ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচার চেয়ে ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। ১৯ ফেব্রুয়ারি, সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) দ্বিতীয় তলায় এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটারও শঙ্কা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সোহেল রানার সামনে লুঙ্গি পরে চলাফেরা ও সালাম না দেওয়ার ঘটনায় যবিপ্রবি ক্যাম্পাসের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী মানজুরুল হাসানকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থী যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও হলের প্রভোস্টের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ করেন। মানজুরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। যদিও ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেছে।
এ ঘটনার দুই দিন পর শিক্ষার্থী মানজুরুলের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে সোমবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করা হয়। দুপুরের দিকে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বাইরে থেকে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষার্থীরা ঘেরাও করে এ ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি জানান। উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা পথ ছেড়ে দেন।
এ সময় ৬ দফা দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে দেওয়া হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মানজুরুল হাসানের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা; আগামী তিন দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ও অছাত্রদের হল থেকে বের করা; ৬ ফেব্রুয়ারি ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারীদের বিচারের আওতায় আনা; হলগুলো মাদকমুক্ত রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ফ্লোরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন; শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইনি সহযোগিতা ও মামলার সব ব্যয়ভার বহন করা।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগও সংবাদ সম্মেলন করে বরাবরের মতোই নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তথ্যসূত্র:
১. ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, উত্তেজনা
– http://tinyurl.com/yd9hy5jz