পাকিস্তানে ইসলামি শরিয়াহ্ শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশটিতে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন সশস্ত্র ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এই লক্ষ্যে দলটির বীর মুজাহিদগণ, গত আগস্ট মাসে পাকিস্তান জুড়ে মার্কিন মদদপুষ্ট সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ২৪৩টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করছেন। এতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অন্তত ৪৪৭ সদস্য হতাহত হয়েছে।
এবিষয়ে গত ১লা সেপ্টেম্বর ভোর ৬টায়, সশস্ত্র দলটির অফিসিয়াল ‘উমর’ মিডিয়া থেকে একটি ইনফোগ্রাফি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুজাহিদগণ বীরত্বপূর্ণ এই অভিযানগুলো পাকিস্তানের ৯টি রাজ্যের মোট ২৫টি জেলায় পরিচালনা করছেন। আর এসকল অভিযানের ৯৮ শতাংশই চালানো হয়েছে দেশের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের ২১টি। এতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অন্তত ২০২ সদস্য নিহত এবং আরও ২৪৫ সদস্য আহত হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর সর্বমোট হতাহত ৪৪৭ সদস্যদের মধ্যে সেনা সদস্য রয়েছে ২৭২ জন, পুলিশ সদস্য রয়েছে ৮৬ জন, এফসি সদস্য ৮৩ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত সদস্য রয়েছে ৬ জন। সেই সাথে টিটিপির মুজাহিদদের হাতে বন্দী হওয়া সামরিক বাহিনীর ৭ সদস্যও রয়েছে।
এসকল অভিযানে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য হতাহতের পাশাপাশি, মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে অর্জন করেছেন ৫টি G3 রাইফেল, ৩টি এলএমজি রাইফেল, ২টি আরপিজি-7 রকেট, ৩টি ক্লাশিনকোভ, ২টি রেডিও, ১টি পিস্তল এবং ১টি স্মার্ট ফোন।
এছাড়াও, উল্লিখিত এক মাসে টিটিপির অভিযানে, ১টি ট্যাংক, ৩৯টি নজরদারি ক্যামেরা, ৫টি ড্রোন ক্যামেরা, ১৭টি সামরিক যান, ৬টি সামরিক ভবন ধ্বংস হয়েছে।
রিপোর্টে অনুযায়ী, ২৪৩টি অপারেশনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১১৩টি অভিযান চালানো হয়েছে স্নাইপার দ্বারা। আর গেরিলা হামলা চালানো হয়েছে ৪২টি, গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে ৩২টি এবং অ্যামবুস করা হয়েছে ২২টি। সেই সাথে প্রতিরোধ মূলক অভিযান চালানো হয়েছে ১১টি, টার্গেট কিলিং অপারেশন করা হয়েছে ৭টি এবং মিসাইল দ্বারা হামলা চালানো হয়েছে ২টি।
টিটিপির অভিযানের এই পরিসংখ্যানটি গত জুলাই মাসের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি। একক কোনো মাস হিসেবে এর আগে টিটিপি সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৪৭টি আক্রমণ চালিয়েছিল গত ২০২৩ সালের আগস্টে। আর চলতি বছরের জুলাইয়ে চালানো হয়েছে ১৪৬টি।
উল্লেখ্য যে, টিটিপির মুজাহিদগণ পাকিস্তানের উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার মতো ৩টি অঞ্চলকে তাদের হামলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। এরফলে দেশে পরিচালিত মোট অপারেশনের ৬০ শতাংশই ঘটছে উক্ত ৩টি জেলাতে।