বিভিন্ন সময়ে ঘৃণা উসকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ফ্রান্সের সাংবাদিক, লেখক এরিক জেমুরের বিরুদ্ধে। এই উগ্র ডানপন্থী লেখক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবার মোহাম্মদ, কেভিন ও জর্ডানের মতো বিদেশি উচ্চারণের নাম নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সম্প্রতি তার নতুন একটি বইয়ের প্রচারে নেমে গণমাধ্যমে দেওয়া কয়েক দফা সাক্ষাৎকারে সে এমন আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে নামার ভিত্তি তৈরি করছে। দ্য টাইম, এএফপি ও গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
এতে ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থীদের মধ্যে তার প্রভাব আরও শক্তভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি দৈনিক লা ফিগারোর রাজনীতি বিষয়ক সাংবাদিক ছিল। টেলিভিশনে দেওয়া বিভিন্ন সাক্ষাৎকার এবং অনুষ্ঠানে ইসলাম ও অভিবাসীদের নিয়মিতভাবেই ভর্ৎসনা করে আসতে দেখা গেছে তাকে।
চলতি গ্রীষ্মের শুরুতে প্যারিসের বিভিন্ন অঞ্চলে এরিক জেমুরের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার পক্ষে পোস্টার দেখা গেছে। সম্ভাব্য প্রচারের জন্য তার সমর্থকেরা তহবিল তুলতে শুরু করেছে।
বইয়ের প্রচারে চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভক্তদের মুখোমুখি হয়েছে। এতে নিয়মিতভাবেই ইসলামবিদ্বেষ ও বর্ণবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে এই লেখক। তার তুলনায় অভিবাসীবিরোধী কট্টরপন্থী লা পেনকে অনেকটা নরম সুরের বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
গেল এক দশকে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় শীর্ষে থাকছে এরিক। সে বলেছে, এক শতকের মধ্যে ফ্রান্স আর থাকবে না কিংবা তা ইসলামিক প্রজাতন্ত্র হয়ে যাবে। কাজেই মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এখনই ধরপাকড় শুরু করতে হবে।
নতুন বইয়ে সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নিজেকে সামান্তরালভাবে তুলনা করেছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে ফ্রান্সে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে লড়াইয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুলে ম্যাক্রন ও উগ্রপন্থী ম্যারিন লা পেন চূড়ান্ত পর্বে উঠতে পারবে বলে জনমত ভোট বলে দিচ্ছে।
ইহুদি বর্বর জাতিগোষ্ঠীর সদস্য এরিক জেমুর প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেছে। তার বাবা ১৯৫০-এর দশকে আলজেরিয়া থেকে অভিবাসী হিসেবে ফ্রান্সে আশ্রয় নিয়েছে।
এই সাংবাদিক বলেছে, আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে শিশুদের নামের প্রথম অংশ অ-ফরাসি রাখা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে। এর অর্থ হচ্ছে, মুসলমানেরা তাদের সন্তানদের মোহাম্মদ নামে ডাকতে পারবেন না। তবে নামের মাঝে মোহাম্মদ থাকতে পারবে।
তবে এটিকে হাস্যকর ও ভুল বলে আখ্যায়িত করেছেন ফরাসি জ-মাইকেল জার। তিনি বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য হচ্ছে সবচেয়ে ইতিবাচক উদহারণ। সেখানে বহু শিশকে মোহাম্মদ নামে ডাকা হচ্ছে।