এক জায়গায় শত শত মানুষ। গা ঘেঁষে চলছেন। দুই দিন হাজির হচ্ছেন কিষাণ (শ্রম) বিক্রির জন্য। নিজ এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর তারা পেয়েছেন। মৃত্যুভয় আছে জেনেও তাদের এই কাজে বেরোতে হচ্ছে। চলাফেরায় নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বসেছে মানুষের শ্রম বিকিকিনির জমজমাট হাট। একদিকে, বোরো ধান ঠিকমতো ঘরে তুলতে হবে। অপরদিকে, সংসারের অভাব মেটাতে হবে। এ জন্যই জীবন বাজি রেখে শ্রম বিকিকিনি করতে হচ্ছে। এমন কথা জানালেন ক্রেতা-বিক্রেতাগণ।
মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দুর্গাপর গ্রামের ওই হাটে গিয়ে দেখা যায়, কিষাণদের অধিকাংশ এসেছেন কচুয়া উপজেলা হতে। তারা বিক্রি হয়ে কাজে যাচ্ছেন এই দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামসহ মোল্লাহাট, মকসুদপুর, গোপালগঞ্জে। করোনায় মৃত্যুর ভয় আছে জেনেও অভাবের তাড়নায় তাদের কাজে আসতে হয়েছে।
করোনায় তো বাড়ি থাকার কথা, বাইরে এসছেন কেন? এই প্রশ্নোত্তরে লড়ারকুল গ্রামের হোসেন উদ্দীন শেখের পুত্র আনোয়ার হোসেন বলেন, পেটের জ্বালায় বাঁচতি পারিনে বুলে তো আমরা এই যে কাজ কত্তি আইছি। প্রত্যেকদিন ছয় সাতশ টাকা করে কিষেণ বিক্রি হচ্ছে। কিষেণ কিনে নিয়ে যাচ্ছে মোল্লাহাট, মকসুদপুর, গোপালগঞ্জ, কচুয়া, চিতলমারীসহ বিভিন্ন এলাকার লোক।
তিনি আরো জানান, এখানের অধিকাংশ কিষাণ কচুয়ার দেপাড়া, গজালিয়া, বাগেরহাট সদর উপজেলার কান্দাপাড়া, গোটাপাড়া এলাকার।
চিতলমারীর শ্যামপড়া গ্রামের কিষাণ ক্রেতা পরিমল বৈরাগী জানান, সময় মতো ধান কেটে শুকিয়ে ঘরে ওঠানোর জন্য কিষাণ দরকার। এটা না হলে অনেক ক্ষতি হবে। করোনার ভয়ে বসে থাকলে তো ঝড়-বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। তাই তিনি আজ জনপ্রতি সাতশ টাকা করে কিষাণ কিনেছেন। কিষাণ দুরে গেলে দাম আরো বেশি।
সূত্র: কালের কন্ঠ