ভারতের বিহার রাজ্যে ঐতিহাসিক শমশের খান সমাধি ভাঙচুর, যত্ন ও নিরাপত্তার অভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত

0
21

ভারতের বিহার রাজ্যের আওরঙ্গবাদ জেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক শমশের খান সমাধি ভাঙচুর করা হয়েছে, এটি বর্তমানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে দুটি সমাধি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) এর অধীনে একটি সুরক্ষিত স্মৃতিসৌধ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও এটির যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় নি। এই ঘটনা স্থানীয় মুসলিম, ইতিহাসবিদ ও সোশ্যাল এক্টিভিস্টদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর এক রক্ষী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবগত করার পর ভাঙচুরের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। উক্ত সমাধির নির্মূল হওয়া মুসলিমদের ঐতিহাসিক স্থানসমূহের নিরাপত্তা সম্পর্কে আশঙ্কা আরও জোরদার করেছে। ভারতে মুসলিমদের ঐতিহ্য আজ অরক্ষিত, এগুলো হামলার শিকার হওয়া একটি সহজাত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটন স্থান হওয়া সত্ত্বেও ঐতিহাসিক এই সমাধি কোন ধরনের যত্ন ও নিরাপত্তা ছাড়াই পড়েছিল। ওয়াসিম আওরঙ্গবাদী নামে একজন সুপরিচিত সোশ্যাল এক্টিভিস্ট বলেন, এই জায়গাটি রক্ষা করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কর্ণপাত করে নি। ফলস্বরূপ পুরো কমপ্লেক্সটি ধীরে ধীরে অপরাধীদের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বেদনাদায়ক এই ঘটনার জন্য সরকারি অবহেলাকে তিনি দায়ী করেছেন। এই ভাঙচুর কেবল কিছু পাথরের ক্ষতি নয়, বরং এটি ইতিহাসের উপর হামলা।

বাসিন্দারা বলছেন, এক সময় এই সমাধি ‘মিনি তাজমহল’ নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ছিল। কিন্তু যত্নের অভাবে ধীরে এই এলাকা মাদক সেবনকারীরা দখল করতে শুরু করে, ফলে সময়ের সাথে সাথে এটি দর্শনার্থীদের মনোযোগ হারায়। পর্যটন স্পটটি অনিরাপদ হয়ে পড়ায় লোকজন পরিবারসহ এখানে আর ঘুরতে আসে না।

উল্লেখ্য যে, শমসের খান এর প্রকৃত নাম ছিল ইব্রাহিম খান কুরেশি। তিনি ফৌজদার হিসেবে উক্ত অঞ্চলে সেবা করেছিলেন এবং শান্তি বজায় রাখতে অবদান রেখেছেন। পরবর্তীকালে তিনি শমসের খান উপাধি লাভ করেন এবং মুঘল যুবরাজ আজিম-উল-শানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ১৭০২ সালে তিনি বিহারের সুবেদার নিযুক্ত হন। মৃত্যুর পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত শমসের নগরে তাঁকে কবরস্থ করা হয়। পাটনা-আওরঙ্গবাদ প্রধান সড়কে এই সমাধি কমপ্লেক্স অবস্থিত। বিহার সরকার এটিকে একটি পর্যটন স্থান হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছিল।


তথ্যসূত্র:
1. https://tinyurl.com/yumue7nz

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তান-কাজাখস্তানের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের রেল বিনিয়োগ চুক্তি
পরবর্তী নিবন্ধপাঞ্জশিরে ৪৫ লক্ষ আফগানির সৌর প্রকল্প: ২৮ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ