স্বামীকে হারানোর পর থেকে আফনানকে ঘিরেই ছিল নাছিমা আক্তারের ভুবন। স্বামীর মৃত্যুর দুই মাস পর একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দুটি কবর ধরে অঝোরে কাঁদছেন তিনি। কবরের একটু দূরে স্বজনরাও হাউমাউ করে কাঁদছেন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্থানীয় লোকজন। ভাইয়ের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে বড় বোন জান্নাতুল মাওয়াও শোকে কাতর।
অভাবের সংসারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন সাদ আল আফনান (১৮)। তিনি ছিলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
লক্ষ্মীপুর শহরে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে গত রোববার (৪ আগস্ট) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে সাদ আল আফনান নিহত হন। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি সালেহ আহমদের ছেলে। শহরের ঝুমুর এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিনই তাকে দাফন করা হয়েছে তার মামার বাড়িতে।
আফনানের মামা হারুনুর রশিদ বলেন, দুই মাস আগে তার বোন নাছিমা সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী স্বামীকে হারিয়েছেন। গত রোববার হারিয়েছেন একমাত্র ছেলেকে। আফনানকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রথমে মাথায় গুলি করে এবং পরে পিটিয়ে হত্যা করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নোয়াখালীতে নেওয়ার পথে বিকাল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর শহরে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে গত রোববার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২। তাদের মধ্যে ছয়জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা চারজন। অন্য দুজনের নাম–পরিচয় জানা যায়নি।
নিহত অন্য তিন শিক্ষার্থী হলেন— লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার ওয়াহেদ বিজয়, শিক্ষার্থী ওসমান গনি, দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. সাব্বির।
তথ্যসূত্র:
১. ‘আফনানকে আ. লীগ ও ছাত্রলীগ মাথায় গুলি মেরে হত্যা করেছে’
– https://tinyurl.com/ytwbzzx3