বাঁধ সংস্কারের জন্য বর্ষাকাল সবচেয়ে অনুপযোগী সময় হলেও আমাদের দেশে সংশ্লিষ্টদের বাঁধ সংস্কারের কথা মনে পড়ে কেবল বর্ষাকাল এলেই। এতে নষ্ট হয় জনগণের করের টাকা; দু-চার দিনের সুবিধা ছাড়া জনগণ দীর্ঘমেয়াদী কোন সুফলভোগ করতে পারেনা। তবে নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা সুফল ভোগ করেন বছর বছর। বছরের পর বছর ধরে এমন ঘটনা ঘটে আসলেও এখনও এর পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি।
ফেনীর ফুলগাজীতে একদিনের বৃষ্টিতে ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরি নদীর বাঁধ ভেঙে চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অথচ বাঁধটি মাত্র ১০ দিন আগে সংস্কার করা হয়েছিল। খবর – স্টেট ওয়াচ।
মাত্র দুই মাস আগে ওই বাঁধের একই স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল। এতে আশপাশের কিছু এলাকা পানিতে ভেসে যায়। সে সময় তাড়াহুড়ো করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিলে বাঁধটি মেরামত করে। এর ঠিক ১০ দিন পর গত বুধবার (২৫ আগস্ট) আনুমানিক রাত ৮টার সময় মুহুরি নদীর বাঁধটির সংস্কার করা জায়গাটিতেই আবার ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, বৈরাগপুর, সাহপাড়াসহ প্রায় চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এই পরিস্থিতির জন্য বাঁধ সংস্কারে গাফিলতিকেই দায়ী করে ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে একই স্থানে সংস্কারের পর তা পুনরায় ভেঙেছে। ভেঙে যাওয়া স্থানটি যদি শক্ত, মজবুত ও টেকসইভাবে সতর্কতার সঙ্গে সংস্কার করত, তাহলে এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।”
তবে কেন বর্ষা এলেই গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো সংস্কারের কথা মনে পড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞমহল ও জনমনে প্রশ্ন থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারো কাছ থেকে এর কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভুগিরা অবশ্য বলছেন, বার বার বাঁধ ভাঙলে বার বার নির্মাণ করা যায়, আর বার বার বাঁধ নির্মাণ করলেই বছর বছর পকেটে টাকা ঢুকবে সংশ্লিষ্টদের!