করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থার কারণে করোনা পরিস্থিতির অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে গিয়ে পণ্য ক্রয় করতে স্বল্প আয়ের মানুষদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দফায় দফায় চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ পড়েছে মহাবিপাকে।
কালের কন্ঠ জানায়, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় চাল ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী মিল মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরি করে দফায় দফায় বাড়াচ্ছেন চালের দাম। যদিও চালের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। ভোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ধাপে ধাপে বাড়ছে চালের দাম।
বুধবার ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের শরৎনগর ও ভাঙ্গুড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বোরো ২৯ ধানের মোটা চালের দাম। মে চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি)। এ বছরের মধ্যে এই চালের সর্বোচ্চ দাম এটা। এর আগে গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই চাল বিক্রি হতো ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা বস্তা। করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতির পর কয়েক দফায় দাম বেড়ে বর্তমানে ২৩০০ টাকা বস্তা বিক্রি হচ্ছে। একইসাথে বেড়েছে মিনিকেট ও বাসমতি চালের দাম। বর্তমানে মিনিকেট চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা এবং বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। অথচ এক মাস আগেও মিনিকেট চাল বিক্রি হতো ২ হাজার ১০০ টাকা ও বাসমতি চাল ২৩০০ থেকে ২৪০০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি)। এছাড়া বাহির থেকে আমদানি করা নাজিরশাইল চালের দাম প্রতি বস্তায় বেড়ে গেছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে। গত একমাসে কয়েক দফায় দাম বেড়ে বর্তমানে এই দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতারা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী চাল মিল মালিকরা হাজার হাজার বস্তা চাল গুদামজাত কওে রেখেছেন। এছাড়া প্রত্যেকটি চালের দোকানে শতশত বস্তা চাল সংরক্ষিত রয়েছে। অথচ প্রতি সপ্তাহেই চালের দাম বাড়ছেই। স্থানীয় চাল মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম স্বাভাবিক থাকার পরও করোনা পরিস্থিতির অজুহাতে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
চাল ব্যবসায়ী সজল আহমেদ বাবু বলেন, চাউলের দাম তো দিনের পর দিন বাড়ছেই। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। বেশি দামে আমাদের মিল থেকে চাল কিনতে হয়। তাই বেশি দামে আবার বিক্রি করতে হয়। ক্রেতাদের দূর্ভোগে আমাদেরও কষ্ট হয়। কিন্তু চালের দাম বাড়াচ্ছে মিল মালিকরা। এতে চালের দাম স্বাভাবিক রাখার বিষয়টি মিল মালিকদের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে।