কাশ্মীরে তিন দশকে ৯৬ হাজার মুসলিমকে হত্যা করেছে ভারতীয় বাহিনী

0
127

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম জনগণ ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকেই দখলদার বাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। নিজেদের ধর্ম, ভাষা আর সংস্কৃতি রক্ষার চেষ্টাই তাদের বারবার ঠেলে দিয়েছে দমন-পীড়ন আর সহিংসতার মুখে। মানবাধিকার লঙ্ঘন এখানে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সময়ের সাথে সেই নিপীড়নের মাত্রা শুধু বেড়েই চলেছে।

কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর হাতে গণহত্যা ও নির্যাতনের সূচনা মূলত ১৯৮৮-৮৯ সাল থেকে, যখন স্থানীয় জনগণ দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করে। সেই থেকে আজ তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও, ভারতের সেনারা ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের’ নামে দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।

ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কাশ্মীরে নিহত হয়েছেন ২৩,৮৪৮ জন। বছরে গড়ে ৬৬০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের প্রায় সবাইকেই ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে এই হত্যাযজ্ঞ বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করে ভারত।

কিন্তু কাশ্মীরের সংবাদ সংস্থা কেএমএস-এর তথ্য আরও ভয়াবহ। তাদের হিসেব অনুযায়ী, ১৯৮৯ থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন মোট ৯৬,৪২৩ জন কাশ্মীরী মুসলিম। গড়ে প্রতি বছর প্রাণ গেছে ২,৬৭৮ জনের, যা সরকারি সংখ্যার প্রায় চারগুণ।

এই নৃশংসতা শুধু হত্যায় থেমে নেই। কেএমএস-এর নথি বলছে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে প্রাণ গেছে ৭,৩৭৯ জনের, বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে ১,৭৩,৪৫৬ জন নিরীহ কাশ্মীরীকে। এই দমননীতির শিকার হয়ে বিধবা হয়েছেন ২২,৯৮১ নারী, এতিম হয়েছেন ১,০৭,৯৭৭ শিশু। শুধু তাই নয়, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১১,২৬৭ কাশ্মীরী নারী। এই সংখ্যা শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং এক জনগোষ্ঠীর উপর যুগপৎ সামরিক, সামাজিক ও মানসিক নিপীড়নের নথি।

তবে এই সব নিপীড়নের মধ্যেও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের মনোবল ভাঙেনি। বরং প্রতিটি রক্তাক্ত ঘটনা আরও গভীর করে তুলেছে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা। সেনা অভিযান, গুম, ঘরবাড়ি ধ্বংস কিছুই তাদের স্বাধীনতার দাবিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।


তথ্যসূত্র:
1. India’s state terrorism in Kashmir is ongoing
– https://tinyurl.com/3vuabp4y

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাশ্মীরে ভারতের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে এপ্রিল মাসে নিহত ৯, আটক প্রায় আড়াই হাজার
পরবর্তী নিবন্ধইয়েমেনে শত্রু বাহিনীর কমান্ড সেন্টার সহ ৩টি অবস্থানে মুজাহিদদের সফল অভিযান