কৃষিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ইমারতে ইসলামিয়া সরকার: মোল্লা আব্দুল গণি বারাদার

0
28

ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান কৃষি খাতকে শুধু খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি কৌশলগত স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করছে। খনিজ, যোগাযোগ এবং বাণিজ্যের পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক শিল্পেও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে আফগান সরকার। এই ধারাবাহিকতায় রাজধানী কাবুলের ইস্তালিফ এলাকায় একটি আধুনিক কিশমিশ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার উদ্বোধন করা হয়েছে, যার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১০ হাজার টন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গণি বারাদার (হাফিযাহুল্লাহ)। তিনি বলেন, ‘এই কারখানার মাধ্যমে কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন সম্ভব হবে, যা স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা করবে, আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি বাড়াবে এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইমারতে ইসলামিয়া কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করছে। পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মোল্লা বারাদার জানান, দেশি কৃষিপণ্যের প্রচারে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, রপ্তানি সহজ করতে নতুন বাজার সৃষ্টি করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত পণ্যের বিকল্প আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দেশীয় কৃষিপণ্য ব্যবহারে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। উন্নত সেচ ব্যবস্থাপনা, হিমাগার, প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ও আধুনিক প্যাকেজিং ব্যবস্থার বিকাশে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।’

রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্যের মান ও আধুনিক প্যাকেজিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এসব উপাদান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আফগানিস্তানের অবস্থান সুদৃঢ় করতে সহায়ক হবে এবং দেশের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াবে।’

আঞ্চলিক সংযোগ প্রসঙ্গে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইমারতে ইসলামিয়া রেলপথ সম্প্রসারণসহ আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতিবেশী এবং অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, আফগানিস্তানকে ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশাধিকার দিতে লাজভরদ করিডোরের পূর্ণাঙ্গ কার্যকরীকরণে কাজ চলছে এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে ইকো সংস্থার সাম্প্রতিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে আফগান সরকার।

বক্তৃতায় ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে ব্যক্তিখাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার কৃষি, খনিজ, জ্বালানি, যোগাযোগ, পরিবহন ও সেবাখাতে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে।’

উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি কিশমিশ প্রক্রিয়াকরণ খাতের উদ্যোক্তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং তাদের সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। আমি অনুরোধ করছি, উৎপাদনের পরিমাণের তুলনায় গুণগত মান এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্যাকেজিংকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।’


তথ্যসূত্র:
1. Raisin Processing Factory with an Annual Capacity of 10,000 Metric Tons Inaugurated
– https://tinyurl.com/mrpu7knu

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজধানী মোগাদিশুর উপকন্ঠে আশ-শাবাবের তীব্র পাল্টা আক্রমণ: হতাহত অন্তত ৫৪ উগান্ডান ক্রুসেডার
পরবর্তী নিবন্ধমালিতে মুজাহিদদের অতর্কিত আক্রমণের শিকার রাশিয়ার সামরিক কনভয়: হতাহত কয়েক ডজন