মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলা যুবদলের সদস্য ও মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব লুৎফর রহমান পাভেল মোল্লার নেতৃত্বে এলাকায় দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব দখল-চাঁদাবাজিতে পাভেল মোল্লার সহযোগী হিসেবে রয়েছে মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম গাউস সিদ্দিক, যুবদল নেতা ওমর ফারুক লিমন, মো. শিবলু, মেদিনীমণ্ডল ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহ আলম মোল্লা, মেদিনীমণ্ডল ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা সিরাজুল মাদবর, যুবলীগ নেতা খলিল ব্যাপারী প্রমুখ। ৫ আগস্টের পর সিরাজুল মাদবর ও খলিল ব্যাপারীকে বিএনপির নেতা বানানো হয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতো পাভেল মোল্লা। পরে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে ইতালি পাড়ি জমায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে এসে বিকল্পধারার রাজনীতি করে। ২০০৯ সালে অর্থের প্রভাব খাটিয়ে মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হয়।
এলাকাবাসী আরও জানায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ অক্টোবর মেদিনীমণ্ডল ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অফিস দখল করে সেখানে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি অফিস উদ্বোধন করে পাভেল মোল্লা। ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল মাদবর ও খলিল ব্যাপারীরা আওয়ামী লীগ থেকে রাতারাতি বিএনপি নেতা হয়ে যায় পাভেল মোল্লার ছত্রচ্ছায়ায়। ক্লাব উদ্বোধনের সময় মেদিনীমণ্ডল ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সোলেমান কমান্ডারের ছেলে সোহেলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেয় এবং আওয়ামী লীগ নেতা সাথী মির থেকে ১ মণ গরুর মাংস আদায় করে ক্লাব উদ্বোধনের অনুষ্ঠান করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাভেল মোল্লার লোকজন মাওয়া মাছ ঘাট থেকে প্রতিদিন ৮ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করে। এতে সহযোগিতা করে যুবদল নেতা শিবলু, অনীক, শওকত, সাগররা। মাওয়া মাছ বাজারের ইজারাদার মহাদেবের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা তারা মাদবরের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা এবং আওয়ামী লীগ নেতা বালু ব্যবসায়ী আবু বক্করের কাছ থেকে দুইবারে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর নেতৃত্বে মাওয়া টোল প্লাজা এলাকা থেকে অটোরিকশা, মিশুক ও সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে শিবলু, অনীক, সাগর দৈনিক চাঁদা আদায় করে। রাতের আঁধারে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন তার দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত ২০ অক্টোবর রাতে ইউনিয়নের জশলদিয়া নতুন বাজারের রাস্তা থেকে পাভেল মোল্লার সহযোগী হত্যা ও ছিনতাই মামলার আসামি মিঠু মোল্লা ইউনিয়নের সবুজ গ্রামের বাসিন্দা ওমর ও জলিলের কাছ থেকে অটোরিকশা থামিয়ে ৮০ হাজার টাকার মাছ ছিনিয়ে নেয়।
মাছ ছিনতাইয়ের বিষয়ে জেলে ওমর ফারুক তার ভিডিও বক্তব্যে বলেন, ‘পাভেল মোল্লার ভাতিজা মিঠু মোল্লা মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের মিশুক গাড়ি থামিয়ে দুই ট্রে মাছ নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় বলে “তোরা যাগা, নাইলে পুলিশে দিয়া দিমু।”
তথ্যসূত্র:
১. সিরাজদিখানে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগ
– https://tinyurl.com/2z5z2yta