বৃহত্তর চট্টগ্রামের রোগীদের করোনার ভাইরাস পরীক্ষার জন্য স্থাপিত একমাত্র হাসপাতাল সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)। দেশে করোনা ভাইরাস আতংক ছড়িয়ে পড়ার পর রোগিদের শুশ্রুষার জন্য বিশেষায়িত এই হাসপাতালে ৫০ শয্যার আইসোলেশন বিশিষ্ট ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়। কিন্তু এরপর এক মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো এখানে করোনা পরীক্ষার কোন কিট আসেনি। ফলে করোনা পরীক্ষার ট্রেনিং নিয়েও সন্দেহভাজন রোগিদের জন্য কিছুই করতে পারছেন না তারা। খবর- কালের কণ্ঠ
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ক্রমবর্ধমান করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডিতে প্রায় এক মাস আগে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট পৃথক আইসোলেশন স্থাপন করা হয়। এই হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে একটি টিমকে করোনা চিকিৎসার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই টিমের ৩ সদস্য ইতিমধ্যে ঢাকায় আইইডিসিআর এ করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়ে ট্রেনিংও সম্পন্ন করে এসেছেন। কিন্তু তাদের এই ট্রেনিং কোন কাজেই লাগছে না এই দীর্ঘ সময়েও করোনা পরীক্ষার জন্য আবশ্যকীয় উপাদান কীট না আসায়।
প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী অধ্যাপক ডা, মামুনুর রশিদ জানান, বিআইটিআইডিতে সন্দেহভাজন করোনা রোগিদের পরীক্ষা করা হচ্ছে-এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় সুদূর কক্সবাজারসহ বৃহৎ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সামান্য জ্বর-সর্দি আক্রান্ত রোগিরাও করোনা আক্রান্ত কিনা পরীক্ষা করতে ছুটে আসছেন। কিন্তু আমাদের কাছে করোনা পরীক্ষার কোন কীট না আসায় আমরা সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সেই নমুনা পাঠাচ্ছি। তারপর কয়েকদিনের মধ্যে সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে আমরা জানাচ্ছি যে তাদের কি হয়েছিলো। এক কথায় এই রিপোর্টের জন্য রোগিদের এবং ডাক্তারদের কয়েকদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। আমরা তাৎক্ষনিক কোন রিপোর্ট দিতে পারছি না। যদি করোনা পরীক্ষার কীট পাওয়া যেত তাহলে ৪-৫ ঘন্টার মধ্যেই পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া যেত।
এদিকে ডাক্তাররা চেষ্টা করলেও দূর দুরান্ত থেকে এখানে এসেও তাৎক্ষনিক পরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে হতাশও হচ্ছেন অনেকে। এখানে আসা চট্টগ্রামের এক রোগির নিকটাত্মীয় মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফৌজদারহাট হাসপাতালে করোনার ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। আমার এক আত্মীয় রোগি কয়েকদিন জ্বর ও গলা ব্যাথার কারণে ঐ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে তারা জানান, পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে কয়েকদিন সময় লেগে যাবে। তাছাড়া তার রোগটি করোনা নয় বলে ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছেন। একথা শুনে ঐ আত্মীয় নিজেই তাৎক্ষনিক রিপোর্ট পেতে ঢাকায় চলে যান।
রোগিদের দ্রুত সেবা না দেওয়া গেলে হাসপাতালে এসব ইউনিট করে কি লাভ হচ্ছে এমন প্রশ্নই তুলেছেন আরো অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইটিআইডি এর পরিচালক ডা. মোঃ এম.এ হাসান বলেন, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। আমাদের তিন চিকিৎসক এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রস্তুত। কিন্তু করোনা পরীক্ষার কীট এখনো পাচ্ছি না। পাব বলে আশা করছি কয়েকদিন ধরেই। কিন্তু না পাওয়ায় কিছুই করতে পারছি না। ঠিক কবে এই কীট আসবে তাও তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে আজ-কাল যেকোন সময় কীট আসবে এমন অপেক্ষায় আছেন তিনি।