প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে ভয়ংকর গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে ভারত। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এসব গুপ্তহত্যার তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন সময় ভারতের ওপর অথবা তাদের এজেন্টের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের এখন পাকিস্তানি ও আফগান এজেন্টের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি, যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে ২০২১ সালে শুরু হয়েছে।
আমির সরফরাজ নামে এক ব্যক্তি ২০১১ সালে লাহোর কারাগারে এক ভারতীয় গুপ্তচরকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সরফরাজকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করে ভারত। এ ঘটনার পরপর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলে, সম্প্রতি কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যেগুলোর সঙ্গে সরাসরি ভারতের সম্পৃক্ততা আছে।
২০২১ সাল থেকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) একটি পদ্ধতিগত গুপ্তহত্যার প্রোগ্রাম চালু করেছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের মাটিতে অন্তত ছয়জন মানুষকে হত্যা করেছে র। শুধু তাই নয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় খালিস্তানপন্থি শিখ নেতাদেরও হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে তারা। গুপ্তহত্যার বিষয়টি সফল হয় কিনা, সেটি দেখতে ভারত পাকিস্তানে পরীক্ষা চালিয়েছে। এরপর তারা পশ্চিমা দেশগুলোতে গিয়ে শিখ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছে।
পাকিস্তানের এক কর্মকর্তা বলেছে, তাদের দেশে ভারত যেসব গুপ্তহত্যা চালিয়েছে, সেগুলোর বিস্তারিত এর আগে আর এভাবে প্রকাশ করা হয়নি। কারণ এতে করে তাদের গোয়েন্দা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কিন্তু অনেকে বিষয়টি আর চেপে রাখতে চাইছেন না। তারা মনে করেন, ভারত যে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে, সেটি ফাঁস করে দেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ভারতের গুপ্তহত্যা চেষ্টার বিষয়টি সামনে আসার আগেই পাকিস্তানের গোয়েন্দা প্রধান নাদিম আঞ্জুম ২০২২ সালে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান উইলিয়াম জে বার্নসকে এ ব্যাপারে জানিয়েছিল।
এ ছাড়া ওয়াশিংটন পোস্ট এমন ১০ জনের বিষয়ে জানতে পেরেছে, যাদের ভারত সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল এবং পরে তারা হত্যার শিকার হয়েছে। তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে খুব কাছ থেকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে।
ওয়াশিংটন পোস্ট অন্য এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করেছিল দেশটির বিরোধী দল। এজন্য ভারতের কাছ থেকে ৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চাইত তারা। এসব অর্থ মুইজ্জুর নিজ দলের ৪০ এমপি, উচ্চপদস্থ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা এবং শক্তিশালী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ঘুষ হিসেবে দেওয়া হতো। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহারের পরই বিরোধীরা নয়াদিল্লির সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
তথ্যসূত্র:
1. In Indias shadow war with pakistan, a campaign of covert killing
– https://tinyurl.com/3wbft8nk
2.WaPo report lays bare India’s campaign of killings on Pakistani soil
– https://tinyurl.com/pbr89ym6