সংসদ নির্বাচনে সামনে রেখে দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে আসছে মাদক ও অস্ত্র

0
0

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে মাদকের সঙ্গে আসছে বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় অস্ত্র। সীমান্ত পথে ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা এসব অস্ত্র হাত বদল হয়ে সরবরাহ হচ্ছে সারা দেশে অপরাধীদের হাতে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব অস্ত্র ব্যবহার হলে বাধাগ্রস্ত হতে পারে নির্বাচনি কার্যক্রম। তবে সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা এসব অস্ত্রের চালানের দুই-একটি অস্ত্র উদ্ধার ও পাচারকারীদের অনেকেই আটক হলেও অস্ত্র ব্যবসার মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ, বিলগাতুয়া, জামালপুর, মহিষকুন্ডি, ঠোটারপাড়া, মুন্সীগঞ্জ. চল্লিশপাড়া, চরপাড়া, আতারপাড়া, উদয়নগর ও বাংলাবাজারসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের সঙ্গে আসছে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ইউএস’র তৈরি অত্যাধুনিক পিস্তল, সেভেন এমএম পিস্তল, নাইন এমএম পিস্তল, এলজি, ওয়ান শুটারগানসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র। অবৈধভাবে চোরাইপথে ভারত থেকে আসা বিভিন্ন প্রকার মাদকের মধ্যে রয়েছে ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা ও এলএসডি। এসবের সঙ্গে অস্ত্রও আসছে। আর এসব অস্ত্র পাচারের নেপথ্যে জড়িত রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাদক পাচারের সঙ্গে অস্ত্রের চালান পাচার করে থাকে।

গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যমতে ওইসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে বেশ কয়েকটি চালানে প্রায় তিন হাজার বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র পাচার হয়েছে। আর চোরাপথে মাদকের পাশাপাশি এসব অস্ত্রের চালান পাচারে জড়িতদের মধ্যে দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্তসংলগ্ন জামালপুর, পাকুড়িয়া ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের আরিফ, লালু, সোহান, সুমন, নাজমুল, টুকন ও বিলা এবং হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের কায়ামারী গ্রামে চঞ্চল উল্লেখযোগ্য। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এরা এসব অস্ত্রের চালান দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছে এবং এ ধরনের কাজ অব্যাহত রেখেছে তারা।

২০২৪ ’র ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও নাজুক হলে এ সীমান্ত দিয়ে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বেড়ে যায়। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণ হলে বিজিবি, পুলিশ ও যৌথবাহিনীর অভিযানে গত ১৬ মাসে ৩৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৩৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয় এবং আটক হয় ২৮ জন মাদক ও অস্ত্র পাচারকারী চক্রের সদস্য।

সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র পাচারের বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান শেখ বলেন, অস্ত্র পাচারের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে দৌলতপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সবকিছুই স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি দুই মাস হলো এখানে এসেছি, অস্ত্রের চালান পাচারের বিষয়ে শুনেছি, তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সবকিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বিজ্ঞপ্তি মারফত জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভবিষ্যতেও মাদক, অস্ত্র ও বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ও কার্যকর অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সীমান্তে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ভারত থেকে চোরাপথে পাচার হয়ে আসা এসব অস্ত্র নির্বাচনের জন্য হুমকি হতে পারে এমনটি সচেতন মহলের অভিমত। তাই প্রয়োজন অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর অভিযান এবং অস্ত্রের চালান পাচারে জড়িত গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা।


তথ্যসুত্রঃ https://tinyurl.com/5y8hzkkz

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক বাল্ব–এক ফ্যানেই ৫৫ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল