সরকারি মহলের সহযোগিতায় করতোয়ার বালু চুরি

0
863
সরকারি মহলের সহযোগিতায় করতোয়ার বালু চুরি

রংপুরের পীরগঞ্জে করতোয়া নদীঘেঁষা টুকুরিয়া, বড়আলমপুর, চতরা ও কাবিলপুর ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের অর্ধশতাধিক স্থানে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।

গত কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাস আতঙ্কে লোকজন বাড়িতে অবস্থান করছে। এই সুযোগে সংঘবদ্ধ চক্রটি বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাওয়া ছাড়াও নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। যা ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। রিপোর্টঃ কালের কন্ঠ

সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক মহল জরুরি ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেবেন-এমনটিই আশা করছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিন করতোয়া নদী থেকে সংঘবদ্ধ একটি চক্র অবাধে বালু উত্তোলন করছে। নদীপারেই উত্তোলিত বালু শত শত ট্রলি ও ভারি যানবাহনে বিক্রি হলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিরতিহীনভাবে ওই বালু পরিবহন করায় ভাঙছে জমি, পুকুরপাড়, রাস্তা-ঘাট। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে অর্ধশতাধিক গ্রামের হাজারো মানুষ।

অপরদিকে, ধুলোবালিতে একাকার হওয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধে মাইকিং করেছে। তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কে লোকজন বাড়িতে থাকার সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্রটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুর-রংপুর জেলাকে বিভক্ত করে পীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট উপজেলার ধার ঘেঁষে প্রবাহিত করতোয়া নদী। এক সময়ের খরস্রোতা করতোয়া বর্তমানে শুকিয়ে গেছে। চতরা, বড়আলমপুর কাবিলপুর ও টুকুরিয়া ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের অর্ধশতাধিক স্থান এবং নদীর ওপারে দিনাজপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে জোটবদ্ধ হয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

নিজেদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানায়, চতরা ইউনিয়নের কুয়েতপুর হামিদপুরের নেংড়ার ঘাটে পাঁচটি স্থানে শামিম, সুজন, আবু তাহের, বাবু, মজিদ, নজরুল, ছকমল, আব্দুল মজিদসহ ১৬ জন বালু সন্ত্রাসী জোটবদ্ধ হয়ে একাধিক বোমা মেশিন দিয়ে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। ওই স্থানে শামীমের নেতৃত্বে বালু সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। বদনাপাড়ার টোংরারদহ এলাকায় সাবু মেম্বারের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এছাড়া চক ভেকা, নুনদহ ঘাট, কুমারপুরে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত তারা। টুকুরিয়া ইউনিয়নে জয়ন্তীপুর ঘাট, সুজারকুটি, মোনাইল, কাঁচদহঘাটে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে সুলতান মাহামুদ, মাহমুদ, আব্দুস সবুর, গোলাম রব্বানী, সোহরাব ও রবিউল।

বড়আলমপুরের বাঁশপুকুরিয়ায় পৃথক ১০ স্থানে মিজানুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে এবং কাবিলপুর ইউনিয়নের নিজ কাবিলপুর গ্রামের তিনটি স্থানে জুয়েল, হাসান আলী, আদিল ও বিপুর নেতৃত্বে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।

অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় তহশিলদারদের সঙ্গে বালু উত্তোলনকারীদের বিশেষ চুক্তি রয়েছে। প্রতিমাসে কর্মকর্তারা বালু উত্তোলনকারীদের কাছে চুক্তির টাকা নেন। এজন্য বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালাউন মোদি-যোগির রাজ্যে ক্ষুধার জ্বালায় ঘাস খাচ্ছে শিশুরা
পরবর্তী নিবন্ধসরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসক