ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের তালিবান মুখপাত্র মুহতারাম জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ সোমবার ঘোষণা করেছেন যে, পাঞ্জশিরের সমস্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন তালিবান মুজাহিদিন। তিনি বলেন, প্রদেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যেকোন বিদ্রোহ ঠেকাতে সেখানে আরও কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হবে।
তালিবান আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে, মুজাহিদিনরা আজ সকালে পাঞ্জশির প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে পাঞ্জশির সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, অন্য পক্ষ যারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ, অস্ত্র ও যানবাহন তাদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল, তারা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায় এবং যুদ্ধের পথ বেঁচে নেয়। ফলে মুজাহিদগণ সেখানে অপারেশন চালাতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন যে, বহু বছর ধরে পাঞ্জশিরে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র মজুদ ছিল এবং অতি সম্প্রতি কাবুল থেকেও অত্যাধুনিক ভারী ও ছোট অস্ত্র সেখানে স্থানান্তর করা হয়। যা মুজাহিদগণ পাঞ্জশির অভিযান শেষে উদ্ধার করেছেন, শীঘ্রই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এসব সম্পদ ফেরত দেওয়া হবে এবং দেশের কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারে তা সংরক্ষণ করা হবে।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের মতে, ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান একই হুকুমের অধীনে নিয়ে আসার ব্যাপারে খুবই সংবেদনশীল। আফগানিস্তান আরো স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাক এবং সকল ধরনের অশান্তি দূর হয়ে শান্তি ফিরে আসুক। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সমাপ্তি হয়েছে, জাতি আরেকটি যুদ্ধ চায় না আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ারও কোনো অজুহাত নেই।
তালিবান মুখপাত্র বলেন, পাঞ্জশিরের গর্বিত উপত্যকায় বসবাসকারী মানুষ আফগানিস্তান নামক দেহের অবিচ্ছেদ্য একটি অঙ্গ, তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই অন্যায় আচরণ করা হবে না। এখানে অন্যান্য নাগরিকদের যে সমস্ত অধিকার আছে, পাঞ্জশিরের জনগণেরও সেসব অধিকার থাকবে। পাঞ্জশিরের বাসিন্দারা আমাদের ভাই। আচরণের ক্ষেত্রে তাদের সাথে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা তাদের সেবা করবো, তাদের ও আমাদের মাঝে কোন শত্রুতা নেই।
তিনি পাঞ্জশিরে টেলিফোন পরিষেবা, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ লাইন ও সড়কগুলো বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখার জন্যও দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এসব বন্ধের পেছনে মূল অপরাধী তারাই যারা পাঞ্জশিরকে রাষ্ট্রদ্রোহের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করতে চেয়েছিল।
যাইহোক, আজ থেকে পাঞ্জশিরে যোগাযোগ লাইন, খাদ্য এবং ওষুধ সরবরাহ সমপূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।
মুখপাত্রের মতে, পাঞ্জশিরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এবং স্থানীয় মুজাহিদ কমান্ডাররা পাঞ্জশির বিজয় অভিযানে সহায়তা করেছেন। ফলে উপত্যকাটি থেকে সহজেই বিদ্রোহীদের তাড়াতে সক্ষম হয়েছেন।
আর স্থানীয়দের এই সহায়তার ফলে উপত্যকাটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় কোনও বেসামরিক মানুষ হতাহত বা তাদের সম্পদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ্।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও বলেন, আমাদের পক্ষহতে পাঞ্জশির প্রদেশের জন্য নিযুক্ত নতুন গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর অন্যান্য কর্মকর্তারা পাঞ্জশিরের স্থানীয় বাসিন্দা।
মুখপাত্র আরও জানান, গুজব আছে যে আমরুল্লাহ সালেহ তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনও এটি নিশ্চিত করতে পারছি না। আমাদের টিম পলাতকদের সন্ধানে সেখানে এখনো চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন।