
গাজায় জায়োনিস্ট বাহিনীর উপর আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদিনরা বুধবার সময়ের সবচেয়ে বড় সাহসী হামলা চালিয়েছেন। এতে বহু সংখ্যক জায়োনিস্ট সৈন্য নিহত এবং বেশকিছু মেরকাভা ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গেছে।
আল-কাসসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে যে, ২০ আগস্ট বুধবার সকালে, মুজাহিদিনরা দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় বৃহৎ পরিসরে একটি সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেছেন। আল-কাসসাম ব্রিগেডের একটি পদাতিক প্লাটুন এই অভিযানে অংশ নেন। মুজাহিদিনরা খান ইউনিস শহরের দক্ষিণ-পূর্বে জায়োনিস্ট বাহিনীর নবনির্মিত একটি ঘাঁটি লক্ষ্য অভিযানটি শুরু করেন।
আল-কাসসাম ব্রিগেডের ২০ সদস্যের উক্ত পদাতিক ব্যাটালিয়নের মুজাহিদদের একটি অংশ প্রথমে সরাসরি শত্রুর সামরিক অবস্থানটি লক্ষ্য করে অতর্কিত আক্রমণ চালান। এসময় মুজাহিদিনরা শত্রু ঘাঁটি লক্ষ্য করে একাধিক শাওয়াজ শেল, কমান্ডো অ্যাকশন ডিভাইস এবং আল-ইয়াসিন-১০৫ রকেট দিয়ে আক্রমণ চালান। শত্রু সৈন্যদের পাশাপাশি মুজাহিদদের এসকল হামলার সফল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় জায়োনিস্ট বাহিনীর “মেরকাভা ৪” ধরণের বেশ কয়েকটি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যান।
এদিকে এলাকায় অবস্থান নেওয়া দখলদার সৈন্যদের ও সামরিক ঘাঁটি সুরক্ষিত রাখতে জায়োনিস্ট বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। দখলদার সৈন্যরা উক্ত বাড়িগুলোকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে দূর্গ হিসাবে ব্যবহার করে। ফলে অভিযানে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের অন্য একটি অংশ উক্ত বাড়িগুলো লক্ষ্য করে ছয়টি অ্যান্টি-ফোরটিফিকেশন ও অ্যান্টি-পার্সোনেল শেল নিক্ষেপ করে ভারী বিস্ফোরণ ঘটান এবং মেশিনগান ব্যবহার করে শত্রু সৈন্যদের টার্গেট করে গুলি করেন।
এরপর বেশ কয়েকজন মুজাহিদ বাড়িগুলিতে হালকা অস্ত্র এবং হাতবোমা দিয়ে পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শত্রু সৈন্যদের টার্গেট করে আক্রমণ করেন। মুজাহিদদের এই সাহসী আক্রমণে বেশ কিছু জায়োনিস্ট সৈন্য নিহত হয়।
এসময় আল-কাসসাম যোদ্ধারা জায়োনিস্ট বাহিনীর “মেরকাভা ৪” ট্যাংকের এক কমান্ডারকে লক্ষ্য করে সফলতার সাথে গুলি করেন। এতে সে মারাত্মকভাবে আহত হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে জায়োনিস্ট বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করার লক্ষ্যে মুজাহিদিনরা আশেপাশের জায়গাগুলিতেও ভারী মর্টার শেল ছোড়েন, যেখান থেকে শত্রু বাহিনীকে সহায়তার জন্য অন্য জায়োনিস্ট সৈন্যদের আসার সম্ভাবনা ছিলো।
সবশেষে জায়োনিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের নিরাপদে প্রত্যাহার নিশ্চিত করার জন্য, সংঘর্ষের স্থানটিতে আরও মর্টার শেল দিয়ে গোলাবর্ষণ করা হয়, যতক্ষণ না মুজাহিদিনরা সরে পড়তে সক্ষম হন।
এরপর জায়োনিস্ট বাহিনীর উদ্ধারকারী দলগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, যাদের আগমনের অপেক্ষায় ঘটনাস্থলে একজন ইস্তেশহাদী মুজাহিদ বেশ কিছু সময় ধরেই অপেক্ষা করছিলেন। শত্রু সৈন্যদের আগমনের পরপরই, উক্ত ইস্তেশহাদী মুজাহিদ হালকা অস্ত্র এবং হাতবোমা দিয়ে শত্রু বাহিনীকে টার্গেট করতে করতে তাদের একেবারেই নিকটে চলে যান। এরপর এই বীর মুজাহিদ তার সাথে থাকা শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইসগুলো জায়োনিস্ট সৈন্যদের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটান। ফলশ্রুতিতে শত্রু বাহিনীর উদ্ধারকারী দলের মধ্যে বহু সংখ্যক সৈন্য হতাহত হয়।
দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে মুজাহিদদের হামলায় জায়োনিস্ট বাহিনীর বেশ কয়েকটি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যান ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সাথে অনির্দিষ্ট সংখ্যক অফিসার ও সৈন্য নিহত ও আহত হয়। দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুজাহিদদের বজ্রপাতপূর্ণ এই আক্রমণেন পর, হতাহত জায়োনিস্ট সৈন্যদের উদ্ধার করতে একাধিক সামরিক হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে অবতরণ করে।
তথ্যসূত্র:
– https://tinyurl.com/mt3n5xz5


