যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া (ইউসি) প্রশাসন চলমান উইঘুর গণহত্যার সাথে যুক্ত কোম্পানিগুলোতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিনিয়োগসংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি আলিবাবা এবং এমএসসিআই চায়না-তে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই কোম্পানিগুলো উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত বলে জানা গেছে।
কিছু দেশ এবং শত শত মানবাধিকার সংস্থা উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা প্রকাশ করেছে। চীনের অপরাধের মধ্যে আছে– উইঘুরদের বন্দী করে রাখা, জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা, উইঘুর পুরুষদের গণহারে গ্রেফতার করা, তাদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া এবং উইঘুরদের চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তাদের বাড়িতে রাখা।
আলিবাবাতে ১৪,৯৯৭,২৩৪ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া। ইন্ডাস্ট্রি ওয়াচডগ আইপিভিএম-এর ২০২০ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, উইঘুরদের শনাক্ত করতে আলিবাবা ফেশিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩০ জুন, ২০২২ পর্যন্ত পেনশনের মধ্য দিয়ে আলিবাবাতে আরও ৩৭,৫৭১,৯২২ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ ২০১৯ সালে আলিবাবার অর্থায়নে পরিচালিত দুটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স প্রতিষ্ঠান— মেগভী (Megvii) ও সেন্সটাইম (SenseTime) — এর উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কারণ ফেডারেল রেজিস্টারের মতে, ঐ প্রতিষ্ঠান দুটি “যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির স্বার্থের বিরোধী”।
এছাড়াও, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসন এমএসসিআই চায়না-তে ২৭,৬১৩,৬০৮ ডলার বিনিয়োগ করেছে। এখানে পেনশনের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগ করেছে আরও ৭৫,৮২১,৫১৯ ডলার।
চীনের এই এমএসসিআই প্রতিষ্ঠানের ১২টি কোম্পানি জোরপূর্বক শ্রম এবং ক্যাম্প ও নজরদারি নির্মাণে নিযুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে হংকং ওয়াচ এবং শেফিল্ড হ্যালাম ইউনিভার্সিটির হেলেনা কেনেডি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস রিপোর্ট।
এর বাইরেও, ইতু টেকনোলজিতেও মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিকে ২০২০ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
আর এই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির ব্যবসা করার অনুমতি নেই। কিন্তু এই ধরনের কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া।
এভাবে চীনের উইঘুর মুসলিমদের উপর চলমান নির্যাতনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে নির্যাতনে অংশ নিচ্ছে আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোও! তারা নিজেদের স্বার্থে উইঘুর মুসলিমদেরকে জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করছে। আর উইঘুরদের রক্ত-ঘামে তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তিই ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের আনাচে-কানাচে।
তথ্যসূত্র:
——-
1. University Of California System Has Millions Invested With Companies Linked To Uighur Genocide
– https://tinyurl.com/5a2dnz7h