আফগানিস্তানের বহুল আলোচিত পাঞ্জশির প্রদেশ দায়িত্বজ্ঞানহীন মিলিশিয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করেছেন তালিবান মুজাহিদিন। যা এখন ইমারতে ইসলামিয়ার নিয়ন্ত্রিত একটি প্রদেশ।
ইমারতে ইসলামিয়া অফিসিয়ালি এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীদের হাতে থাকা সর্বশেষ পাঞ্জশির প্রদেশ বিজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন: “ভাড়াটে শত্রুর শেষ শক্ত ঘাঁটি পঞ্জশিরও সম্পূর্ণভাবে জয় করা হয়েছে।”
ইমারতে ইসলামিয়া বার বার আহমদ মাসউদের মিলিশিয়াদের আত্মসমর্পণ এবং যুদ্ধ বন্ধ করার সুযোগ দিয়েছিল, কিন্তু সাবেক শাসন ব্যাবস্থার উপপ্রধান আমরুল্লাহ্ সালেহ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মিলিশিয়া নেতা আহমদ মাসুদ শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ ছেড়ে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারা বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করে। ফলে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে তালিবান মুজাহিদগণ আহমদ মাসুদ এবং আমরুল্লাহ সালেহের বিরুদ্ধে একটি সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধ শুরু করেন।
অতঃপর তালিবান মুজাহিদগণ সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছায়, স্থানীয়দের সহায়তায় এবং তালিবান মুজাহিদদের কয়েক দিনের তীব্র লড়াইয়ের পর গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত পাঞ্জশিরের ৮ টি জেলার ৭ টিই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেন এবং পাঞ্জশিরের রাজধানী বাজরেকের কেন্দ্রস্থল অবরোধ করেন।
সর্বশেষ গতকাল রাতভরের তীব্র লড়াইয়ের পর আজ ৬ সেপ্টেম্বর সকালে মুজাহিদগণ তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা উপত্যকার সর্বশেষ কেন্দ্রস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেন, এরমধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশ পরিপূর্ণরূপে ইমারতে ইসলামিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
উপত্যকার কেন্দ্রস্থল বিজয়ের এই লড়াইয়ে গতকাল তালিবান মুজাহিদগণ আহমদ মাসুদের ডেপুটি জেনারেল ও ভাতিজা আব্দুল ওয়াদুদ, মুখপাত্র ফাহিম দাশতি, মিলিশিয়া কমান্ডার জেনারেল মুনিব এবং বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল হায়দারকে হত্যা করেন। এছাড়াও আরও কয়েক শতাধিক মিলিশিয়া এসময় মুজাহিদদের হামলায় নিহত হয়, আহত হয় আরও অনেক মিলিশিয়া।
এদিকে তালিবান মুজাহিদগণ বিদ্রোহী নেতা মাসউদ ও সালেহের হেলিকাপ্টার আটক করেছেন, কিন্তু এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফলে বিদ্রোহী এই নেতা ও অন্যান্য পালাতক মিলিশিয়াদের ধরতে পাহাড়ের উপত্যকা ঘেরা পাঞ্জশিরে চলছে তালিবানদের চুরুনী অভিযান। কিছু সূত্র বলছে যে, সালেহ তাজিকিস্তান পালিয়ে গেছে।
মুজাহিদদের এই বিজয়ের পর ইমারতে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় মুখপাত্র- মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, “ভাড়াটে শত্রুর শেষ শক্ত ঘাঁটি পঞ্জশিরও সম্পূর্ণভাবে জয় করা হয়েছে।”
পাঞ্জশিরের জনগণকে আশ্বস্ত করেছি যে, তারা কোনোভাবেই বৈষম্যের শিকার হবেন না, পাঞ্জশিরের জনগণও আমাদের ভাই, আমরা একসাথে একটি দেশ এবং এক লক্ষ্যে সেবা করব।
তিনি বলেন, “এই বিজয়ের মাধ্যমে আফগানিস্তান পুরোপুরি যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং আমাদের দেশবাসী স্বাধীনতা লাভ করেছে, এর জনগণ স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির পরিবেশে আরামদায়ক এবং সমৃদ্ধ জীবন পাবেন।”