বেশ কিছুদিন অপেক্ষার পালা শেষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক ও তৃতীয় বৃহত্তম প্রদেশ হেরাতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন তালিবান মুজাহিদিন। এসময় ইসমাইল খান, তার নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া এবং কাবুল সরকারি সৈন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
গত এক সপ্তাহ ধরে, তালিবানরা বারবার হেরাতের সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক করে আসছিলেন যে, তারা যেনো বিনা লড়াইয়ে প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ মুজাহিদদের কাছে হস্তান্তর করে, যাতে সরকারি প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও পাবলিক সম্পত্তি ধ্বংস ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। কিন্তু কাবুল সেনারা লড়াই চালিয়ে যায় এবং প্রতিরোধের উপর জোর দেয়।
ফলে তালিবানরা বাধ্য হয়ে সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন দিক থেকে কাবুল বাহিনী ও কমান্ডার ইসমাইল খানের মিলিশিয়াদের টার্গেট করে একযোগে ব্যাপক আক্রমণ চালান। আক্রমণ শুরু হওয়ার পর সকাল বেলায় তালিবানরা প্রদেশটির কেন্দ্রীয় কারাগার, দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন।
এরপর কয়েক ঘন্টার আরও তীব্র লড়াইয়ের পর দুপুররের পর গভর্নর কার্যালয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যান মুজাহিদগণ। এসময় একে একে ইখতিয়ার-উদ-দ্বীন, কালা-ই-আরগ সহ সরকারী সমস্ত ভবন তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সর্বশেষ এদিন বিকাল বেলায় মুজাহিদগণ হেরাতের গভর্নর কার্যালয়, গোয়েন্দা অধিদপ্তর সহ অন্য সরকারি স্থাপনার উপরও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
এদিকে তালিবানদের একজন কেন্দ্রীয় মুখপাত্র- ক্বারী মোহাম্মদ ইউসুফ আহমাদী হাফিজাহুল্লাহ্ (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে প্রদেশটি বিজয়ের সংবাদ নিশ্চিত করে বলেন, “সম্প্রতি প্রাদেশিক ভবন, পুলিশ সদর দপ্তর, কেন্দ্রীয় কারাগার এবং অন্যান্য অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে।” সেই সাথে কাবুল সৈন্যরা তাদের অস্ত্র ফেলে মুজাহিদদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে শুরু করেছে, যার প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
হেরাত প্রদেশের বাসিন্দারা জানান, তালিবান মুজাহিদিনরা আজ (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় হেরাতের কেন্দ্রীয় শহরে প্রবেশ করেন এবং গভর্নরের কার্যালয়, পুলিশ সদর দপ্তর এবং কারাগার নিয়ন্ত্রণে নেন।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তালিবান সমর্থক অ্যাকাউন্টগুলি হেরাতের প্রাদেশিক পুলিশ সদর দফতরে তালিবান মুজাহিদদের টহল দেওয়ার এবং হেরাতের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছেন। এসব পোস্টে জানানো হয় যে, প্রদেশটির কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুজাহিদগণ ৪০০০ (চার হাজার) কারাবন্দীকে মুক্ত করেছেন।
এদিকে হেরাতের প্রাক্তন গভর্নর এবং জমিয়তে ইসলামীর কমান্ডার ইসমাইল খান হেরাতে তালিবান মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, এবং বিগত দিনগুলোতে কাবুল সেনা ও তার মিলিশিয়াদের তালিবানদের বিরুদ্ধে উষ্কে দিচ্ছিল। কিন্তু আজ সে নিজেই তালিবান মুজাহিদদের তীব্র আক্রমণ দেখে সবার আগে হেরাত ছেড়ে পালিয়েছে।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা “টলোনিউজ” কেও এই সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন যে, ইসমাইল খান তার মিলিশিয়াদের যুদ্ধের ময়দানে তালিবানদের সামনে রেখেই হেরাত ছেড়ে পালিয়েছে।
বর্তমানে কান্দাহার ও হেলমান্দ প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহরে প্রবেশ করেছেন তালিবান মুজাহিদগ। উভয় প্রদেশের কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙে কয়েক হাজার বন্দীকে মুক্ত করেছেন তাঁরা। প্রদেশ দু’টিতে তালিবানদের অগ্রগতি এখনো অব্যাহত আছে।
আল্লাহ তোমার শুকরিয়া করে শেষ করা যাবে না। আলহামদুলিল্লাহ সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ! আফগান তালিবানের হস্তগত করে দিন। আমিন।