আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী ছিল সাইফুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে সে লন্ডনে বিলাসবহুল বাড়িতে বসবাস করছে বলে আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সাইফুজ্জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আদালত, কিন্তু এখন তাকে দেখা গেল লন্ডনে, ১৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বাড়িতে বসবাস করছে আরামে।
আল-জাজিরা জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্রিটেনে পাচার করেছে। সম্প্রতি আল-জাজিরা সাইফুজ্জামানের একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে তাকে লন্ডনের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের সামনে হাঁটতে দেখা যায়। আল-জাজিরা বলছে, তার এই অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৯ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু যুক্তরাজ্যে তার যে বিশাল সাম্রাজ্য রয়েছে, এটি তার ক্ষুদ্রতম একটি অংশ মাত্র।
যুক্তরাজ্যের ঐ অ্যাপার্টমেন্টগুলো ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আমেরিকায় তার আরও শত শত সম্পদ রয়েছে। আল জাজিরার অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বজুড়ে আওয়ামী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে কেবল ব্রিটেনেই ৩৬০ এর অধিক বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছে সাইফুজ্জামান। তবে প্রকৃত সম্পত্তির পরিমাণ আরও অনেক বেশি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের জানায়, “সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামান এবং তার সন্তানদের মোট ৭২৩টি বাড়ির দালিলিক প্রমাণ বের করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আর এসবের মোট মূল্য ছাড়িয়েছে ৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
২০২৩ সালে ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাইফুজ্জামানের ২৫০টিরও বেশি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এগুলোর মূল্য ১৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সাইফুজ্জামানের স্ত্রী রুখমিলা জামানের দুবাইয়ে এমন আরও ৫০টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, যেগুলোর মূল্য ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়ে বেশি।
সাবেক এই আওয়ামী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান এবং তার স্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৭০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩০০টির বেশি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছে। বিশ্বজুড়ে এই আওয়ামী দম্পত্তি ৬০০ এর বেশি প্রোপার্টিজের মালিক বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
একজন নাগরিক বাংলাদেশ থেকে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার নেওয়ার আইনী বৈধতা রয়েছে। কিন্তু সাইফুজ্জামান এসব আইনের তোয়াক্কা না করে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতিবাজ এসব এমপি-মন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের অর্থ-সম্পদ লুট করে বিদেশে নিজেদের নিরাপদ আবাস্থল তৈরি করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বানিয়ে গিয়েছে বিকলাঙ্গ। বাংলাদেশের মানুষ নিজ দেশে এক খণ্ড ভূমি কিনতে ভূমি অফিসে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়, লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া ছাড়া কাজ হয় না; এদের কারণেই। এদেশের মানুষের এসব অর্থ-সম্পদ লুট করেই ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানরা বিদেশে নিজেদের বিলাসবহুল আশ্রয় নির্মাণ করেছে।
তথ্যসূত্র:
১. Former Bangladesh Minister of Land living in London despite travel ban
– https://tinyurl.com/3dud3aht
২. https://tinyurl.com/4f8evkjb