দেশের স্যেকুলার ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্ষণের পর এবার আত্মহত্যা একটি মহামারি রুপ ধারন করেছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্কও।
স্কুল-কলেজেগুলোয় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ৪০৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। যা প্রতি মাসে গড়ে ৪৫ জনের বেশি। জানা গেছে এসব আত্মহত্যার বেশিরভাগ প্রেমঘটিত।
গত ৮ অক্টোবর সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপের এ তথ্য উঠে এসেছে। ভার্চুয়ালি এক আলোচনাসভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব।
ড. এ ওহাব জানান, গত ৯ মাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৭, স্কুলের ২১৯, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৪৪ এবং কলেজপড়ুয়া ৮৪ জন। আত্মহননকারীদের মধ্যে ছাত্রী ২৪২ ও ছাত্র ১৬২ জন। জরিপ অনুযায়ী, গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ২৭ ছাত্রী এবং ১৮ জন ছাত্র আত্মহত্যা করে থাকে।
আঁচল ফাউন্ডেশনের এই গবেষক আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর একাডেমিক চাপ নাকি অন্য কোন কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে, তা জানার লক্ষ্যেই এই গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে প্রেমঘটিত কারণে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যত ও শিক্ষত করে গড়ে তুলার প্রয়াস আমাদের সবারই। কিন্তু আমারা যে উদ্যেশ্যে সন্তানদের স্কুল-কলেজে প্রেরণ করছি তা কি আদৌ অর্জিত হচ্ছে, নাকি তা মিথ্যা মরীচিকায় পর্যবসিত হচ্ছে। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে স্কুলগুলোতে মুসলিম ছাত্রীদেরে পর্দা ও হিজাব পালনে বাধা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষক ছাত্রীকে ধর্ষন ও অপহরন করে নিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা সহজেই অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রীদের দ্বারা দেহ ব্যবসার কথা এখন সবারই জানা। আর এখন দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেঁচে নিচ্ছে।
এতোসব ঘটনা ঘটার পরও তথাকথিত প্রগতিশীল বা সুশীল সমাজকে টু শব্দটি করতেও দেখা যাচ্ছে না। এখন তারা এসব বিষয়ে কোন কথা বলবে না। কেননা এসব ঘটনায় ইসলামপন্থীদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আর এগুলো তাদের প্রচার-প্রচারণারই ফসল। তবে নরসিংদীতে নোংরা পোশাক পরা মেয়েদের পক্ষে তাদেরকে আবার খুবই সোচ্চার দেখা যায়।
আত্মহত্যার এই মহামারীর পেছনে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদেরকে তথা গোটা সমাজকে ধর্মহীন করে গড়ে তোলার পাঠ্যক্রমকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ। সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা ও এর পৃষ্ঠপোষোক সেক্যুলার শাসনব্যবস্থাকে পরিবর্তন করা ছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ করা বা সুশিক্ষিত জাতি গড়া সম্ভব নয়। এবং ধর্ষণ ও আত্মহত্যার সমাধানও করা সম্ভব নয়।
লেখক : মুহাম্মাদ ইব্রাহীম
তথ্যসূত্র:
১। প্রেমঘটিত কারণে মাসে গড়ে ৪৫ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
– https://tinyurl.com/2d3ywkyw