আল-কায়েদা পূর্ব আফ্রিকা ভিত্তিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। দলটির সামরিক নেতৃত্ব ঘোষণা করেছে যে, মুজাহিদগণ সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে মোগাদিশু সরকারি বাহিনীর ৩টি সামরিক ঘাঁটিতে একযোগে অভিযান পরিচালনা করছেন।
শাহাদাহ এজেন্সির তথ্যমতে, হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন কর্তৃক পরিচালিত উক্ত ভারী অভিযানটি গত সোমবার সকালে দক্ষিণ সোমালিয়ার জুবা রাজ্যে সরকারি বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে একযোগে চালানো হয়েছে। অভিযানটি কিসমায়ো শহর থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের হারবুলি এলাকা, শহরের ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের বালোহাজি এলাকা এবং ৯৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের মাদু এলাকায় অবস্থিত শত্রু বাহিনীর ৩টি ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। আর এই ঘাঁটিগুলোতে তুর্কিয়ে (তুরস্ক) প্রশিক্ষিত সোমালি স্পেশাল ফোর্সের সদস্য সহ মিলিশিয়া বাহিনীর প্রায় ২৫০০ এরও বেশি সদস্য এই অঞ্চলে শরিয়াহ্ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একত্রিত হয়েছিল।
অঞ্চলটিতে সেনাবাহিনীর এই জড়ো হওয়ার তথ্য পেয়ে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন সামরিক ঘাঁটিগুলো গুড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার ভোর রাতে মহান রবের উপর ভরসা রেখে কয়েক হাজার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্র কয়েক শতাধিক মুজাহিদ একযোগে আক্রমণ চালিয়ে বসেন। মুজাহিদগণ আক্রমণ শুরু করলে শত্রুর আধিক্যতা এবং আধুনিক সমরাস্ত্র মোগাদিশু বাহিনীর কোন কাজে আসেনি। বরং মুজাহিদদের কয়েক ঘন্টার তীব্র আক্রমণে ৩টি এলাকাতেই শোচনীয়ভাবে যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে মোগাদিশু বাহিনী। এসময় মোগাদিশু বাহিনীকে সাহায্যের জন্য আসা সরবরাহ এবং সেনা কনভয়ও মুজাহিদদের অতর্কিত আক্রমণের শিকার হয়। ফলে মোগাদিশু বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায় এবং তারা যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালাতে শুরু করে আর মুজাহিদগণ তাদের অগ্রগতি অব্যাহত রাখেন।
একপর্যায়ে মোগাদিশু বাহিনী সম্পূর্ণরূপে হারবুলি, মাদু এবং বালো-হজি এলাকা ও এখানকার সামরিক ঘাঁটিগুলো ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। ফলে মুজাহিদগণ ৩টি এলাকা ও মোগাদিশু বাহিনীর সামরিক অবস্থানগুলোর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। আর এসব সামরিক অবস্থান থেকে মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে অর্জন করেন অনেক সাঁজোয়া যান, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সামরিক সরঞ্জাম।
প্রাথমিকভাবে এই অভিযানে মোগাদিশু বাহিনীর নিহত সেনা সদস্যের সংখ্যা ৭১ জন বলে নিশ্চিত করেছে হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসন। আর আহতের সংখ্যা নিহতদের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি বলে জানানো হয়েছে। একই সাথে বহু সংখ্যক সৈন্য মুজাহিদদের হাতে বন্দীও হয়েছে।
শাবাব প্রশাসনের বিবৃতি অনুসারে, এই যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর মৃত ও আহতদের মধ্যে এমনসব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং অফিসাররাও রয়েছে, যারা সোমালিয়ায় ইসলামি শরিয়াহ্ আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলির বিরুদ্ধে শুরু করা ক্রুসেড যুদ্ধের নেতৃত্ব পর্যায়ে ছিল।
বিবৃতিতে উপসংহারে বলা হয়েছে: “হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন আল্লাহর কাছে এই অঙ্গীকার করেছে যে, তারা ক্রুসেডারদের এবং তাদের ধর্মত্যাগী সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাদের জিহাদ ততক্ষণ পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন যতক্ষণ না দেশটি আল্লাহর আইন দ্বারা শাসিত হয়।”