ভারতীয় নাগরিকদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে বাংলাদেশী নাগরিক লোকমান হোসেন (৩২)। গরুচোর অপবাদ দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। লোকমান হোসেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মালঞ্চপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে। বিজিবি-বিএসএস এর মাঝে একাধিকবার মিটিং শেষে ঘটনার ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে লোকমানের লাশ দেশে আসবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর এলাকায় তার ফুফুর বাড়ি যাচ্ছিলেন লোকমান। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোপালনগর পৌঁছাতেই এক দল ভারতীয় নাগরিক লোকমান হোসেনকে পথরোধ করে গরুচোর সন্দেহে এলোপাথাড়ি পিটাতে থাকে। এ সময় সে- আমিহ চোর না, বেড়াতে এসেছি- এমন আকুতি বার বার জানালেও পাষণ্ডদের মন গলেনি। এলোপাথাড়ি পিটুনিতে তার মৃত্যু হয়। ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে লোকমানের আকুতির ভিডিও প্রচার হয়েছে। তবে ত্রিপুরার গণমাধ্যম গরুচোর সন্দেহে গণপুটুনিতে মৃত্যুর বিষয়টি চাউর করে। মৃত ভেবে ভারতীয়রা লোকমানকে বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাই থানা পুলিশ মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকমানের মৃত্যু হয়। বুধবার বিকেলে ১৯৯৪ /৪ এস পিলারের নিকট বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মোহনপুর গ্রামে বিজিবি-বিএসএফ এর পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারতের পক্ষে বিএসএফ ১২০ ব্যাটালিয়নের মোহনপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ইন্সপেক্টর শশি কান্ত ও বাংলাদেশের পক্ষে ৫৫ বিজিবির ধর্মঘর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন এই বৈঠকটি পরিচালনা করেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবারই ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে লাশ হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তুু ভারতীয় পুলিশ ময়না তদন্ত, সুরতহাল রিপোর্ট আনুষাঙ্গিক কাগজ-পত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে চাইলে বাংলাদেশের বিজিবি-পুলিশের প্রতিনিধিরা অস্বীকৃতি জানায়।
বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির ধর্মঘর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় বিএসএফ লোকমানের লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে।
নিহতের পরিরার সূত্র জানায়, লোকমান মিয়া বাড়ির পাশ দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মোহনপুরে তার ফুফুর বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে স্থানীয় ভারতীয় রোষানলে পড়ে নির্মমভাবে খুন হন তিনি। নিহতের ছোটোভাই হুমায়ুন মিয়া বলেন, আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। ভারতীয় গনমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। অথচ তারা কাগজপত্র ছাড়া লাশ ফেরত দিতে চায়। তিনি হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
কালের কন্ঠ