স্কুলের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন থেকে দাবি করা চাঁদার ৩০ লাখ টাকা না পেয়ে আজ রবিবার দুপুরের দিকে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দুই নেতা গিয়ে স্কুলটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় বলে জানা গেছে।
শেখ রাসেল স্কুলটির নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধানকারী মমতাজ উদ্দীন জানান, কাজ শুরুর পর আগস্টের প্রথম সপ্তাহে রাবি সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুসহ বেশকয়েকজন নেতাকর্মী মমতাজ উদ্দীনের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মমতাজ উদ্দীনকে কার অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন জিজ্ঞাসা করে। একপর্যায়ে মমতাজ উদ্দীনের কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় স্কুলের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
মমতাজ উদ্দীন আরো জানান, প্রায়ই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সাইটে গিয়ে তার কাছে চাঁদা দাবি করত। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্তসহ দুজন গিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় এবং ম্যানেজার আশরাফুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস্ কমপ্লেক্সের পেছনে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি শিগগিরই মীমাংসা করে নেওয়ার কথা বলে আমাকে ছেড়ে দেয়।’ সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা বৃত্তের ছবি দেখালে বৃত্ত তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে নিশ্চিত করেন। তবে বৃত্তের সঙ্গে থাকা অন্যজনের পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।
রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সরেজমিনে নির্মাণাধীন স্কুল প্রাঙ্গনে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজের পরিবর্তে একসঙ্গে মাঠে বসে আছেন। হুমকির পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। সবুজ নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘সকাল থেকে কাজ করছিলাম। দুপুরে দু’জন এসে ম্যানেজারকে কাজ বন্ধ করে দিতে বলে। তাকে তুলেও নিয়ে যায়। কাজ করতে গেলে কখন কি ঝামেলা হয়? তাই আমরা কাজ করছি না।’
মমতাজ উদ্দীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ ম্যানেজার আশরাফুলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা অনিরাপত্তায় ভুগছি। শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে কাজ বন্ধ রয়েছে। এভাবে চললে কাজ শেষ হবে না।’ এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা শুনেছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।