ছাত্রদল নেতার আশ্রয়ে হলে থাকছে ‘হামলায় অংশ নেওয়া’ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

0
112

গত ১৬ জুলাই রাজধানীর সাইন্সল্যাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল রাজধানী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা’র ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। বর্তমানে কলেজটির আবাসিক হলে এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী অবস্থান করছে। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফিহান আলমের আশ্রয়ে হলে থাকছে তারা। ফিহান কলেজের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।

বর্তমানে ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী হলে অবস্থান করছে তারা হলো- সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান রকি (২০১৬-১৭ সেশন), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম সুজন (২০১৭-১৮ সেশন), ৩নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মিঞা ৩নং সাংগঠনিক সম্পাদক ফাইয়াজ ফারুক (২০১৮-১৯ সেশন) এবং বিগত পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নূর নোমান (২০১৬-১৭ সেশন)।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রদলের আশ্রয়ে হলে অবস্থান করে আগের মতো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে ছাত্রলীগের এসব নেতাকর্মী। এতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্যদিকে, হলে অছাত্র অবস্থান করলেও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

নাম প্রকাশে কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের প্রথমে দাবি ছিল রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকায় আমরা এর আগে অনেক ঝামেলার মধ্যে ছিলাম। যখন আমরা ক্যাম্পাস রাজনীতি বন্ধের জন্য প্রশাসনের কাছে গেলাম তখন নোটিশ দিয়েছিল, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাজনীতি চলবে না বলে। কিন্তু আমরা পরে দেখলাম, ছাত্রদলের নাম ধরে ক্যাম্পাসে কিছু লোক আসছে যারা আমাদের ক্যাম্পাসের বৈধ শিক্ষার্থী না। এরপর আরেকটি নোটিশ দেওয়া হলো, ক্যাম্পাসের বর্তমান শিক্ষার্থী ছাড়া বহিরাগত বা সাবেক শিক্ষার্থী কেউ অবস্থান করতে পারবে না। তখন তারা ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, তখন ছাত্রদল এদেরকে নিজেদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করলো।

তাদের ভাষ্য, ছাত্রদল নিজেদের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দলে ভেড়াচ্ছে। ছাত্রদল তাদেরকে বলেছে, “আমরা তোমাদেরকে পাওয়ার দিবো, তোমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। তোমরা আমাদের দলে আসো। তবে তোমাদের ছাত্রলীগের নাম পরিবর্তন করে ছাত্রদলের নামে আসতে হবে।” এরকম একটা সিচুয়েশন এখন দাঁড়িয়েছে। আগে যেমন সিচুয়েশন ছিল সাধারণ শিক্ষার্থী বা যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতো তারা যেমন কোণঠাসা ছিল, এখন ছাত্রদলেরও সেম অবস্থাটাই করছে। আগের মতোই সবকিছু আছে এখন খালি তারা নাম চেঞ্জ করে লীগ থেকে দলে আসছে। এখন তারা যেটা করছে নিজেদের দল ভারী করার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বলছে, তোমরা যদি আমাদের দলে না আসো তোমাদের ক্যাম্পাসে আসতে দেবো না। আমরা এখন আগের মতো সবাই কোণঠাসা হয়ে গেছি।

তারা আরও জানায়, ক্যাম্পাসে আবার সেই আগের মতো লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি শুরু হয়েছে। তারা এখন রাজনৈতিক ট্যাগ ব্যবহার করে প্রেসার ক্রিয়েট করছে, যা সাফার করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগ আবারও ক্যাম্পাসে আসায় যারা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল তারা ক্যাম্পাসে ভয়ে ঢুকতে পারছে না। তাহলে আমাদের কী লাভ হলো? আমরা এখনও ক্যাম্পাসে পরাধীনই আছি।


তথ্যসূত্র:
১. ছাত্রদল নেতার আশ্রয়ে হলে থাকছেন ‘হামলায় অংশ নেয়া’ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
– https://tinyurl.com/48t7nrkj

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭ই অক্টোবর, আফগানিস্তানের ইতিহাসে অন্যতম একটি কালো দিন
পরবর্তী নিবন্ধসোমালিয়ায় ইলদির যুদ্ধে শাবাবের হামলায় ৬২ শত্রু সেনা হতাহত