করোনাভাইরাসের কারণে তেলের চাহিদা অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় আমেরিকার বাজারে তেলের দাম শূন্যের নীচে নেমে গেছে। অর্থাৎ এখন তেল বিক্রেতারা ক্রেতাকে তেলের পাশাপাশি কিছু ডলারও দিয়ে দিতে বাধ্য হবেন কারণ, তাদের তেলের ভাণ্ডার পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং আর কয়েকদিনের মধ্যে উৎপাদিত তেল রাখার আর কোনো জায়গা থাকবে না।
সোমবার (২০ এপ্রিল) আমেরিকার ওয়েস্ট টেক্সাস বাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে অর্থাৎ মাইনাস ৩৭.৬৩ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ব বাজারে তেল বেচা-কেনার জটিল প্রক্রিয়ার কারণে তেলের মূল্যের এই অস্বাভাবিক দরপতন হয়েছে।
খবরঃ ইনসাফ২৪
আন্তর্জাতিক বাজারে সাধারণত একমাস পরের তেলের দাম বর্তমানে নির্ধারিত হয়। এর আগে মে মাসে বিক্রির জন্য তেল কেনা-বেচার যে চুক্তি হয়েছিল গতকাল (মঙ্গলবার) তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। অর্থাৎ বিক্রেতারা মে মাসে তথা এখন থেকে দুই সপ্তাহ পরে যে তেল বিক্রি করবেন তা যদি এখনই সংরক্ষণাগারে রাখতে চান তাহলে তাদেরকে তেল সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এই কারণে তারা তেলের দাম শূন্যের নিচে নামিয়ে দিয়ে তেল সংরক্ষণাগারের খরচ কমানোর চেষ্টা করেছেন।
অবশ্য ইউরোপের বাজারে তেলের দাম সোমবার শূন্যের উপরেই ছিল। ওই বাজারে ৯ শতাংশ কমে গিয়ে জুন মাসে হস্তান্তরের জন্য তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপের নর্থ সি ব্রেন্ট বাজারে নির্ধারিত তেলের দামকে সাধারণত আমেরিকা ছাড়া অবশিষ্ট বিশ্বের তেলের দামের মানদণ্ড ধরা হয়।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে সারা বিশ্বে লকডাউনের ফলে চাহিদা কমে আসায় গত এক মাস ধরে তেল উত্তোলন কমানো নিয়ে বিতর্ক চলছে। গত ১৩ এপ্রিল নানা আলোচনার পর ওপেক প্লাস ও তেল উৎপাদক মিত্রদেশগুলো উৎপাদন কমানোর বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়। দৈনিক প্রায় ১ কোটি ব্যারেল তেল উত্তোলন কমানোর ব্যাপারে একমত হয় শীর্ষ তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো। কিন্তু তারপরও তেলের দরপতন ঠেকানো সম্ভব হয়নি।