাতি বহিরাগত দখলদারদের যেভাবে ঘৃণা করে ঠিক সেভাবেই তাদের চাপিয়ে দেওয়া এই প্রশাসনকেও তারা ঘৃণা করে। আর এ জন্যই তারা অনবরত ইমারাতে ইসলামিয়ায় অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে।
হতে পারে কাবুল সরকারের মন্ত্রীপরিষদ নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করাবে। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে,আফগান জাতি এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, আফগানিস্তানে পুতুল সরকারের পরিবর্তে স্বতন্ত্র ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হবে। যে হুকুমত তাদের জাতীয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি তাদের এই দীর্ঘ জিহাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন ও সংরক্ষণে কাজ করবে।
আফগানের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের এই ধারাকে ইমারাতে ইসলামিয়া দেশ ও জাতির জন্য একটি শুভ সময়ের সূচনা মনে করছে । আফগান জাতিকে তাঁরা এই সান্ত্বনা বাণী শোনাচ্ছে যে, ইনশাআল্লাহ সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আফগানিস্তানে স্বতন্ত্র ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তার পরিবেশ বিরাজ করবে। আফগানবাসীর কাছে আমরা আশাবাদী, আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবে।
এই প্রত্যাশায়…
টীকা:
[১] আর্গ প্যালেস (ARG PALACE) হল আফগানিস্থানের রাষ্ট্রপতির বাসভবন
অনুবাদক: আব্দুল্লাহ মুনতাসির
আলহামদুলিল্লাহ
إذا جاء نصر الله والفتح ورأيت الناس يدخلون في دين الله أفواجا
কুরআন আমাদের বলছে মানুষ বিজয়ী জাতির আদর্শ গ্রহণ করে। পরাজিত জাতির আদর্শ গ্রহণ করে না।
আজ আফগানে ইসলামী ইমারাহর বিজয় এই চিরন্তন বাণীরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সহীহ সমঝ দান করুন। আমীন ইয়া নাসীরাল মুসলিমীন।
উপকৃত হলাম ভাই
“এ পথে চেনা যায় রবের হাকীকত
নেমে আসে অগণিত রহমত।
এই পথ যালিমের ত্রাসের পথ
এই পথ ওমর আর ওসামার পথ।”
Allahumma amin.