নির্বাচন পরবর্তী মব লিঞ্চিং এর জোয়ারঃ উগ্রবাদী হিন্দুদের লক্ষবস্তুতে ভারতীয় মুসলিমরা

0
196
হিন্দুদের লক্ষবস্তুতে ভারতীয় মুসলিমরা

ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে গণ পিটুনীর ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েই চলেছে। গণ পিটুনীতে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু বানানো শুধু ভারতের সামাজিক কাঠামোকেই কলঙ্কিত করে না বরং জাতিগত বিদ্বেষের ও বহিঃপ্রকাশ।

ভারতে লিঞ্চিং এর অর্থঃ

ভারতে লিঞ্চিং বলতে বিনা বিচারে মানুষ হত্যাকে বুঝায়। সম্প্রতি মুসলিমদের লক্ষ্য করে এই ধরণের ঘটনা চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। গরু হত্যা, গো- মাংস ভক্ষণ বা অন্য কোনো ধর্মীয় কারণে এই সহিংসতার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভিন্ন কন্টেন্ট এর দ্বারাা এই অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে।

বহু বছর ধরেই মুসলিমদের লিঞ্চিং এর ঘটনা রেকর্ড করা হচ্ছে কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে এই ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ঘটনার মাধ্যমেই আন্দাজ করা যায় যে, বর্তমান সরকার প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে এতে মদদ দিচ্ছে। ২০১৫ সালে গরু মাংস ভক্ষণের অভিযোগে আখলাক খানের নৃশংস হত্যার ঘটনা জাতিগত ঘৃণা থেকে বিনা বিচারে হত্যার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়।

নির্বাচন পরবর্তী শুধু ২০২৪ এর জুন মাসের লিঞ্চিং ঘটনা প্রবাহঃ

৭ জুন ২০২৪: ছত্তিশগড়ে গরু বহন করায় দুই মুসলিমকে গণ পিটুনিতে হত্যা।
৯ জুন ২০১৪: উত্তর প্রদেশে জমি নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে মাওলানা ফারুককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
১৬ জুন ২০২৪: ঈদে গরু হত্যার জের ধরে মেদাকে মাদ্রাসা ও মুসলিমদের সম্পদ লক্ষ করে হামলা করা হয়।
১৯ জুন, ২০২৪: উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে ঈদে পশু কোরবানীর ছবি আপলোড করায় একজন মুসলিমের দোকান ভাংচুর করা হয়।
১৯ জুন ২০২৪: আলিগড়ে চুরির সন্দেহে মুসলিমকে মারধর ।
২৭ জুন ২০২৪: মধ্যপ্রদেশে গরু কোরবানীর অভিযোগে দুই মুসলিমের বাড়ী গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
৩০ জুন, ২০২৪: কলকাতায় ইরশাদ আলম নামে এক মুসলিমকে চুরির সন্দেহে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
৩০ জুন, ২০২৪: মুসলিম পরিচয়ের কারণে ডাঃ ইস্তেখার নামক এক মুসলিম ডাক্তারকে মুসলিম উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদে গণপিটুনী।
১ জুলাই ২০২৪: গুজরাটে সালমান ভোরা নামের এক মুসলিমকে কুপিয়ে হত্যা।
৩ জুলই ২০২৪: উত্তর প্রদেশে মুসলিম দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা।
৩ জুলাই ২০২৪: মুর্শিদাবাদে মুনতাজ শেখ নামের এক মুসলিমকে হত্যা করে পুলিশ।
৫ জুলাই, ২০২৪: উত্তর প্রদেশের শামলিতে চুরির সন্দেহে মুসলিমকে কুপিয়ে হত্যা।

ভয়ঙ্কর এইসব গণহত্যা একই প্যাটার্নে সংগঠিত হয়েছে। ইসলামোফোবিয়া ও পরমত অসহিষ্ণুতা এই সকল হত্যাকান্ডে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। যেসকল জনতা এই কাজ করেছে তার মানসিকতায় মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে, ভিত্তিহীন অভিযোগ, গোড়ামী এবং গরু রক্ষায় রাজনৈতিক নেতাদের বাগাড়ম্বরপূর্ণ উক্তি বলে দাবী বিশেষজ্ঞদের।


তথ্যসূত্রঃ
1.Rising Tide Of Lynchings Post Elections: Muslims Targeted In Spate Of Vigilante Violence Across India
-https://tinyurl.com/2x4fuh7c
2.Seven years after Akhlaq’s gruesome murder, his family still waits for justice
-https://tinyurl.com/39jd38hc

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধউৎপাদনে খরচ ১০ টাকা, তবু আলুর দাম ৬০-৭০ টাকা
পরবর্তী নিবন্ধনাইজারে মুজাহিদদের সফল অ্যাম্বুশে অন্তত ৪৬ সেনা নাস্তানাবুদ