সীতাকুণ্ড চলতো আওয়ামী নেতা মামুনের ইশারায়

0
45

উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর এস এম আল মামুনের আসল রূপ বেরিয়ে আসে। উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক এ সময় থেকে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।

নির্বাচনের বিশাল খরচের অজুহাতে সীতাকুণ্ডের শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে সে পাঁচ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা করে ১০ কোটি টাকার বেশি চাঁদা তোলে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অপকর্মের মূল সহযোগী ছিল তার ব্যক্তিগত সহকারী যুবলীগ নেতা সাইদুর রহমান মারুফ।

নির্বাচনে জয়ের পর মামুনের প্রশ্রয়ে পিএস মারুফ আরো ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি শুরু করে। স্থানীয় প্রশাসনকে পুরোপুরি জিম্মি করে ফেলে মারুফ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সাবরেজিস্টার—এমন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে উপজেলার প্রতিটি টেন্ডার, পিআইও দপ্তরের প্রকল্পের কাজ বাগাতে থাকে। চলে ত্রুটিপূর্ণ নথিপত্রে নামজারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য।

সরকারি অর্থের ব্যাপক লুটপাটের বিষয়ে কিছু সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, সৈয়দপুর, বাড়ৈয়াঢালা, বাড়বকুণ্ডসহ প্রতিটি ইউনিয়নে এমন অনেক রাস্তা আছে, যেগুলোর নির্মাণ অথবা সংস্কারের নামে প্রতিবছরই কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতো। এই টাকার একটি কমিশন মারুফের মাধ্যমে চলে যেত মামুনের কাছে। বাকি টাকা থেকে বিভিন্ন দপ্তর, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় নেতারা কমিশন নিয়ে টাকা ভাগ করতো। এভাবে দুই মেয়াদে ১০ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে টেন্ডারবাজি, দখলবাজিসহ বিভিন্ন এলাকার বৈধ-অবৈধ কাজ থেকে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয় মামুন।

এসব চাঁদাবাজির টাকায় চট্টগ্রাম শহরে একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট, মার্কেটে দুটি দোকান ও বড় ফিশিং ট্রলার এবং কক্সবাজারে কয়েক শ কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করে বিলাসবহুল তারকা রিসোর্ট।

এলাকাবাসী জানায়, ১০ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় সাবেক এমপি মামুন যেমন শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে, তেমনি পাটকাঠি থেকে বৃক্ষ হয়েছে তার পিএস মারুফ।

নির্বাচনী বিভিন্ন হলফনামায় মামুন নিজের সম্পদের বেশির ভাগ তথ্য গোপন করেছে। তবুও ২০২৪ সালের নির্বাচনী হলফনামায় মামুন স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছে ২৯ কোটি ৮২ লাখ ২২ হাজার ৩৬৫ টাকা। এর আগে ২০১৯ সালে তার স্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ৮৯ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ টাকা। এ হিসাবে পাঁচ বছরে তার স্থাবর সম্পদ বেড়েছে ২৮ গুণের বেশি। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামেও দেখানো হয়েছে কোটি কোটি টাকা। তার স্ত্রীকে নামে মালিকানায় রাখা হলেও প্রকৃতপক্ষে সে কোনো ব্যবসায়ী নয় বলে জানা গেছে।


তথ্যসূত্র:
১. সাবেক এমপি মামুনের ইশারাতেই চলতো সীতাকুণ্ড
– https://tinyurl.com/mus6ruuk

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধচলতি ৯ মাসে ২৫৭ মিলিয়ন ডলার শুকনো ফল রপ্তানি করেছে ইমারতে ইসলামিয়া
পরবর্তী নিবন্ধচলতি ৯ মাসে ৭৩৭ মিলিয়ন ডলার কৃষিপণ্য রপ্তানি করেছে ইমারতে ইসলামিয়া