
পশ্চিম আফ্রিকার একাধিক অঞ্চলে সামরিক অপারেশন তীব্র করে তোলেছে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম)। এমন পরিস্থিতিতে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলগুলোতে শত্রু বাহিনীকে দ্রুত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন।
গত ২৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ (শনিবার), এক বিবৃতিতে আফ্রিকান ইউনিয়ন “পশ্চিম আফ্রিকার জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জরুরি সহযোগিতার” এই আহ্বান জানিয়েছে।
আফ্রিকান জোট বাহিনীর এই আহ্বানটি এমন এক সময় এসেছে, যখন নাইজার এবং বুরকিনা ফাসোর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সম্প্রতি সেনা অবস্থান লক্ষ্য করে মুজাহিদদের হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিন, বুরকিনা ফাসো, মালি এবং নাইজারে যখন মুজাহিদিনরা ধারাবাহিক বড় ধরনের সফল অভিযান চালাচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় এই অঞ্চলে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মুজাহিদদের কয়েকটি অভিযানেই ২৮৫ এরও বেশি শত্রু সৈন্য নিহত হয়েছে।
এরমধ্যে উত্তর বেনিনে ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদদের এক অভিযানেই ৭০ সৈন্য নিহত হয়েছে। বুরকিনা ফাসোতে মুজাহিদদের ৪টি অভিযানে ৯০ শত্রু সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও মালি এবং নাইজারে মুজাহিদদের ৬টি পৃথক অভিযানে আরও ২৫ এরও বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে।
বেনিনের সরকার এই হামলাগুলোকে “নাইজার এবং বুরকিনা ফাসো থেকে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনা” হিসাবে বর্ণনা করেছে। এসকল হামলার নিন্দা জানিয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান মাহামুদ আলী ইউসুফ জানায়, এই হামলা “সাহেলে লড়াইরত মুজাহিদদের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলায় প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার জরুরি প্রয়োজনীয়তা প্রদর্শন করে।”
এদিকে বেনিনের সরকার বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারের জান্তা সরকারগুলোকে এই অঞ্চলে মুজাহিদদের অগ্রগতি রোধে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সমালোচনা করেছে। বিপরীতে বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারের জান্তা সরকার অভিযোগ করেছে যে, বেনিন সরকার “তাদের দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বেনিনে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে”।
এটা লক্ষণীয় যে, জামাআত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, মুজাহিদিনরা মালি থেকে দক্ষিণে তাদের কার্যকলাপের ক্ষেত্র বাড়িয়েছে, যা বুরকিনা ফাসোর উত্তরে তীব্রভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর বর্তমানে মুজাহিদিনরা পশ্চিম আফ্রিকার অভ্যন্তর থেকে উপকূলরেখার দিকে সম্প্রসারণের কৌশল অনুসরণ করছেন। এতে এই অঞ্চলে উপকূলরেখা বরাবর পশ্চিমা শক্তির, বিশেষ করে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের আগ্রহের কেন্দ্রস্থল এবং সামরিক ঘাঁটিগুলো খুব সহজেই মুজাহিদদের হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠতে পারে।
তথ্যসূত্র:
– https://tinyurl.com/mtjf5txe