আবারও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম ইউনিট প্রতি গড়ে পাঁচ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। নতুন মূল্য অনুযায়ী সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা বেড়েছে। আর বেশি ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে বেড়েছে ৫৪ পয়সা। গত ১ জানুয়ারি থেকে এটা কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ চলতি মাসের বিদ্যুৎ বিল বাড়তি দামে পরিশোধ করতে হবে জনগণকে।
১২ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৪০ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৫ টাকা ৭২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৩০ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের জন্য ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ৯ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ১১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৩ পয়সা করা হয়েছে।
সবশেষ গত ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। আর এখন আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হলো। তবে এখানেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কোন সুযোগ নেই। কেননা এখন থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখন গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়াবে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো। বেড়ে যাবে নিত্যপ্রয়োজনী পন্য, বাড়িভাড়াসহ দেশের সব কিছুর দাম। চলমান দেশের অবস্থায় এমনিতেই জনগণ চরম দুর্গতি পোহাচ্ছে। সেইসাথে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের জীবনে নেমে আসবে আরও চরম দুর্গতি।
বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি একটি ওপেন সিক্রেট বিষয়। দেশের দুর্নীতিগ্রস্থ শাখার অন্যতম হচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় । কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ না করে বরাবরই ‘বিদ্যুৎ খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে হবে’- এসব কথা বলে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছে শাসকগোষ্ঠী। আর এর কুফল ভোগ করছে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে জীবন-যাপন করা সাধারণ মানুষ।
লক্ষণীয় যে, শাসকগোষ্ঠী বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য সব সময় শীতকালকে বেছে নেয়। কেননা এই সময় ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুৎ খরচ হয় কম, আর বিলও আসে কম। তাই এ সময় দাম বৃদ্ধি করলে সাধারন জনগণের প্রতিক্রিয়াও কম থাকে। আর এভাবেই সুক্ষ্ম প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর শাসন ও শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রিত শাসকগোষ্ঠী।
তথ্যসূত্র:
——-
১। ৫ শতাংশ বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম-
– https://tinyurl.com/bdevfmb5
২। বিদ্যুৎ খাতের ভুল নীতি-দুর্নীতির দায় জনগণের ওপর চাপানো হচ্ছে-
– https://tinyurl.com/mvbu6bm8