
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ও জুলাই ৩৬ আন্দোলনের মুখ্য কারিগর শহীদ জাতীয় বীর আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বদলানোর চেষ্টা করেছিল রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তৎকালীন এসবি শাখার এসপি আবু বক্কর সিদ্দিক।
এ অভিযোগে রংপুরে ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রকাশ্যে পুলিশ তাকে গুলি করে। পরে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাজিবুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, তাকে একাধিকবার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বদলাতে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেয়া হয়েছিল।
ড. রাজিবুল গণমাধ্যমকে জানান, রংপুর মেডিকেলের ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে এসপি সিদ্দিক, মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি মারুফ এবং স্বাচিপ নেতা ড. চন্দন তাকে মাথায় আঘাতজনিত মৃত্যুর তথ্য যুক্ত করতে চাপ দেয়। এমনকি বিদেশ ভ্রমণ ও পারিবারিক সুযোগ-সুবিধার প্রলোভনও দেয়া হয়। তবে তিনি সত্য বিকৃত না করে মূল রিপোর্টে শরীরে পাওয়া গুলির আঘাত এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রংপুর মেডিকেলের স্বাচিপ সভাপতি ড. চন্দন তাকে পেশাগত প্রলোভন দেয় উল্লেখ করে চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম বলেন, ড. চন্দন আমাকে বলে, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) তোমার ব্যাপারে কনসার্ন। তোমার ব্যাপার আমরা দেখব। পুলিশ যেভাবে চায় সেভাবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দাও।
কিন্তু এতকিছুর পরেও আমি আমার জায়গা থেকে সরে যাইনি। সর্বশেষ দেয়া পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আমি আবু সাঈদের শরীরে পিলেট ইনজুরির বর্ণনা দেই। তবে রিপোর্টে ‘গান শর্ট’ শব্দটা লিখিনি। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম।’
ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অভিযোগ করেন, প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো সত্ত্বেও দোষীদের রক্ষা করতে পুলিশি মহল মামলাকে ভিন্নখাতে নিতে চেয়েছিল।
তারা হুঁশিয়ারি দেন— এসপি আবু বক্কর সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে আবারও আন্দোলনে নামবেন।
তথ্যসূত্র:
১. শহীদ আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত বদলাতে চাওয়া সেই এসপি বহাল তবিয়তে
– https://tinyurl.com/yurws2cp


