পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে দেশটির জান্তা বাহিনী ও রাশিয়ার ওয়াগনার ভাড়াটে বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে ‘জেএনআইএম’। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দলটির প্রতিরোধ যোদ্ধারা শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযান পরিচালনা করছেন।
আয-যাল্লাকা মিডিয়া সূত্রে জানা যায়, আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ (জেএনআইএম) যোদ্ধারা, গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মালির আরবিন্দা অঞ্চলের একটি অতর্কিত সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেছেন। অপারেশনটি হোমব্রি এলাকায় মালির জান্তা বাহিনীর একটি সামরিক কনভয় লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এতে জান্তা বাহিনীর কমপক্ষে ৫ সৈন্য নিহত হয়।
অপরদিকে গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায়, অঞ্চলটির গোসি শহরে মালিয়ান সেনাবাহিনীর অন্তর্গত একটি চেকপয়েন্টে ব্যাপক আক্রমণ চালান মুজাহিদগণ। এতে বেশ কিছু সৈন্য হতাহত হয় এবং সেনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
আর এই অভিযানগুলো শেষে মুজাহিদগণ ঘটনাস্থল থেকে গনিমত হিসাবে জব্দ করেন ৩টি সামরিক যান, ২টি দুশকা, ১টি ভারী ১৪.৫ মিমি এর অস্ত্র, ১২.৭ ক্যালিবারের ১টি ভারী অস্ত্র, ৬টি ক্লাশিনকোভ, ১টি আরপিজি, ৩টি পিকা, ১৯টি বুলেট বাক্স এবং ৬টি গোলাবারুদ বাক্স সহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম।
সূত্রটি আরও নিশ্চিত করে যে, মুজাহিদগণ গত ১৯, ২০, ২২ ও ২৫ জানুয়ারি মালির মাসিনা এবং কিদাল অঞ্চলে ৮টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযানগুলো অঞ্চল দুটির গাও, জাবালি, মারজা, আফরা, নারা, বুনী এবং মা’র কালা শহরে মালির জান্তা ও ওয়াগনারের যৌথ সামরিক কাফেলা লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এতে শত্রু বাহিনীর ২টি সাঁজোয়া যান, ৩টি গাড়ি এবং ২টি মোটরসাইকেল ধ্বংস হয়েছে। সেই সাথে একাধিক শত্রু সেনা নিহত এবং বহু সংখ্যক সৈন্য আহত হয়েছে। এর একটি অভিযান শেষে মুজাহিদগণ শত্রু বাহিনী থেকে ৪টি মোটরসাইকেল সহ অসংখ্য অস্ত্র জব্দ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে অন্য অভিযানগুলো শেষেও মুজাহিদগণ শত্রু বাহিনী থেকে অসংখ্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছেন।
অপরদিকে ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদগণ সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে, প্রতিরোধ যোদ্ধারা গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আরবিন্দা অঞ্চলের কোসি শহরে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযান শেষে মুজাহিদগণ এই অঞ্চলে অবস্থিত শত্রু বাহিনীর একটি সামরিক চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছেন।
এদিকে গত ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে, জেএনআইএম-এর আর্টিলারি ব্যাটালিয়নের যোদ্ধারা টিম্বাকটু শহরে মালির জান্তা সামরিক বাহিনীর একটি দুর্গে ৩টি গ্র্যাড আর্টিলারি সালভো দিয়ে আক্রমণ চালান। এতে শত্রুর দুর্গ ধ্বংস হয়ে যায় এবং বেঁচে যাওয়া সেনারা পালিয়ে যায়।
এদিন ওয়াগনার ভাড়াটে বাহিনী দ্বারা পরিচালিত টিম্বাকটু সামরিক বিমানবন্দরকেও আর্টিলারি দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করেন মুজাহিদগণ। ফলে বিমানবন্দরের ভিতরে কয়েকটি স্থান থেকে ধোঁয়া ও আগুনের কুন্ডলী উঠতে দেখা যায়, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ারসার্ভিসের কয়েকটি দল কাজ করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মুজাহিদদের এই আক্রমণেও শত্রু বাহিনী ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।